Untitled Jun 14, 2022 11:51 am

প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে দায়ের করা আরও একটি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। পাশাপাশি বেআইনিভাবে চাকরি পাওয়া ২৬৯ জন প্রাথমিক শিক্ষককে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছে আদালত। তাঁদের বেতনও বন্ধ থাকবে। সোমবার এই নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গেল বেঞ্চ।

২০১৪ সালে প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। ২০১৫ সালের ১১ অক্টোবর নিয়োগ পরীক্ষা হয়। পরীক্ষায় বসেছিলেন প্রায় ২৩ লক্ষ পরীক্ষার্থী। পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয় ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। ওই বছরই মেধাতালিকা প্রকাশ করে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। ৪২ হাজার প্রার্থীকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছিল। এরপর ২০১৭ সালে আচমকা দ্বিতীয় একটি মেধাতালিকা প্রকাশ করে পর্ষদ, যেখানে ২৬৯ জনের নাম প্রকাশ করা হয়। এই দ্বিতীয় প্যানেল বেআইনিভাবে প্রকাশ করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। কোন মাপকাঠিতে এই দ্বিতীয় মেধা তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে তা জানতে চেয়ে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন রমেশ মালিক নামের এক চাকরিপ্রার্থী। দ্বিতীয় মেধা তালিকায় চাকরি পাওয়া ৬৮ জনের নাম ঠিকানাও আদালতে জমা দিয়েছিলেন তিনি। এই মামলার শুনানিতে জানা যায় দ্বিতীয় মেধা তালিকায় চাকরি পাওয়া ২৬৯ জনই বেআইনিভাবে চাকরি পেয়েছেন। পর্ষদের যুক্তি, প্রশ্নপত্রে একটি প্রশ্ন ভুল ছিল। এই ভুল প্রশ্নের জন্য এক নম্বর দেওয়ায় দ্বিতীয় মেধা তালিকা প্রকাশ করতে হয়েছে। আদালত পাল্টা প্রশ্ন করে, এই দ্বিতীয় মেধা তালিকার জন্য কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল কিনা? ওয়েবসাইটে মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়নি কেনো? এর কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি পর্ষদ। আরও জানা যায় যে ২৬৯ জনকে চাকরি দেওয়া হয়েছে, তাঁদের মধ্যে প্রায় ৭০ জন অতিরিক্ত ১ নম্বর পেয়েও পাশ করতে পারেননি। এরপরই হাইকোর্ট এই দ্বিতীয় মেধাতালিকা বাতিল করে এই ঘটনার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়।

প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় সোমবারই প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি তথা তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য এবং পর্ষদের সচিব রত্না চক্রবর্তী বাগচীকে সিবিআই দপ্তরে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। আদালতের নির্দেশ মেনে এদিন সন্ধ্যায় সিবিআই দপ্তরে হাজিরা দেন তাঁরা। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তাঁদের।

অন্যদিকে, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার কিছুক্ষণ পরই হঠাৎই কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বাড়িতে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রায় আধঘন্টা সেখানে ছিলেন তিনি হাইকোর্টের নির্দেশ এরপরই মুখ্যমন্ত্রীর 'তৎপরতায়' জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।

কিছুদিন আগেই প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের অপর একটি দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল অভিজিত গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গেল বেঞ্চ। সেক্ষেত্রে অভিযোগ ছিল চন্দন মন্ডল নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে, যিনি লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে বেআইনিভাবে বহু জনকে প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন। সিবিআই এখনও এই চন্দন মন্ডলের সন্ধান পায়নি।

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in