সিপিআইএম কলকাতা জেলা কমিটির ডাকে শান্তি ও সংহতির মিছিলের ডাক দেওয়া হলেও করা গেল না সেই মিছিল। সিপিআইএম নেতৃত্বের অভিযোগ, মিছিল শুরুর আগেই পুলিশ সিপিআইএম নেতৃত্বকে গ্রেপ্তার করে মিছিল ভেস্তে দেয়। শুক্রবার বটতলা রেললাইন মোড় থেকে আক্রা ফটক পর্যন্ত ‘সংবিধান বাঁচাও দেশ বাঁচাও’ শ্লোগান তুলে শান্তি ও সংহতি মিছিলের ডাক দিয়েছিল কলকাতা জেলা সিপিআইএম সহ অন্যান্য বামপন্থী দল। এদিন মিছিল থেকেই গ্রেপ্তার করা হয় সিপিআইএম কলকাতা জেলা সম্পাদক কল্লোল মজুমদার, কৌস্তভ চ্যাটার্জি সহ অন্যান্য নেতৃত্বকে।
এদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে এক বিবৃতিতে সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম অবিলম্বে আটক নেতৃত্বের মুক্তি দাবি করেছেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, শান্তি সম্প্রীতির জন্য বামপন্থী ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলির পক্ষ থেকে মিছিল করলে সরকার তাদের গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দেয়, অথচ যারা এই অঞ্চলে অশান্তি, প্ররোচনা ছড়িয়েছে এবং এখনও ছড়াচ্ছে, সেই বিজেপি-তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে পুলিশের সামনেই। তৃণমূল সরকারের পুলিশের অগণতান্ত্রিক, স্বৈরাচারী কাজের তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানিয়ে অবিলম্বে কর্মী ও নেতৃবৃন্দকে বিনা শর্তে মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।
শুক্রবার বিকেল চারটে থেকে মেটিয়াবুরুজ, গার্ডেনরিচ, মহেশতলা এলাকাজুড়ে এই শান্তি মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছিল। যদিও সিপিআইএম নেতৃত্বের অভিযোগ, ওই মিছিলে যোগ দেবার জন্য দলীয় নেতৃত্বরা পৌঁছবার পরেই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। আটকদের লালবাজার সেন্ট্রাল লক আপে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছে সিপিআইএম।
সিপিআইএম নেতৃত্ব আরও জানিয়েছে, দলের নেতাদের সঙ্গে দুষ্কৃতীদের মত আচরণ করেছে পুলিশ। তাঁদের সঙ্গে অভব্য আচরণ করে তাঁদের পুলিশ ভ্যানে তোলা হয়। জামার কলার ধরে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয়। একাধিক পার্টি নেতৃত্ব ও কর্মীদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সিপিআইএম নেতা কৌস্তভ চ্যাটার্জি এক ভিডিও বার্তায় ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, মেটিয়াবুরুজ বটতলা থেকে আমরা সবে মিছিল শুরু করতে যাচ্ছিলাম। সেই সময় জেলা সম্পাদক কল্লোল মজুমদার সহ অন্যান্য নেতৃত্বকে আটক করা হয়। শান্তিপূর্ণ মিছিল শুরু হবার আগেই মিছিল থেকে ১৫ জনকে, পরে ১২ জনকে এবং তার পরে আরও ১২ জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
সিপিআইএম নেতার অভিযোগ, ভাইপোর নির্দেশে শুভেন্দু ওখানে মাইক বাজিয়ে সভা করতে পারলো। বিজেপি মিটিং করতে পারলো। কিন্তু আমাদের জমায়েত হবার পরেও আজ যেভাবে পুলিশ মারমুখী হয়ে মিছিল ভেস্তে দিল তাতে বোঝা যায় বিজেপি-তৃণমূলের সাথে পুলিশের গটআপ।
তিনি আরও বলেন, আমাদের রাজ্যে তৃণমূলের দয়ায় শুভেন্দু মিটিং করতে পারবে, বিজেপি মিটিং করতে পারবে, কিন্তু সম্প্রীতির জন্য বামপন্থীরা মিছিল করতে পারবে না। রবীন্দ্রনগরের মোড়ে সিপিআইএম অফিস যখন আক্রান্ত হয়েছিল তখন পুলিশকে দেখা যায়নি। কিন্তু আজ যেভাবে পুলিশ শান্তিপূর্ণ মিছিলে লাঠিচার্জ করলো তার নিন্দা করার ভাষা নেই।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন