
বাম গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলোকে নিয়ে আমরা যে আসন সমঝোতা করেছি এবং তার ভিত্তিতে যে প্রার্থী তালিকা ঘোষিত হয়েছে, যে লড়াকু, বুদ্ধিদীপ্ত, লড়াকু প্রার্থী মানুষ পেয়েছেন তাতে তাঁরা স্বাগত জানিয়েছেন। প্রথম রাউন্ডেই অনেক খেলোয়াড় আহত, কেউ টেন্টে ফিরে গেছে, কেউ টেন্ট থেকে বেরোতে চাইছেন না। মঙ্গলবার আলিমুদ্দিন স্ট্রীটে এক সাংবাদিক সম্মেলনে একথা জানান সিপিআই(এম) পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম।
এদিন তিনি আরও বলেন - যারা ভেবেছিলো নির্বাচনটা খেলা তাঁরা বুঝেছে এটা কঠিন লড়াই। কিন্তু বিজেপি এখন নিজের লড়াই লড়তে ব্যস্ত। হোম মিনিস্টার এখন বিজেপির হোম নিয়ে ব্যস্ত। রাতভোর ঘুম হচ্ছে না। ভাঙচুর তো হবেই। যে তৃণমূল বিধানসভা ভাঙচুর করে ক্ষমতায় এসেছিলো সেই দাগীগুলোই তো এখন বিজেপি মানে টিএমসি ২ হয়েছে। ভাঙচুর তো তাঁদের ঠিকুজিতে লেখা আছে। ডাল পাল্টালে কী হবে?
তিনি আরও বলেন - আমরা এসবে কান দিতে বারণ করছি। মিডিয়াকেও বারণ করছি। গত দু তিন মাস ধরে ওঁরা কিছু নায়ক নায়িকাকে প্রোজেক্ট করলেন। এগুলো কেন করতে হয়? এগুলো করতে হয় কারণ আমাদের প্রার্থী মীনাক্ষী সায়নদীপ কাজের কথা বলছে। একটা প্রজন্মকে, তাঁদের ভবিষ্যতকে নষ্ট করা হয়েছে এ রাজ্যে তাঁদের দাবীতে লড়াই করছে। এখানে যাতে শিল্প সংস্থান হয় তার জন্য লড়াই করছে। আমরা যখন বলছি কর্ম ওঁরা বলছে ধর্ম। আমরা বলছি কর্ম সংস্থান ওঁরা বলছে ধর্মস্থান। আমরা বলছি কামকাজ ওঁরা বলছে রামরাজ। বাঙলার মানুষের এই বুদ্ধি আছে তাঁরা এই ধাপ্পা ধরতে পেরেছেন। যারা ভেবেছিলো লড়াই হবে সফট আর হার্ড হিন্দুত্বের মধ্যে হবে, ধর্মের বিভাজনের মধ্যে হবে তাঁরা বুঝতে পেরে গেছে মানুষ এর মধ্যে নেই। এখন চলছে বিজেপি তৃণমূলের বস্তাপচা চাপান উতোর। ওঁদের স্ক্রিপ্ট হারিয়ে গেছে।
এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে সেলিম বলেন – নির্বাচনে সবে প্রচার শুরু হয়েছে। তাতে যেভাবে নতুন অংশের মানুষ যোগ দিচ্ছেন তা অন্য ইঙ্গিত দিচ্ছে। যারা আমাদের থেকে মুখ ফিরিয়েছিলেন তাঁরাও ফিরছেন। আওয়াজ উঠেছে হাল ফেরাও লাল ফেরাও। তাতেই অনেকের আপাদমস্তক গণ্ডগোল হয়ে যাচ্ছে। ফেক নিউজে মিডিয়ার একটা অংশও শামিল হয়ে যাচ্ছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক।
বিজেপি এবং তৃণমূল প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে এদিন সেলিম বলেন - নন্দীগ্রামে কী হয়েছিলো বলতে পারবো না, তবে এটা নিশ্চিত যে হালকা ভিড়ের জন্য ঝাড়গ্রামে হেলিকপ্টারে গণ্ডগোল হয়েছিলো। যারা ভেবেছিলো ফাইভ স্টার হোটেল দেখিয়ে নির্বাচনে লড়বেন তাঁদের বলি আমরা নির্বাচনে কোনো অশান্তি চাই না। আপনাদের অন্তঃকলহ বন্ধ করুন। মমতা ব্যানার্জিকে বলছি পুরোনো নাটক আর করবেন না। সেই আবেগ আর নেই। পালে বাঘ পড়েছে বলে খুব বেশিদিন কাটানো যায়না। এবার আবেগে নয়, যৌবনের বেগে ভোট হবে। শিক্ষার দাবীতে লড়ছে প্রতিকূর, সৃজন, ঐশী, দীপ্সিতা।
প্রতিপক্ষ দুই রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে বলতে গিয়ে এদিন সিপিআই(এম) নেতা বলেন - আজ আদিবাসীদের জন্য স্কুলের কথা বলছে বিজেপি। আর সারা বছর ধরে এই ছাত্রদের জন্য যে ফান্ড তা রিলিজ করেনি বিজেপি সরকার। কেন্দ্রের বিজেপি রাজ্যের তৃণমূল দুজনেই এর অংশীদার। ফরেস্ট আইনকে লবডঙ্কা দেখিয়ে গোটা দেশে আদিবাসীদের জমি থেকে উৎখাত করেছে এঁরাই। আমরা ইউপিএ ১ এর সময় লড়ে এই দাবি আদায় করেছিলাম। আমরা মানুষের অধিকার আদায় করি। আর বিজেপি তৃণমূল মানুষের অধিকার কাড়ে। তপশিলি জাতির মানুষ সবথেকে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যে। দু’দিন আগে মন্দিরে জল খেয়েছে বলে সংখ্যালঘুকে পেটানো হয়েছে। এ কোন দেশ? নৃশংসতা, বর্বরতা সারা দেশকে গ্রাস করছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন