Public Accounts Committee: জল্পনার ইতি, প্রথা বদলে কমিটির চেয়ারম্যান মুকুল রায়

বিরোধীদের বিরোধিতা উপেক্ষা করেই বিধানসভায় পাবলিক একাউন্টস কমিটির নতুন চেয়ারম্যান হলেন বিজেপির টিকিটে জিতে তৃণমূলে যোগ দেওয়া মুকুল রায়।
মুকুল রায়
মুকুল রায়ফাইল ছবি সংগৃহীত

সব জল্পনার অবসান। বিরোধীদের বিরোধিতা উপেক্ষা করেই বিধানসভায় পাবলিক একাউন্টস কমিটির নতুন চেয়ারম্যান হলেন বিজেপির টিকিটে জিতে তৃণমূলে যোগ দেওয়া মুকুল রায়। শুক্রবার বিধানসভা অধিবেশন শেষে এমনটাই জানিয়েছেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।

যদিও স্পিকারের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপি। এদিন বিধানসভা কক্ষে বিক্ষোভের পর ওয়াক-আউটও করে গেরুয়া শিবির। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুর অভিযোগ, প্রচলিত রীতি না মেনে মুকুল রায়কে অন্যায়ভাবে পিএসি চেয়ারম্যান করা হল। তবে বিরোধী দলনেতার এই অভিযোগকে পাত্তা দিতে নারাজ রাজ্যের বর্ষীয়ান বিধায়ক তথা মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। তিনি পাল্টা বলেন, 'যা হয়েছে নিয়ম মেনেই হয়েছে। মুকুল রায় তো এখনও বিজেপির বিধায়ক। আমি ১৫ বছর পদে ছিলাম।' অন্যদিকে রাজ্যের আরেক মন্ত্রী মানস ভূঁইয়া স্পষ্ট জানিয়েছেন পিএসি চেয়ারম্যান নিয়োগে কোনো অনিয়ম হয়নি।

প্রসঙ্গত, একুশের বিধানসভা নির্বাচনে কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপির টিকিটে বিধায়ক হয়েছেন মুকুল রায়। বিধানসভায় শপথ গ্রহণও করেন বিজেপি বিধায়ক হিসেবে। পরবর্তীকালে তিনি আবার তৃণমূলে ফিরে আসেন। বিজেপির শত বিরোধিতা সত্ত্বেও তিনি এখনও বিজেপির বিধায়ক। পাশাপাশি মুকুল রায় আবেদন করেছেন পিএসি কমিটির চেয়ারম্যান পদের জন্য।

পিএসি-র জন্য মোট ২০ জন সদস্যের তালিকা আগেই প্রকাশ করা হয়েছিল বিধানসভার তরফে। বিজেপি-র ৬ জন, তৃণমূলের ১৩ জন এবং মুকুল রায় মনোনয়ন দাখিল করেছিলেন। ২০ জনের কমিটিতে ২০টি বৈধ মনোনয়ন জমা প়ড়ায় নির্বাচনের প্রয়োজন পড়েনি। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতাতেই কমিটিতে নির্বাচিত হন ২০ জন। মুকুলের পি এসি পদে মনোনয়ন জমা পড়তেই রাজনৈতিক জল্পনা শুরু হয়ে যায়। এদিন তারই অবসান হল। স্পিকার নিজ ক্ষমতা প্রয়োগ করে মুকুলকে ওই পদে বহাল করলেন।

এদিন বিধানসভায় পিএসি কমিটির চেয়ারম্যান মুকুল রায়কে নিযুক্ত করার পরেই তৃণমূলের পক্ষ থেকে অধ্যক্ষের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান তৃণমূল কংগ্রেসের দুই বর্ষীয়ান বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও মানুষ ভুঁইয়া। পিএসি কমিটির চেয়ারম্যান প্রসঙ্গে সুব্রত বলেন, 'মুকুল রায় এখনো আইনি পদত্যাগ করেন নি। তাই আইন মেনে তিনি এখনও বিরোধী। যে দলের টিকিটে জিতে এসেছেন সেই দলেরই লোক। পাশাপাশি প্রথা অনুযায়ী বিরোধী দল থেকেই পিএসি কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়। সেই রীতি মেনেই মুকুল রায়কে চেয়ারম্যান পদে নিযুক্ত করা হয়েছে। তবে বিরোধীদের পক্ষ থেকে যেভাবে অভিযোগ আনা হচ্ছে সেটা ঠিক নয়। কারণ এর একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতি আছে। আমি নিজেও ১৫ বছর এই কমিটির চেয়ারম্যান ছিলাম। আমি জানি তা। বিজেপি থেকে নাম দিলেই ওভাবে চেয়ারম্যান করা যায় না। এর জন্য যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা থাকতে হয়। সবটাই বিচার করে অধ্যক্ষ সিদ্ধান্ত নেন। তাই যা হয়েছে সবটাই নিয়ম মেনেই হয়েছে।

বিরোধীরা যতই পিএসসি চেয়ারম্যান পদে নিযুক্তি নিয়ে আইন ভঙ্গের কথা বলুক কিন্তু তাতে সায় দিতে নারাজ রাজ্যের মন্ত্রী তথা প্রাক্তন পিএসি চেয়ারম্যান মানস ভুঁইয়া। তিনি নিজেও একসময় কংগ্রেস বিধায়ক থেকেও তৃণমূলে যোগ দিয়ে পিএসি কমিটির চেয়ারম্যান হয়েছিলেন।

এদিন তিনি নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, 'প্রথম বিতর্ক বিধানসভায় পিএসি চেয়ারম্যান নিযুক্ত করা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল মানস ভুঁইয়াকে নিয়ে। সেসময় প্রদেশ কংগ্রেসের টিকিটে আমি বিধায়ক ছিলাম। কিন্তু আমাকে নমিনেশন জমা করতে বাধা দেওয়া হয়েছিল দলের পক্ষ থেকে। বদলে সুজন চক্রবর্তীকে চেয়ারম্যান পদে বসানোর কথা বলা হয়েছিল। আমি তা মেনে নিতে পারিনি। দলত্যাগ করে পিএসি চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন জমা করেছিলাম। সিনিয়র মেম্বার হিসেবে অধ্যক্ষের হস্তক্ষেপে আমার নাম বিবেচিত হয়। সেই একইভাবে প্রথা মেনে বিরোধী দল থেকে নতুন চেয়ারম্যান নিযুক্ত করা হয়েছে। এটি একদম সঠিক সিদ্ধান্ত। অধ্যক্ষের এই অধিকার আছে। পিএসি কমিটির চেয়ারম্যান বেছে নেওয়ার। এখানে কোনো অনিয়ম হয়নি। আর মুকুল রায় একজন সিনিয়র মেম্বার, প্রাক্তন সাংসদ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলেন। তাই তাকে পিএসি চেয়ারম্যান করে কোনো ভুল কাজ হয়নি।'

- with inputs from IANS

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in