ভোট-হিংসায় মৃতদের পরিবারপিছু একজনকে চাকরির সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভায়, 'সবাই পাবে তো?', প্রশ্ন বিরোধীমহলে

People's Reporter: বেসরকারি হিসেব অনুযায়ী, নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হওয়ার পর থেকে রাজ্যে ভোট-হিংসায় মৃতদের সংখ্যা ৫০-এরও বেশি। যদিও সরকারি হিসেবে সেই সংখ্যাটা মাত্র ১৯।
মমতা ব্যানার্জি
মমতা ব্যানার্জিছবি - মমতা ব্যানার্জির ফেসবুক পেজ

রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট-হিংসায় নিহতদের পরিবারপিছু একজনকে চাকরি দেবে রাজ্য সরকার। নির্বাচনের চারমাস পর শুক্রবার অবশেষে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রিসভা। নির্বাচন শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এই কথা জানিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই ঘোষণা এবার সরকারি শিলমোহর পেল। তবে রাজ্যে চলতি বছরে হওয়া পঞ্চায়েত ভোটে সরকারি হিসেব অনুযায়ী যতজন মারা গিয়েছে, বেসরকারি হিসেবে নিহতের সংখ্যা তার দ্বিগুণেরও বেশি। তাই এক্ষেত্রে কতজন নিহতের পরিবারের একজনকে চাকরি দেওয়া হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলে।

চলতি বছরের জুলাই মাসে বিগত কয়েকদশকের মধ্যে সবচেয়ে ‘রক্তাক্ত’ পঞ্চায়েত নির্বাচন দেখেছে বাংলা। তৎকালীন বিরোধীদের দাবি অনুযায়ী ২০০৩ সালের মারকাটারি নির্বাচনের পর এত ‘হিংসাত্মক’ ভোট আর প্রত্যক্ষ করেনি রাজ্যবাসী। এবারে নির্বাচনের দিন ঘোষণা হওয়া থেকে শুরু করে ফলাফল ঘোষণার পরেও রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় লাশ পড়েছে মুড়িমুড়কির মতো। বেসরকারি হিসেব অনুযায়ী, নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হওয়ার পর থেকে রাজ্যে ভোট-হিংসায় মৃতদের সংখ্যা ৫০-এরও বেশি। যদিও সরকারি হিসেবে সেই সংখ্যাটা মাত্র ১৯।

নির্বাচন চলাকালীনই বিরোধীরা ভোট-হিংসায় মৃত্যু-মিছিল নিয়ে রাজ্য সরকারকে ক্রমাগত আক্রমণ করেছে। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বরাবরই এই মৃত্যু-মিছিলকে ‘বিক্ষিপ্ত ঘটনা’ বলে চিহ্নিত করেছেন। নির্বাচনের পরেও ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকেও তিনি দাবি করেছিলেন, “পঞ্চায়েতে বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু এটাকে আমরা সমর্থন করি না।” সেই সময়েই তিনি নিহতদের পরিবারপিছু একজনকে সরকারি চাকরি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। নির্বাচনের ৪ মাস পর রাজ্যের মন্ত্রিসভার বৈঠকে অবশেষে সেই ঘোষণা সিদ্ধান্ত হিসেবে গৃহীত হল।

শুক্রবার বৈঠক শেষে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, “পঞ্চায়েতের ভোট-হিংসায় মৃত ১৯ জনের পরিবারের থেকে একজনকে হোমগার্ডের চাকরি দেওয়া হবে।” কিন্তু বেসরকারি হিসেব অনুযায়ী, ভোট-হিংসায় রাজ্যে ৩৯ দিনে মারা গিয়েছিলেন মোট ৫৫ জন। যার মধ্যে তৃণমূলের ২৯ জনের সঙ্গে ছিল সিপিআইএম (৪ জন), কংগ্রেস (৭ জন), বিজেপি (৫ জন), আইএসএফ (৩ জন)-এর কর্মী ও নেতারাও। মৃতদের মধ্যে ছিলেন ৪ জন সাধারণ ভোটারও। বিরোধীদের প্রশ্ন, এদের সবার পরিবারের লোক চাকরি পাবেন তো? নাকি শুধু তৃণমূল কর্মীদের নিকটাত্মীয়কেই চাকরি দেওয়া হবে?

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in