অভিষেক-বৈঠকের অপেক্ষা না করেই গৃহীত কল্যাণের ইস্তফা! নেপথ্যে মহুয়া? কাকলি-শতাব্দী নিয়োগে কী বার্তা?

People's Reporter: মঙ্গলবার কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইস্তফা গ্রহণ করে তাঁর জায়গায় তৃণমূল নিয়োগ করল কাকলি ঘোষ দস্তিদারকে। পাশাপাশি, লোকসভায় দলের উপ দলনেতা নিযুক্ত করা হয়েছে শতাব্দী রায়কে।
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মহুয়া মৈত্র
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মহুয়া মৈত্রছবি - সংগৃহীত
Published on

সোমবার দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকের পরই লোকসভার মুখ্য সচেতক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু জানা গিয়েছিল, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তাঁকে দায়িত্ব সামলাতে বলেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তার অনেক আগেই মঙ্গলবার কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইস্তফা গ্রহণ করে মুখ্য সচেতক পদে কাকলি ঘোষ দস্তিদারকে নিয়োগ করল তৃণমূল। পাশাপাশি, লোকসভায় দলের উপ দলনেতা নিযুক্ত করা হয়েছে শতাব্দী রায়কে। দলের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, কল্যাণের ইস্তফা পত্র গ্রহণ করে ওই পদে তাঁর অবদানের জন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন দলনেত্রী মমতা।

এরপর থেকেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, যেখানে অভিষেক কল্যাণের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন, সেখানে এত দ্রুত কেন তাঁর ইস্তফা পত্র গৃহীত হল? এছাড়া, ওই পদে কেন কাকলিকে নিয়োগ করা হল? শতাব্দীকে উপ দলনেতা নিয়োগ করে কল্যাণকে কী বার্তা দিতে চাইছে শীর্ষ নেতৃত্ব? এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর হিসেবে যে সমস্ত তথ্য সামনে আসছে, তার মূলেই রয়েছেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্র। পাশাপাশি, দলের মহিলা সাংসদদের একাংশের কল্যাণের ‘ব্যবহার’ সংক্রান্ত অভিযোগ। মহুয়া ছাড়াও এর আগে মহিলা সাংসদরা দলের শীর্ষনেতৃত্বকে কল্যাণের ‘ভাষা প্রয়োগ’ এবং প্রকাশ্যে ‘অপশব্দ ব্যবহার’ নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলেন বলে জানা গেছে। এমনকি সোমবার ভার্চুয়াল বৈঠকে সরাসরি দলনেত্রীকে 'অসত্য' বলেছেন তিনি।

যদিও এই ঘটনার পরেও কল্যাণের সঙ্গে সামনা-সামনি বৈঠক করতে চেয়েছিলেন অভিষেক। কিন্তু মঙ্গলবার সকালে কল্যাণের সমাজ মাধ্যমের পোস্ট, সেই পথও বন্ধ করে দিল। মঙ্গলবার সকালে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে একটি ভিডিও পোস্ট করেন কল্যাণ। যেটা ২০২৩ সালের। যে সময় লোকসভার প্রশ্ন-ঘুষকাণ্ডে মহুয়াকে সংসদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ‘এথিক্স কমিটি’ কেন মহুয়ার বক্তব্য না-শুনেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন কল্যাণ। পাশে বসে সম্মতিসূচক ঘাড় নাড়ছেন মহুয়া।

ভিডিও পোস্ট করে কল্যাণ লেখেন, “আজ উনি আমায় নারীবিদ্বেষী বলে ওঁকে সমর্থন করার প্রতিদান দিলেন। যাঁর ন্যূনতম কৃতজ্ঞতাবোধ নেই, তাঁকে সমর্থন করার জন্য আমি দেশের কাছে ক্ষমা চাইছি"। তাৎপর্যপূর্ণভাবে ভিডিওতে বিজেপিকে ট্যাগ করেছেন তিনি।

জানা যায়, এরপরেই কল্যাণের ইস্তফা পত্র গ্রহণ করা হয়। কল্যাণের জায়গায় লোকসভার মুখ্য সচেতক হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে বারাসাতের সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারকে। পাশাপাশি, উপ দলনেতা নিযুক্ত করা হয়েছে শতাব্দী রায়কে। উল্লেখ্য, সোমবারেই প্রথম মমতা লোকসভার সাংসদদের মধ্যে ‘সমন্বয়ের অভাব’ নিয়ে প্রকাশ্য বৈঠকে অনুযোগ প্রকাশ করেছিলেন।

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in