
এবার কর্তব্যরত চিকিৎসকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার অভিযোগ উঠল তৃণমূল বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিক এবং তাঁর স্ত্রী শ্রীময়ী চট্টরাজের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে কলকাতার স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনে। এর জেরে বিধায়কের বিরুদ্ধে বড়বাজার থানায় সরকারি ভাবে অভিযোগ জানানোর দাবি তুলেছে ওই হাসপাতালে চিকিৎসকদের সংগঠন (রেসিডেন্ট ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন বা আরডিএ)। বৃহস্পতিবার দুপুরে এ নিয়ে ডেপুটেশন জমা দিয়েছেন তাঁরা। যদিও চিকিৎসকদের এই সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন কাঞ্চন এবং তাঁর স্ত্রী।
চিকিৎসকদের ডেপুটেশন অনুযায়ী, বুধবার ট্রপিক্যাল মেডিসিনের আউটডোরে চিকিৎসক মেহবুবর রহমান এক গুরুতর অসুস্থ শিশুকে দেখছিলেন। তিনি হাসপাতালের বিভাগীয় প্রধান (এইচওডি)। সেই সময় নিয়ম না মেনেই সেখানে ঢুকে পড়েন কাঞ্চন এবং তাঁর স্ত্রী। তাঁদের দাবি, তাঁদের আত্মীয়ার রক্তচাপ মাপতে হবে মেহবুবরকে। সেই সঙ্গে প্রেসক্রিপশনে মেটফরমিন লিখে দিতে হবে।
ডেপুটেশনে চিকিৎসকদের সংগঠন লিখেছে, মেহবুবর যখন জানান যে তিনি বর্তমানে ওই শিশুর চিকিৎসা করছেন, তখনই দুর্ব্যবহার শুরু করেন বিধায়ক এবং তাঁর স্ত্রী। এমনকি চিকিৎসকের নাম এবং রেজিস্ট্রেশন নম্বরও জানতে চান তাঁরা। দেওয়া হয় বদলি করে দেওয়ার হুমকিও। একজন জনপ্রতিনিধির এহেন আচরণ একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। বিধায়কের এই আচরণের কারণে অপেক্ষমাণ রোগীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি রোগীদের চিকিৎসাতেও বিভ্রাট তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে আরডিএ।
চিকিৎসক সংগঠন আসল ঘটনা অনুসন্ধানের জন্য স্বাধীন কমিটি গড়ার দাবি জানিয়েছে। পাশাপাশি সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখার এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান সংগ্রহ করারও দাবি জানানো হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ মেডিকেয়ার পরিষেবা ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান (হিংসা এবং সম্পত্তি নষ্ট প্রতিরোধ) আইন, ২০০৯ অনুসারে যথাযোগ্য পদক্ষেপ করা হোক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। বড়বাজার থানায় অভিযোগ দায়ের করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। এমনকি আক্রান্ত চিকিৎসককেও প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে।
যদিও নিজেদের বিরুদ্ধে এই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কাঞ্চন এবং তাঁর স্ত্রী শ্রীময়ী। এক সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমকে তাঁরা জানিয়েছেন, চর্মরোগ জনিত সমস্যার কারণে ১০ দিন কলকাতার ট্রপিকাল মেডিসিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তাঁর দিদা। বুধবার ফের চেকআপ করানোর জন্য দিদাকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা। রক্তচাপ মাপার কথা বললে খুব রুঢ় ভাবে জবাব দেন ওই চিকিৎসক। তাঁদের দাবি, বাকি পাঁচ জনের মতো টিকিট কেটে লাইনে দাঁড়িয়ে ডাক্তার দেখিয়েছিলেন তাঁরা। তারপরেও এই ধরনের ঘটনার সম্মুখীন হতে হয়েছে তাঁদের।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন