
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সম্প্রতি সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতার সঙ্গে দিল্লিতে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন। তারপর থেকেই রাজনৈতিক চাপান উতোর শুরু। তড়িঘড়ি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে সলিসিটর জেনারেলের অপসারণ দাবি করা হয়। রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে নালিশ জানানো হবে জানিয়েছিল তৃণমূল। এবার সেই মত সোমবার রাষ্ট্রপতির কাছে সরাসরি অভিযোগ জানাতে চলেছে তৃণমূল প্রতিনিধি দল। রবিবার এক সাংবাদিক বৈঠকে এমনটাই জানান তৃণমূল রাজ্যসভার চিফ হুইফ সুখেন্দু শেখর রায়। পাশাপাশি সুযোগ মিললে রাজ্যপাল অপসারণ সহ একাধিক ইস্যুতে আলোচনা হতে পারে বলেও জানান সুখেন্দু বাবু।
উল্লেখ্য, নারদ স্টিং-কাণ্ডে শুভেন্দু অধিকারীকে টাকা নিতে দেখা গিয়েছিল। তার তদন্ত করছে সিবিআই এবং ইডি। তুষার মেহতা সেই মামলায় সিবিআইয়ের হয়ে সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টে সওয়াল করছেন। পাশাপাশি সিবিআই ও ইডি সারদা মামলার তদন্ত করছে। সুদীপ্ত সেন মূল অভিযুক্ত। যিনি একাধিকবার চিঠি দিয়ে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। সারদা-মামলাতেও সিবিআইকে পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি মামলা লড়েছেন তুষার মেহতা। শুভেন্দু অধিকারী যে মামলায় অভিযুক্ত, তাতে সলিসিটার জেনারেলের অফিসকে ব্যবহার করে, মামলার ফলাফলকে প্রভাবিত করার উদ্দেশ্যেই বৈঠকের চেষ্টা চালিয়ে ছেন এমনটাই অভিযোগ তৃণমূলের।
সে কারণেই স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার স্বার্থে অবিলম্বে তুষার মেহতাকে তাঁর পদ থেকে সরাতে প্রধানমন্ত্রীর পর এবার রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হচ্ছে তৃণমূল।
অন্যদিকে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরের সঙ্গে খুঁটিনাটি নানা বিষয়ে সংঘাত অব্যাহত। রাজ্যপাল নিজের দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে ঠিক ভুল বিচার করতে চাইছেন। কিন্তু সরকারের অনেক ক্ষেত্রেই রাজ্যপালের এই আচরণ মনে ধরছে না। তাই বারবার তৈরি হচ্ছে সংঘাতের আবহ। রাজ্যপালের অপসারণের দাবি তুলে রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি লিখেছেন স্বয়ং দলনেত্রী নিজেও। তবে সোমবার দিল্লিতে রাষ্ট্রপতির বাসভবন রাইসিনা হিলসে সেই আবেদন আরো একবার উত্থাপিত হতে চলেছে। এ প্রসঙ্গে সুখেন্দু শেখর বলেন, ' আমাদের আলোচনার বিষয়বস্তুর মধ্যে এমনটা আছে। তবে সময় পেলে নিশ্চই এ বিষয়ে আলোচনা করব।'
ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডের পর থেকে রাজ্য জুড়ে বিজেপি শাসকের দুর্নীতি নিয়ে আরো সরব হয়েছে। এদিন তৃণমূলের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে সাংসদ বলেন, 'এমন কোনও স্বর্গীয় জায়গা আছে বলে আমার জানা নেই, যেখানে দুর্নীতি হয় না। তবে আমাদের কাজ হবে অভিযুক্তদের শনাক্ত করে তাঁদের শাস্তি দেওয়া। আগেও দিদিকে বলো-সহ একাধিক কর্মসূচির মাধ্যমে দুর্নীতিবাজদের চিহ্নিত করেছে তৃণমূল। এভাবেই কাজ চলতে থাকবে।' পাশাপাশি বিজেপিকে বিঁধে তিনি বলেন, 'বিজেপি দলটা বাংলায় তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়বে। ওদের পতন কেবল মাত্র সময়ের অপেক্ষা।'
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন