রেলে শূন্যপদ ৩ লক্ষের বেশি, দ্রুত নিয়োগের দাবিতে বিক্ষোভ কলকাতায়

ইন্দ্রজিৎ ঘোষের বক্তব্য, ২০২২ সালের ১ ডিসেম্বরের হিসাব অনুযায়ী রেলে এই মুহূর্তে শূন্য পদের সংখ্যা তিন লক্ষ ১২ হাজার। অথচ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, প্রতি বছর দু’কোটি বেকারের চাকরি হবে।
রেলে শূন্যপদে নিয়োগের দাবিতে বিক্ষোভ কলকাতায়
রেলে শূন্যপদে নিয়োগের দাবিতে বিক্ষোভ কলকাতায়ছবি সৌজন্যে ইন্দ্রজিৎ ঘোষের ফেসবুক পেজ

রেলে শূন্যপদে নিয়োগের দাবিতে পথে নামল পশ্চিমবঙ্গ চাকরি-প্রার্থী ঐক্য মঞ্চ। দ্রুত নিয়োগের দাবিতে শুক্রবার রেলওয়ে রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের (আরআরবি) কলকাতা দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখাল তারা।

তাঁদের দাবি, রেলে এই মুহূর্তে তিন লক্ষের বেশি শূন্য পদ রয়েছে। অ্যাসিস্ট্যান্ট লোকো পাইলট, টেকিনিশিয়ান, জুনিয়র ইঞ্জিনিয়র, এনটিপিসি গ্রুপ সি এবং ডি-সহ বিভিন্ন শূন্যপদে নিয়োগের দাবি তোলা হয়েছে কর্মসূচি থেকে।

বিক্ষোভকারীদের পক্ষ থেকে তিন চাকরিপ্রার্থীর একটি প্রতিনিধি দল রেলের আধিকারিকদের সাথে দেখা করে স্মারকলিপি জমা দেন। নিজেদের দাবির কথা জানান। এরপর বাইরে এসে সাংবাদিকদের তাঁরা জানান, রেল আধিকারিকরা তাঁদের স্মারকলিপি জমা নিয়েছেন। তাঁরা তাঁদের জানিয়েছেন, প্রস্তুতি নিতে থাকুন, শীঘ্রই পরীক্ষার তারিখ জানানো হবে। তবে বয়সের ঊর্ধ্বসীমায় ছাড় দেওয়ার যে আবেদন জানিয়েছিলেন চাকরিপ্রার্থীরা, সেই বিষয়ে কিছু করতে পারবে না বলে জানিয়েছেন রেল আধিকারিকরা। বিষয়টি উচ্চতর আধিকারিকদের জানাবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন তাঁরা।

মঞ্চের তরফে সিটু নেতা ইন্দ্রজিৎ ঘোষের বক্তব্য, ‘‘২০২২ সালের ১ ডিসেম্বরের হিসাব অনুযায়ী রেলে এই মুহূর্তে শূন্য পদের সংখ্যা তিন লক্ষ ১২ হাজার। অথচ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, প্রতি বছর দু’কোটি বেকারের চাকরি হবে। বলেছিলেন, রোজগার মেলা থেকে চাকরির ঘোষণা হবে। শূন্য পদে নিয়োগ না শুরু হলে বৃহত্তর আন্দোলন হবে।’’

তিনি আরও বলে, “গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি, অ্যাসিস্ট্যান্ট লোকো পাইলট, রেলের সিগনাল অপারেটর - এরকম নানা পথ ফাঁকা। করমন্ডল রেল দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হলো অল্প সংখ্যক কর্মীদের উপর লাগামহীন কাজের চাপ। এত বিপুল শূন্য পদের কারণে ভারতীয় রেলের ঐতিহ্যও নষ্ট হচ্ছে। এশিয়ার মধ্যে ভারতীয় রেল ক্ষেত্র সবথেকে বড় কাজের জায়গা। সেখানেই এখন লক্ষ লক্ষ শূন্য পদ। নিয়োগের দাবিতে চাকরি প্রার্থীরা একত্রিত হয়ে এখানে প্রতিবাদ জানাচ্ছি তাই।"

মঞ্চের দাবি, ২০১৯ সালের পর থেকে রেলে নিয়োগের কোনও বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়নি। তাই বয়সে ছাড় দেওয়া দাবি জানিয়েছিলেন তারা। যারা স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য তাদের কাছে ইমেইল মারফত এই দাবিগুলি আগেই জানানো হয়েছিল। স্ট্যান্ডিং কমিটিতে এই রাজ্যের তরফ থেকে দুজন সদস্য আছেন। রেল দপ্তরও এই বিষয়ে গতানুগতিক উত্তর দিচ্ছে বলে অভিযোগ ইন্দ্রজিৎ ঘোষের।

 এদিন যৌথ মঞ্চের পক্ষ থেকে ইন্দ্রজিৎ ঘোষ ছাড়াও এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য DYFI নেতা কলতান দাশগুপ্ত, বিকাশ ঝা, শিখা বসাক, মৌসুমি দাস, দীপক সিংহ প্রমুখ। কলতান দাশগুপ্ত পিপলস্ রিপোর্টারের প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন, “দাবিপত্র জমা দেওয়ার সময় রেলের আধিকারিকরা চাকরিপ্রার্থীদের পড়াশুনা চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। কবে পরীক্ষা হবে রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের পক্ষে বলা সম্ভব না বলে জানিয়েছেন। ওটা ওপরমহলের আধিকারিকরা ঠিক করেন। আর যেহেতু তিন বছর পরীক্ষা হয়নি। আমরা বয়সের ঊর্ধসীমায় ছাড় দেওয়ার আবেদন জানিয়েছিলাম। ওনারা এটাও করতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন।"

অন্যদিকে, আগামী রবিবার ভার্চুয়াল মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শিলান্যাস করবেন অমৃত ভারত স্টেশন প্রকল্প-৩-এর। অমৃত ভারত স্টেশন প্রকল্প-৩-এর আওতায় দেশের ৫০৮টি স্টেশনের পুনর্নির্মাণ বা সংস্কার হবে। যার মধ্যে পূর্ব রেলের অধীন রয়েছে ২৮টি স্টেশন।  

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in