Kalyan Banerjee: সাংবাদিক সম্মেলন করে দলীয় সাংসদদেরই তীব্র আক্রমণ তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জির

People's Reporter: কল্যাণ বলেন, ‘‘নারদার চোর আর এর-তার থেকে গিফ্‌ট-নেওয়া সব দু’নম্বরিগুলো এক জায়গায় হয়েছে। দু’নম্বরিদের এক জায়গায় হতে বেশি সময় লাগে না”।
কল্যাণ ব্যানার্জী
কল্যাণ ব্যানার্জীছবি - সংগৃহীত
Published on

তৃণমূলের অন্দরের সাংসদ সংঘাত এবার হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে চলে এল প্রকাশ্যে। আর সেই দ্বন্দ্বের মাঝেই মঙ্গলবার দিল্লি থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে দলের তিন সাংসদকে নিশানা করলেন শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সৌগত রায় এবং কীর্তি আজাদের নাম নিলেও একজন সাংসদের নাম নেননি প্রবীণ সাংসদ। তাঁকে বারবার ‘মহিলা সাংসদ’, ‘ওই ভদ্রমহিলা’ বলেই সম্বোধন করে গেছেন। তবে অনুমান করা হচ্ছে, ওই মহিলা সাংসদ কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্র।

মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে সৌগত রায় এবং উক্ত মহিলা সাংসদকে এক যোগে আক্রমণ করে কল্যাণ বলেন, ‘‘সৌগত রায়ের কোনও ক্যারেক্টার (চরিত্র) আছে নাকি? নারদার টাকা নিয়েছিল, মনে নেই? নারদার চোর আর এর-তার থেকে গিফ্‌ট-নেওয়া সব দু’নম্বরিগুলো এক জায়গায় হয়েছে। দু’নম্বরিদের এক জায়গায় হতে বেশি সময় লাগে না”।

উল্লেখ্য, বিদেশী ব্যবসায়ীর থেকে উপহার নিয়ে সংসদে আদানি এনং প্রধানমন্ত্রী মোদীকে জড়িয়ে প্রশ্ন তোলার অভিযোগে গত মেয়াদের শেষ পর্বে সংসদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল মহুয়া মৈত্রকে। অন্যদিকে, সৌগত রায়কে নারদ গোপন ক্যামেরা অভিযানে (স্টিং অপারেশন) ঘুষ নিতে দেখা গিয়েছিল।

যদিও কৃষ্ণনগরের সাংসদের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে সূত্রের খবর, কল্যাণের দুর্ব্যবহার নিয়ে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি পাঠিয়েছেন মহুয়া। মঙ্গলবার সকালেই সেই চিঠি পৌঁছেছে কালীঘাটের বাড়িতে। মহুয়ার সেই চিঠি প্রসঙ্গে এদিন কল্যাণ বলেন, “আমি সংসদে সকলের বিরুদ্ধে লড়াই করি। একাই লড়াই করি। একটা অধিবেশনে না এলে বুঝবে!’’ কল্যাণের আরও বক্তব্য, ‘‘ইংরেজিতে ফটরফটর করলেই কোনও পুরুষকে অসম্মান করা যায় না। দিদি যদি মনে করেন আমি ভুল করেছি, বলে দিন। আমি সব ছেড়ে দিয়ে চলে যাব। আমার কী আছে!’’

ঘটনার সূত্রপাত ৪ এপ্রিল। দিল্লির কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনে স্মারকলিপি দিতে গিয়েছিলেন তৃণমূলের প্রতিনিধিরা। সূত্রের খবর, স্মারকলিপিতে প্রতিনিধিদের সইয়ের জায়গায় ওই মহিলার সাংসদের নাম ছিল না। কিন্তু কমিশনে যেতে বলা হয়েছিল তাঁকে। আর তাতেই তীব্র আপত্তি তোলেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, অন্য সাংসদের কাছে তিনি জানতে পেরেছেন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যাতেই স্মারকলিপি সই করিয়ে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁকে সই করানো হয়নি। অথচ শুক্রবার সকাল ৯.২০ মিনিটে প্রতিনিধি দলের সঙ্গে কমিশনে যেতে বলা হয়েছিল তাঁকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে মহিলা সাংসদকে বলা হয়েছিল তাঁর নামটি স্মারকলিপিতে লিখে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এখানেই থেমে যায়নি বিষয়টি। কমিশনের দপ্তরের বাইরেই ঝামেলাতে জড়ান তৃণমূল সাংসদরা।

এই ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, কমিশনের দফতরের বাইরে ফুটপাথের উপরেই কল্যাণ ওই মহিলা সাংসদকে লক্ষ্য করে অপশব্দ প্রয়োগ করেন। সেই সময় ওই মহিলা সাংসদ বিএসএফ এবং সিআইএসএফ জওয়ানদের নিরাপত্তার অভাব বোধ করার কথা বলেন। কল্যাণকে গ্রেফতারের কথা বলেন।

এই নিয়ে সাংসদদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপেও ঝামেলা শুরু হয়। সেই গ্রুপের কিছু স্ক্রিনশট আবার প্রকাশ্যে আনে বিজেপি।

সোমবার বেশি রাতে বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য কিছু ভিডিয়ো এবং হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপের কিছু স্ক্রিনশট প্রকাশ্যে আনেন। সেই স্ক্রিনশটে কীর্তি আজাদ এবং উক্ত মহিলা সাংসদকে আক্রমণ করতে দেখা যায় কল্যাণকে।

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in