দমকলে অস্থায়ী কর্মীদের মেয়াদ ১ থেকে বাড়িয়ে ৪ বছর! এভাবে দফতর চালানো যায়? রাজ্যকে ভর্ৎসনা হাইকোর্টের

এক বছরের জন্য নিয়োগ করে কাজের মেয়াদ অনির্দিষ্টকাল ধরে বাড়ানো যায় না। এসব কোনোভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।
কলকাতা হাইকোর্ট
কলকাতা হাইকোর্টফাইল ছবি
Published on

শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতির পর এবার দমকল বিভাগেও কর্মী নিয়োগ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের প্রশ্নের মুখে পড়ল তৃণমূল সরকার। নতুন কর্মী নিয়োগের পাশাপাশি অস্থায়ী কর্মীদের কাজের মেয়াদ বৃদ্ধি নিয়ে রাজ্য সরকারের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বিচারপতি দেবাংশু বসাক। মঙ্গলবার এই সংক্রান্ত একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে তিনি জানিয়েছেন, “এক বছরের জন্য নিয়োগ করে কাজের মেয়াদ অনির্দিষ্টকাল ধরে বাড়ানো যায় না। এসব কোনোভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।”

রাজ্যের দমকল বিভাগে যেখানে বিভিন্ন পোস্টের প্রায় সাড়ে ৫ হাজার পদ ফাঁকা পড়ে রয়েছে, সেখানে রাজ্য সরকার অস্থায়ীভাবে নিয়োগ করা কর্মীদের কাজের মেয়াদ ১ বছরের জায়গায় বাড়িয়ে ৪ বছর করে দিয়েছে। এই অভিযোগ নিয়েই কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা করা হয়েছিল। মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতি দেবাংশু বসাক জানিয়েছেন, “যে সমস্ত অস্থায়ী কর্মীদের কাজের মেয়াদ ১ বছর থেকে বাড়িয়ে ৪ বছর করা হয়েছে, তাঁদের অবিলম্বে চাকরি থেকে বরখাস্ত করতে হবে। এইভাবে অস্থায়ী কর্মীদের কাজের মেয়াদ বাড়িয়ে বাড়িয়ে দফতর চালানো যায় নাকি?” রাজ্য সরকারের কাছে এই অস্থায়ী কর্মীদের কাজের মেয়াদ বাড়ানোর কারণও জানতে চেয়েছে আদালত।

রাজ্যের পক্ষে অ্যাডভোকেট জেনারেল এস.এন মুখোপাধ্যায় এদিন আদালতে বলেন, ওয়েস্ট বেঙ্গল ফায়ার সার্ভিস অ্যাক্ট ১৯৫০ অনুযায়ী দমকল বিভাগে ৫০ শতাংশ স্থায়ী পদ রয়েছে এবং তাঁদের সরাসরি নিয়োগ করা হয়। বাকি ৫০ শতাংশ অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করা হয় অক্সিলারি ভলেন্টিয়ারদের মধ্যে থেকে। তিনি আরও জানিয়েছেন, “দমকলের সিলেকশন কমিটি ২৫ জনকে নিয়োগ করতে পারে এবং ২০১৭ সালের বিবৃতি অনুযায়ী ২০১৯ সালে তাঁদের নিয়োগ করা হয়েছে। তাঁদের কাজের মেয়াদ এক বছরের হলেও রাজ্য সরকার চাইলেই তাঁদের মেয়াদ বৃদ্ধি করতে পারে।”

তবে মামলাকারী অবশ্য দাবি করেছেন, এই মুহূর্তে দমকল দফতরে প্রায় ১২০০ জন অস্থায়ী কর্মী রয়েছেন। এবং নতুন নিয়োগ বন্ধ করে পুরনো ওই অস্থায়ী কর্মীদেরই কাজের মেয়াদ ১ বছর থেকে বাড়িয়ে ৪ বছর করা হয়েছে। আবার রাজ্য জুড়ে দমকলের কন্ট্রোল রুমের কর্মী, স্টেশন অফিসার, সাব-অফিসার, অফিসার-সহ সাড়ে ৫ হাজারেরও বেশি পদ নিয়োগের অভাবে ফাঁকা পড়ে রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। দুই পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আগামী ১৫ দিনের মধ্যে রাজ্যকে এই নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দিতে বলেছে হাইকোর্ট।

কলকাতা হাইকোর্ট
বেনজির নির্দেশ, শিক্ষা দফতরকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বিচারপতি গাঙ্গুলির

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in