

"নির্বাচন কমিশন আসে আর যায়, তারপরে কিন্তু রাজ্য সরকার থাকে!" নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে নবান্নের সংঘাতের আবহে তৃণমূলের ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের মঞ্চ থেকে জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, বিডিওদের ‘বার্তা’ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি, আসছে বিধানসভা নির্বাচনে আসন সংখ্যা বাড়বে তৃণমূলের, মঞ্চ থেকে এমন বার্তাও দিতে শোনা গেছে দলের সুপ্রিমোকে।
ভোটার তালিকায় কারচুপির অভিযোগে বাংলার চার আধিকারিককে সাসপেন্ডের নির্দেশ দিয়েছিল কমিশন। পাশাপাশি তাঁদের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর-এরও নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলেন, ওই চার আধিকারিককে সাসপেন্ড ও তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হবে না। এরপরেই পদক্ষেপ করে কমিশন। দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয় মনোজ পন্থকে। মুখ্যসচিব ফেরার পর গত ২১ আগস্ট চার আধিকারিককে সাসপেন্ড করে রাজ্য। যদিও এফআইআরের বিষয়ে সময় চেয়ে নিয়েছে রাজ্য।
এনিয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে চাপানউতর চলছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের। এই আবহে বৃহস্পতিবার মমতা বলেন, ‘‘ললিপপ সরকার বিডিও, এসডিও, ডিএম, এসপিদের ভয় দেখাচ্ছে। বলছে চাকরি খেয়ে নেব, নয় জেলে পুরে দেব। নির্বাচন কমিশন আসে আর যায়, তার পরে কিন্তু রাজ্য সরকার থাকে। গায়ের জোরে এ সব হবে না।’’ মনে করা হচ্ছে, রাজনৈতিক মঞ্চ থেকে তিনি সার্বিক ভাবে রাজ্য প্রশাসনকেই বার্তা দিতে চেয়েছেন।
সেই সঙ্গে বিজেপির উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘‘ভান্ডারা আমাদের কাছেও আছে। যেমন লক্ষ্মীর ভান্ডার আছে, তেমন আপনাদের দুর্নীতির ভান্ডারাও আছে। খুলে দেব, ফাঁস করে দেব।”
অন্যদিকে, এদিনের সভা থেকে আসন্ন বিধানসভায় আসন বৃদ্ধির কথাও জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, "বিনা যুদ্ধে এক ইঞ্চি জমি তৃণমূল কংগ্রেস ছাড়েনি, ছাড়বেও না। কারও সাহায্য ছাড়াই তৃণমূল কংগ্রেস দল তৈরি হয়েছিল মানুষের আশীর্বাদে, দোয়ায়, জয় জোহারে। মনে রাখবেন, আগামী নির্বাচনে আরও সিট (আসন) আপনাদের বাড়বে। তার কারণ, আমরা মানুষের উন্নয়ন করি, আরও করব।’’
এর আগে আসনবৃদ্ধি সংক্রান্ত মন্তব্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে শোনা যায়নি। এই সমস্ত মন্তব্য অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় করে থাকেন। সাধারণত মমতা ‘জিততে হবে’ ধরনের মন্তব্য করেন। কিন্তু হঠাৎ কেন এহেন ভবিষ্যদ্বাণী করলেন মমতা? দলের শীর্ষ স্থানীয় নেতাদের মতে, মমতার আত্মবিশ্বাসের মূল কারণ সরকারি পরিষেবা প্রদান। রাজ্যে এমন বাড়ি খুঁজে পাওয়া মুসকিল, যেখানে মমতা সরকারের সুবিধাভোগী নেই। তাঁদের মতে, ভোট হয় বুথে। সেখানে তৃণমূল এখন অপ্রতিরোধ্য। বিজেপি-সহ বিরোধীদের সংগঠনের অবস্থা খারাপ।
যদিও এটা নিয়ে অনেকের ভিন্নমত আছে। অনেকের মতে, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের ১৫ বছরের প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার বোঝা নিয়ে লড়তে হবে। প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা তীব্র হলে সংগঠন, সরকারের কাজের উপর ভোট নির্ভর করে না।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন