Banglar Bari: বাংলার বাড়ি প্রকল্পে প্রাপকদের থেকে ১০০০ টাকা করে 'উন্নয়ন ফি'! মেমারিতে শুরু তদন্ত

People's Reporter: টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন মেমারি এক নম্বর ব্লকের উপপ্রধান শেখ আব্দুল রহমান। তাঁর দাবি, প্রকল্পের টাকা নিয়ে যাঁরা বড় বাড়ি করছেন, তাঁদের থেকে ‘উন্নয়ন ফি’ নেওয়া হচ্ছে।
Banglar Bari: বাংলার বাড়ি প্রকল্পে প্রাপকদের থেকে ১০০০ টাকা করে 'উন্নয়ন ফি'! মেমারিতে শুরু তদন্ত
গ্রাফিক্স - সুমিত্রা নন্দন
Published on

এবার বাংলার বাড়ি প্রকল্পে সরকারি অনুদান প্রাপকদের কাছ থেকে ১০০০ টাকা করে ‘উন্নয়ন ফি’ নেওয়ার অভিযোগ উঠল পূর্ব বর্ধমানের মেমারি এক নম্বর ব্লকের বেশিরভাগ গ্রাম পঞ্চায়েতদের বিরুদ্ধে। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই গোটা ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন পূর্ব বর্ধমান জেলা শাসক আয়েষা রানি। অন্যদিকে, এই ঘটনা নিয়ে রাজ্যের শাসক দলকে আক্রমণ করছে বিরোধীরা।

পূর্ব বর্ধমানের মেমারিতে ১০ টি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে। সবকটিই তৃণমূলের দখলে। সূত্রের খবর, মেমারি এক নম্বর ব্লকে মোট সাড়ে চার হাজার জন অনুদান পাচ্ছেন। ইতিমধ্যেই বাড়ি তৈরির অনুদানের প্রথম কিস্তি ৬০ হাজার টাকা পেয়েছেন অধিকাংশই। অভিযোগ, অনুদানের প্রথম কিস্তি পেয়ে যাঁরা বাড়ির কাজ শুরু করেছেন, তাঁদের কাছ থেকে ‘উন্নয়ন ফি’ নিচ্ছে পঞ্চায়েতগুলি। এমনকি, দলুইবাজার দু নম্বর পঞ্চায়েতে মাইকের মাধ্যমে ‘উন্নয়ন ফি’ প্রচারের অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই দলুইবাজার দু নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য রাজীব মালিক জানিয়েছেন, বাড়ি প্রকল্পের জন্য শংসাপত্র নিতে হবে বলে মাইকে প্রচার চালানো হচ্ছিল। সেটা নেওয়ার জন্য পঞ্চায়েতকে ১০০০ টাকা দিতে হবে বলে জানানো হয়। অন্যদিকে, এই অভিযোগ সামনে আসার পর পদক্ষেপ করেছেন বলে জানিয়েছেন মেমারি এক নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায়। পুরো ঘটনাটি নিয়ে বিডিও-র কাছে অভিযোগ করেছেন তিনি।

তবে অনুদান প্রাপকদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার ঘটনা দলুইবাজার ছাড়াও দুর্গাপুর, নিমো-২ সহ আরও বহু জায়গায় ঘটেছে। টাকা নেওয়ার কথা স্বীকারও করে নিয়েছেন মেমারি এক নম্বর ব্লকের উপপ্রধান শেখ আব্দুল রহমান। তবে এই নিয়ে তাঁর দাবি, প্রকল্পের টাকা নিয়ে যাঁরা বড় বাড়ি করছেন, তাঁদের থেকে ‘উন্নয়ন ফি’ নেওয়া হচ্ছে। তবে যাঁরা মডেল অনুযায়ী বাড়ি তৈরি করছেন, তাঁদের কাছ থেকে কোনও টাকা নেওয়া হয়নি।

অন্যদিকে, দুর্গাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধানের দাবি, কাউকে জোর করা হয়নি। যাঁরা ইচ্ছুক তাঁদের কাছ থেকেই নেওয়া হচ্ছে। এবিষয়ে মেমারির তৃণমূল বিধায়ক মধুসুদন ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, বাড়ি প্রকল্পে পঞ্চায়েতের নাক গলানোয় নিষেধাজ্ঞা আছে মুখ্যমন্ত্রীর। তাঁর কথায়, ‘বিষয়টি জানার পরই আমি বিডিও-কে তদন্ত করে দেখতে বলেছিলাম’।

এদিকে, ‘উন্নয়ন ফি’ –এর কথা প্রকাশ্যে আসতেই শাসক দলকে আক্রমণ করছে জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, ‘যা বোঝা যাচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীর নিষেধাজ্ঞা এখন মূল্যহীন হয়ে পড়েছে। তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের কর্তা-ব্যক্তিরাও এখন মুখ্যমন্ত্রীর নিষেধাজ্ঞা অমান্য করার স্পর্ধা দেখাচ্ছেন’।

তবে ‘উন্নয়ন ফি’ নিয়ে কোনও কথা বলতে নারাজ প্রাপকরা। মুখ খুললে যদি দ্বিতীয় কিস্তির টাকা না আসে। সেই ভয়েই এবিষয়ে কোনও মন্তব্য করছেন না গ্রামবাসীরা।

উল্লেখ্য, বাংলার বাড়ি প্রকল্পে স্বচ্ছতার লক্ষ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই বার্তা দিয়েছিলেন, প্রাপকরা নিজেরাই বাড়ি তৈরির কাজ করবেন। এবিষয়ে কোনও মধ্যস্থতাকারীর সহযোগিতা যেন না নেন। এরপর নবান্নের তরফ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়, বাড়ি তৈরির কাছ শুরু হওয়ার আগে বিডিওরা নিজ নিজ ব্লকের মার্কেট কমিটি এবং বাড়ি তৈরির উপকরণ বিক্রেতাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। যাতে তারা সঠিক দামে গুণগত মান বজায় রেখে ইট, বালি, অ্যাসবেস্টস, স্টোনচিপ-সহ ইত্যাদি উপকরণ সরবরাহ করে।  

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in