
আশংকা ছিলোই। আর সেই আশংকাকে সত্যি করে আরও একবার বিজেপির ঘর ভাঙলো তৃণমূল। ২০১৯ সালে দুর্গাপুজোর আগে বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়র সব্যসাচী দত্ত বিজেপি-তে যোগ দিয়েছিলেন। ঠিক দু’বছর পর আরও এক দুর্গাপুজোর আগে তিনি ঘরে ফিরলেন। গত মে মাসে বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর পরাজিত বিজেপি প্রার্থী সব্যসাচীকে সেভাবে সক্রিয়ভাবে ময়দানে নামতে দেখা যায়নি। উলটে একাধিকবার প্রকাশ্যেই বিজেপির সমালোচনা করেছেন। বৃহস্পতিবার বিধানসভায় গিয়ে তিনি তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে তৃণমূলে যোগ দিলেন।
এর আগে গতকালই লখিমপুরের ঘটনা নিয়ে দিলীপ ঘোষের মন্তব্যের সমালোচনা করেছিলেন বিধাননগরের নেতা সব্যসাচী দত্ত। অন্যদিকে, বিধায়ক মিহির গোস্বামীর বাড়ি গেছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি গিরীন্দ্রনাথ বর্মন। আবার কি ঘরে ফেরা পর্ব দেখবে রাজ্য রাজনীতি? গতকাল থেকেই উঠছিলো সেই প্রশ্ন।
বিজেপিতে থাকলেও একাধিকবার রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছেন সব্যসাচী দত্ত। গত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যাবার পর তাঁর সঙ্গে বিজেপির বিবাদ আরও বাড়ে। মুকুল রায় বিজেপিতে যোগ দেবার পরে তাঁর হাত ধরেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন সব্যসাচী দত্ত। স্বভাবতই মুকুল রায় ফের তৃণমূলে ফেরার পর আগে থেকেই সব্যসাচীর তৃণমূলে ফেরার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিলো।
লখিমপুর খেরির ঘটনার পর বিজেপির সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, ‘১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন সঠিক পদক্ষেপই করেছে।’ তার প্রেক্ষিতে সব্যসাচী দত্ত বুধবার জানান, ‘কোনও আন্দোলনকে দমিয়ে দেওয়া যেতে পারে না। এটা গণতান্ত্রিক দেশ। লখিমপুরের ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক, দোষীদের ফাঁসি হওয়া উচিত।'
অন্যদিকে, দিনহাটা উপনিবার্চনের প্রাক্কালে দলবদলু নেতা তথা বিজেপি বিধায়ক মিহির গোস্বামীর বাড়িতে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি গিরীন্দ্রনাথ বর্মন। স্বাভাবিক ভাবে এই সাক্ষাৎ ঘিরে জল্পনা ছড়িয়েছে কোচবিহারের রাজনৈতিক মহলে। জানা গিয়েছে, বুধবার বিকালে মিহির গোস্বামীর বাড়ি গেলে তৃণমূলের জেলা সভাপতি গিরীন্দ্রনাথের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথাবার্তা হয়। তাঁদের খোশমেজাজের ছবি ঘিরে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা তুঙ্গে। এই সাক্ষাৎকে 'সৌজন্যমূলক' আখ্যা দিয়েছেন বিধায়ক মিহির গোস্বামী।
একই দাবি করে গিরীন্দ্রনাথ বলেন, 'যাঁদের সঙ্গে একসঙ্গে লড়াই করেছি, আজ জেলা সভাপতি হতে পেরে তাঁদের ভুলে যাব, কেবল দলবদল হয়েছে বলে দেখা করতে পারব না, এটা হয় না।'
আফগানিস্তানের উদাহরণ টেনে তৃণমূলকে খোঁচা দিয়ে মিহিরবাবু বলেন, 'আমাদের মত সনাতন ধর্মের মানুষদের ভাবতে হবে, আমরা বাংলায় থাকতে পারব নাকি আফগানিস্তানের মত তোষণবাদের রাজনীতিতে হারিয়ে যাব! বিজেপি-র নেতৃত্বেই ভারতে সনাতন ধর্ম নিয়ে বাঁচা সম্ভব। তাই দলবদলের প্রশ্ন নেই।'
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন