মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়িতে বাড়ানো হচ্ছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। শনিবার রাতে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে এক আগন্তুকের নিষিদ্ধ প্রবেশের ঘটনার পর নড়েচড়ে বসেছে লালবাজার। নিরাপত্তা ব্যবস্থা বিষয়ে পুলিশ অধিকর্তাদের নিয়ে বৈঠকও হয়েছে নবান্নে। কালীঘাটের বাড়িটি এবার নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ঘিরে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।
গত শনিবার (২রা জুলাই) কালীঘাটে খোদ মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির পাঁচিল টপকে ঢুকে পড়ে এক ব্যক্তি। বাসভবনের নিরাপত্তারক্ষীদের চোখ এড়িয়ে সেখানেই সারারাত ঘাপটি মেরে লুকিয়ে ছিল সে। এই ঘটনার পর চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে কালীঘাট এলাকা তথা প্রশাসনিক মহলে। রাজ্যের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এরপরই কালীঘাটের বাসভবনে নিরাপত্তা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার রাতে মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়ির পাঁচিল টপকে ঢুকে পড়ে হাফিজুল মোল্লা নামের এক লোক। জানা গেছে উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা সে। সেদিন কালীঘাটের বাড়িতেই সারারাত ঘাপটি মেরে ছিল হাফিজুল। সকালে তাকে আটক করা হয়। মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির নিরাপত্তা বলয়কে চোখে ধুলো দিয়ে আগন্তুকের বাড়ির ঢোকার ঘটনা, স্বভাবতই রাজ্যের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। হাফিজুলের সাথে একটি লোহার রড ছাড়া অন্য কোন গুরুতর অস্ত্রের হদিস পাওয়া যায়নি। কোনও অসৎ উদ্দেশ্যেই সে ঢুকেছিল বলে অনুমান করা হচ্ছে। পরদিন সকালে হাফিজুলকে গ্রেফতার করে কালীঘাট থানার পুলিশ।
এরপর নবান্নে স্বরাষ্ট্রসচিব, ডি.জি (নিরাপত্তা) এবং কলকাতার পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যসচিব। সেখানে ক্ষোভের মুখে পড়েন রাজ্য পুলিশের ডি.জি (নিরাপত্তা)। মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িকে দু’ভাগে ভাগ করে নিরাপত্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের ওপর। কমব্যাট ফোর্সও রাখা হয়েছে বাড়ির এলাকায়।
এই ঘটনার পর সিপিআইএম নেতা তথা রাজ্যসভার সাংসদ বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করেন। তিনি লিখেছেন - “এক সাংবাদিক বন্ধু প্রশ্ন করলেন, মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ীতে দেওয়াল টপকে ঢুকল, কী বলবেন? বললাম, এটা একটি সাজানো ঘটনা। সে প্রশ্ন করল, কেন? উত্তর দিলাম, ব্যর্থতা ঢাকতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা সবসময়ই ওঁর জীবনহানির কাঁদুনি গাইতে অভ্যস্ত। পত্র পত্রিকায় ভাল প্রচার হয়। আর আন্দোলন দমনে পুলিশি নির্যাতনের তীব্রতা বাড়ানো যায়। জানিনা আমার ঐ বক্তব্য প্রচারিত হবে কিনা। তবে এটা স্পষ্ট করে বলা দরকার, নাটক করে জনসহানুভূতির দিন চলে গেছে।”
লালবাজার সূত্রের খবর, উক্ত ঘটনার পর কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির নিরাপত্তা বাড়াতে অতিরিক্ত ১৮ জন কনস্টেবল মোতায়েন করা হয়েছে। বাড়ানো হচ্ছে সিসিটিভি ক্যামেরার সংখ্যাও। এছাড়া টহলদারি ভ্যানের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে আগের চেয়ে। মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে প্রবেশ ও প্রস্থানদ্বারেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানো হয়েছে। ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বলয়ে মুড়ে ফেলা হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন