
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের 'তরুণদের স্বপ্ন' প্রকল্পে জালিয়াতির অভিযোগ এবার খাস কলকাতায়। জানা যাচ্ছে কলকাতাতেই ১০০-র বেশি পড়ুয়ার ট্যাবের টাকা উধাও হয়ে গেছে। শহরের বিদ্যালয়গুলিতেও যে প্রতারণার জাল ছড়িয়ে আছে তা একপ্রকার পরিষ্কার হয়ে গেল। ইতিমধ্যেই পুরো বিষয়টি তদন্তের জন্য সিট গঠনের করেছে লালবাজার।
এতদিন শোনা যাচ্ছিল জেলার বিভিন্ন স্কুলের পড়ুয়াদের ট্যাবের টাকা উধাও হয়ে গেছে। কিন্তু এবার সেই জালিয়াতির অভিযোগ আসছে শহরের বিভিন্ন স্কুল থেকে। কসবা, বেনিয়াপুকুর, যাদবপুর, জোড়াসাঁকো, গল্ফগ্রিন, মানিকতলা সহ বেশ কয়েকটি থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, জোড়াসাঁকোতে ৪০ জন পড়ুয়া, যাদবপুরের ১২ জন পড়ুয়া, ঠাকুরপুকুরের ৩১ জন পড়ুয়া, কসবার ১০ জন, বেনিয়াপুকুরের ৫ জন পড়ুয়া এবং আরও অন্যান্য স্কুলের একাধিক পড়ুয়া ট্যাবের টাকা পায়নি বলেই অভিযোগ করেছে।
অন্যদিকে, দক্ষিণ ২৪ পরগণা থেকেও একই অভিযোগ আসছে। সেখানেও একাধিক স্কুল পড়ুয়ার ট্যাবের টাকা উধাও হয়ে গেছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, কোথাও প্রাপকের নামের বানান ভুল অথবা প্রাপকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর ভুল থাকায় অন্য অ্যাকাউন্টে টাকা চলে গেছে। গঙ্গাসাগরের মহেন্দ্রগঞ্জ হাইস্কুলে ৩১ জন পড়ুয়ার ট্যাবের টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। প্রধানশিক্ষকের অভিযোগ, হ্যাকারদের কাজ হতে পারে এটা। এছাড়া কুলপি মদনমোহনপুর আরসি স্কুলের ১৫ জন পড়ুয়ার ট্যাবের টাকা অ্যাকাউন্টে না ঢোকার অভিযোগ সামনে এসেছে।
বেশ কয়েকদিন ধরে সামনে আসছে ‘তরুণদের স্বপ্ন’ প্রকল্পের অধীনে স্কুল পড়ুয়াদের ‘ট্যাব’ বা মোবাইল কেনার টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে ঢুকছে। তদন্তের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। আর তারপরেই সামনে আসে শুধু ট্যাব কেনার টাকাই নয়, ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’, ‘বাধর্ক্য ভাতা’, ‘কৃষকবন্ধুর’ টাকাও ঢুকছে জালিয়াতদের অ্যাকাউন্টে।
নবান্ন সূত্রে খবর, পূর্ব মেদিনীপুর, পূর্ব বর্ধমান এবং উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় সরকারি পোর্টালে ঢুকে প্রকৃত প্রাপকের বদলে অন্যের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর ঢুকিয়ে টাকা নিয়ে নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যেই এমন প্রায় ৮০টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ‘ফ্রিজ’ করা হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন