
রাজ্যে ১৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ৪৬০টি কলেজে থমকে রয়েছে ভর্তি প্রক্রিয়া। যার ফলে অনিশ্চিয়তা বাড়ছে পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ নিয়ে। কবে কাটবে এই জট, উত্তর অজানা। বহু মেধাবী ছাত্রছাত্রী ভিন রাজ্যে চলে যাচ্ছেন পড়াশোনার জন্য। এই জটের ফলে পড়ুয়াদের পাশাপাশি উদ্বেগ বাড়ছে কলেজ কর্তৃপক্ষেরও। অধ্যাপকদের দাবি, এর বিকল্প রাস্তা দ্রুত বের করা হোক।
৭ মে উচ্চমাধ্যমিকের ফল প্রকাশিত হয়েছে। তারপর প্রায় সাড়ে তিন মাস কেটে গেছে। কিন্তু এখনও শুরু হয়নি ভর্তি প্রক্রিয়া। উচ্চ মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের ৪০ দিন পর, ভর্তির জন্য অনলাইন পোর্টালের উদ্বোধন করেছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। ভর্তির জন্য প্রচুর আবেদনও জমা পড়েছে। কিন্তু এখনো মেরিট লিস্ট পর্যন্ত বেরোয়নি। শুরুই হয়নি ভর্তি প্রক্রিয়া। কবে কাটবে জট? ছাত্র-ছাত্রীদের আত্মবিশ্বাস তলানিতে ঠেকেছে।
যেমন যাদবপুর বিদ্যাপীঠের এক ছাত্র উচ্চ মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের পর আশুতোষ, সুরেন্দ্রনাথ সহ একাধিক কলেজে ভর্তির আবেদন করেছেন। কিন্তু এখনো ভর্তি হতে পারেননি। অন্যান্য বছর এই সময়ে কলেজগুলিতে নবীন বরণের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। কিন্তু এবছর কোথায় নবীনরা?
পড়ুয়াদের পাশাপাশি, উদ্বেগ ক্রমশ বাড়ছে কলেজ কর্তৃপক্ষেরও। লেডি ব্রেবোর্ন কলেজের অধ্যক্ষ শিউলি সরকার বলছেন, "আমরা খুব পিছিয়ে পড়ছি। কিছু মাইনরিটি কলেজ আছে স্কটিশ চার্চ, শ্রী শিক্ষায়তন, সেন্ট পলস। তারা অলরেডি ক্লাস শুরু করে দিয়েছে। বাইরে চলে যাচ্ছে পড়ুয়ারা।''
ভর্তি প্রক্রিয়ায় বিলম্ব নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। এর দায় কার? উঠছে প্রশ্ন। এবিষয়ে তৃণমূলের রাজ্য সহ সভাপতি বলেন, "রাজ্য আপ্রাণ চেষ্টা করছে, কিন্তু মামলা করে জট পাকিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরাই গোলকধাঁধায় পড়ে যাচ্ছি কোনটা কী মামলা।''
বিরোধীদের দাবি, এই জটিলতার মূল কারণ, ওবিসি সহ অনগ্রসর গোষ্ঠীর সংরক্ষণের আওতায় ঘুরপথে মুসলিম সম্প্রদায়কে ঢোকাতে চাইছে তৃণমূল। এপ্রসঙ্গে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, "জাতীয় ওবিসি তালিকার বাইরে থাকা ৭৬ টি মুসলিম জনগোষ্ঠীকে ভোট ব্যাংকের জন্য ওবিসির তালিকায় ঢোকাতে চায় সরকার। ভর্তিতে যে ওবিসি রিজার্ভেশন আছে, সেই রিজার্ভেশন থেকে যাতে ওই ৭৬ টি অবৈধ মুসলিম জনগোষ্ঠী বঞ্চিত না হয়, তার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যতকে জলাঞ্জলি দিচ্ছেন"।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন