SSC Scam: নতুন নিয়োগে টাকার খেলা হবে না, সেই গ্যারান্টি কে দেবে? প্রশ্ন চাকরিহারা শিক্ষকদের

People's Reporter: আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বলেন, "অযোগ্য হিসেবে যে ৫ হাজার ৪০০-র মতো চাকরিপ্রার্থীকে চিহ্নিত করা হয়েছে, তার বাইরেও অনেক অযোগ্য থাকতে পারে।তাই যোগ্য ও অযোগ্যের মধ্যে পৃথকীকরণ সম্ভব হয়নি।"
চাকরিহারা শিক্ষকরা
চাকরিহারা শিক্ষকরানিজস্ব ছবি
Published on

২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের রায় বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট। ২০১৬ সালের পুরো প্যানেলই বাতিল করলো প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ। যার ফলে চাকরি গেল ২৬ হাজার জনেরই (আদতে ২৫ হাজার ৭৫২ জন)। এই রায়কে 'মৃত্যুদণ্ডের সমান' বলে মনে করছেন চাকরি হারানো শিক্ষক-শিক্ষিকারা। তাঁদের দাবি, যোগ্যতার ভিত্তিতেই চাকরি পেয়েছিলেন তাঁরা। যোগ্য-অযোগ্য আলাদা করা গেল না কেন, সকলেই সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। এমনকি নতুন নিয়োগেও যে টাকার খেলা হবে না, সেই গ্যারান্টি কে দেবে, তাই নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা।

কলকাতার শক্তিগড় হাইস্কুলের শিক্ষিকা রিজিয়া খাতুন এই নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে হতাশা প্রকাশ করে বলেন, “যার ফাঁসির অর্ডার হয়ে গেছে সে আর কী বলবে বলুন? এটা কোনও বিচার হল? এরকম হওয়া সম্ভব কখনও? যারা কোনও দোষ করল না, তারা শাস্তি পাচ্ছে। রোজগার কেড়ে নেওয়া, সম্মান কেড়ে নেওয়া, আর ফাঁসির দড়িতে ঝুলে পড়া একই ব্যাপার। তিন মাস পর যে নিয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তাতে কি গ্যারান্টি আছে যে সেখানে টাকার খেলা শুরু হবে না? যারা নির্দেশ দিচ্ছেন, আবার পরীক্ষা দিয়ে যোগ্যতা প্রমাণ করুণ, তারা নিজেরা পারবে নতুন করে পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পেতে? বিনা দোষে আমরা মারাত্মক শাস্তি পেয়ে গেলাম, যেটা আমাদের পাওয়ার কথা ছিল না”।  

দক্ষিণেশ্বরের ভারতী ভবন গার্লস হাই স্কুলের শিক্ষিকা অদিতি বসু বলেন, ‘‘এই রায় আমার কাছে মৃত্যুদণ্ডের সমান। শুধু আমার সঙ্গে নয়, আমার মতো হাজার হাজার মানুষের সঙ্গে অন্যায় হল আজকের এই রায়ে। আমরা ঐক্যবদ্ধ ভাবে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করব।’’

প্রতাপ রায়চৌধুরী নামে আর এক শিক্ষকের প্রশ্ন, ‘‘ওই প্যানেলের কে বৈধ ভাবে চাকরি পেয়েছে, আর কে অবৈধ ভাবে, তার তালিকা তো সিবিআই, এসএসসি সকলেই দিয়েছিল। তার পরেও কেন যোগ্য-অযোগ্য আলাদা করা গেল না?’’

সাগর মণ্ডল নামে আর এক শিক্ষক বলেন, “আমরা গভীরভাবে আশাহত এবং মর্মাহত। এটা চূড়ান্ত একটা অমানবিক রায়। এই রায়কে আমরা কখনওই মান্যতা দেব না। এই রায়কে বলা যেতে পারে ভারতবর্ষের একটা ঐতিহাসিক রায়। একটা অন্যায়কে সমর্থন করা, প্রশয় দেওয়া এবং এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ঐতিহাসিক রায়। কারণ সকলেই দুর্নীতিগ্রস্ত চাকরিপ্রার্থী নয়। ভারতবর্ষের সর্বোচ্চ তদন্তকারী সংস্থা তদন্ত করার পরেও কিসের জন্য ২৬ হাজার চাকরি বাতিল হল? এটার দায় একমাত্র এসএসসির”।

যদিও যোগ্য-অযোগ্য বাছাই নিয়ে চাকরিহারাদের তোলা প্রশ্ন প্রসঙ্গে আইনজীবী ফিরদৌস শামিম এক সংবাদ মাধ্যমে বলেন, "অযোগ্য হিসেবে যে ৫ হাজার ৪০০-র মতো চাকরিপ্রার্থীকে চিহ্নিত করা হয়েছে, তার বাইরেও অনেক অযোগ্য থাকতে পারে। শুধু তাই নয়, রাজ্য সরকার, স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং বোর্ড, তিন পক্ষ তিন রকমের তথ্য দিয়েছে। কেউ বলে, ৫৪৮৫, কেউ ৫১৮৯, কেউ ৪৩২৭। সংখ্যায় ফারাক থেকে যাচ্ছে। তাই যোগ্য ও অযোগ্যের মধ্যে পৃথকীকরণ সম্ভব হয়নি।"

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in