

আগামী বছর রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন। কিন্তু তার আগেই বৃহস্পতিবার, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য নির্বাচন কমিশনের নির্বাচন সংক্রান্ত যে কোনও বিজ্ঞপ্তির উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করল কলকাতা হাইকোর্ট। আগামী ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত আদালতের নির্দেশ ছাড়া পঞ্চায়েত ভোট সংক্রান্ত কোনও ধরনের বিজ্ঞপ্তি জারি করতে পারবে না রাজ্য নির্বাচন কমিশন।
উচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষী ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ এই রায় দিয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় কেন্দ্রীয় সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েনের দাবিতে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী আদালতে একটি একটি জনস্বার্থ মামলা (পিআইএল) দায়ের করেন। বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানি ছিল। শুনানি শেষে এই নির্দেশ দেয় আদালত।
গত ১৩ ডিসেম্বর উচ্চ আদালতে এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল। আদালত যাতে নির্বাচন সংক্রান্ত কোনও বিষয়ে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ না জারি করে, সেই মর্মে আবেদন জানান পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কৌঁসুলি। সেদিন শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় শুনানিতে অনুপস্থিত ছিলেন শুভেন্দুর আইনজীবী। তাই, শুনানিও অনিশ্চিত ছিল।
আদালত সূত্রের খবর, আগামী ৯ জানুয়ারীর মধ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনে নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে আদালতে হলফনামা পেশ করতে হবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে। এরপর পৃথক একটি হলফনামা জমা দিতে হবে মামলাকারী শুভেন্দু অধিকারীকে। দু'পক্ষের হলফনামা জমা পড়ার পর শুনানি হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতিরা।
প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন হতে পারে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারী বা মার্চ মাসে। তা না হলেও এপ্রিল বা মে মাসের মধ্যেই নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করা হতে পারে বলেই জানা গিয়েছিল।
তবে বিরোধীদের অভিযোগ, আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় রাজ্যে সন্ত্রাসের বাতাবরণ তৈরি করবে তৃণমূল। বিরোধীদের প্রার্থী দিতে দেবে না, ভোটারদের ভয় দেখাবে, সাধারণ মানুষের মনে হিংসা ছড়াবে। সম্প্রতি, বেশ কয়েকটি জনসভায় বক্তব্য রাখার সময় এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী।
বিরোধী দলনেতার দাবি, ২০১৩ এবং ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটের সময় সারা রাজ্যে সন্ত্রাসের আবহ তৈরি করেছিল তৃণমূল। তাই সুষ্ঠু পঞ্চায়েত ভোটের স্বার্থে প্রকাশ্য সভায় পুলিশের বদলে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে নির্বাচন করার দাবি তোলেন শুভেন্দু। এরপরই পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনর দাবিতে হাইকোর্টে মামলা করেন তিনি।
যদিও পঞ্চায়েত নির্বাচনের তত্ত্বাবধান ও পরিচালনাকারী কর্তৃপক্ষ রাজ্য নির্বাচন কমিশন সাধারণত ভোটগ্রহণ এবং গণনার দিনগুলিতে নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য রাজ্য পুলিশ বাহিনীর উপর নির্ভর করে।
তবে, ব্যতিক্রম ছিল ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন। সেই সময় রাজ্য নির্বাচন কমিশনার মীরা পান্ডে, এলাকাভিত্তিক কেন্দ্রীয় সশস্ত্র বাহিনীর মোতায়েন নিশ্চিত করেছিলেন এবং সেই কারণে সরকারের সাথে একাধিক আইনি লড়াইয়ে জড়াতে হয়েছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন