TET Scam: 'কলঙ্কমুক্ত হলাম' - ডিভিশন বেঞ্চে ৩২ হাজার চাকরি বহাল থাকতেই উচ্ছ্বাস প্রাথমিক শিক্ষকদের

People's Reporter: বুধবার ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের দিকে নজর ছিল সকলের। ডিভিশন বেঞ্চ সকলের চাকরি বহাল রাখল।
৩২ হাজারের তালিকায় থাকা শিক্ষকরা
৩২ হাজারের তালিকায় থাকা শিক্ষকরাছবি - সংগৃহীত
Published on

প্রাথমিকে ৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি বহাল রাখল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। এই রায়ের পরই উচ্ছ্বাস দেখা গেল তালিকায় নাম থাকা প্রাথমিক শিক্ষকদের মধ্যে। সকলকে অভিনন্দন জানালেন পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এই রায়ে খুশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।

বুধবার ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের দিকে নজর ছিল সকলের। ডিভিশন বেঞ্চ সকলের চাকরি বহাল রাখল। এরপরই রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এক্স মাধ্যমে জানান, "আজকে মহামান্য হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ কে অভিনন্দন জানাই। হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের রায় বাতিল হয়েছে। ৩২,০০০ প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি সম্পূর্ণ সুরক্ষিত রইল। শিক্ষকদেরও সতত শুভেচ্ছা। সত্যের জয় হল।"

মালদহ থেকে এই রায় নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলে, ‘‘কথায় কথায় কোর্টে গিয়ে চাকরি খেয়ে নেওয়া, এটা তো ঠিক নয়। চাকরি তো দেওয়া দরকার, খেয়ে নেওয়া নয়। বিচার বিচারের মতো চলবে। বিচারকে আমরা শ্রদ্ধা করি। আমি সবচেয়ে খুশি যে, আমার চাকরিরত ভাইবোনেদের চাকরি থাকল।’’

রায়দানের পর উচ্ছ্বাস দেখা গেল তালিকায় নাম থাকা প্রাথমিক শিক্ষকদের মধ্যে। ভাঙড়ের চালতাবেড়িয়া স্কুলের শিক্ষক সুমন মিত্র বলেন, "আজকের রায় বুঝিয়ে দিল আমরা কোনো দুর্নীতির সাথে যুক্ত নই। আমরা খুব খুশি। দীর্ঘ দিনের লড়াই সফল হল। কলঙ্ক মুক্ত হলাম। আমরা রাজনীতির সাথে যুক্ত নই। সাধারণ শিক্ষক।"

আর এক শিক্ষক বলেন, "সিবিআই যে লিস্ট দিয়েছে তা ৩২ হাজার শিক্ষকের বাইরে। আমরা বিনা কারণে শাস্তি পেয়েছি। যার কোনও মানে হয় না। বিচারব্যবস্থার উপর আমাদের ভরসা ছিল। আমাদের আনন্দের কোনও ভাষা নেই আজকে।"

৩২ হাজারের মধ্যে থাকা আরেক শিক্ষক জানান, এই রায় ঐতিহাসিক রায়। সত্যের জয় হয়েছে। সিঙ্গেল বেঞ্চে আমাদের পার্টি না করেই চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিল। আমরা প্রথম থেকে জানতাম আমাদের জয় হবেই। সেটাই হয়েছে। ২০১৬ সাল থেকে চাকরি করার পর যদি সেটা বাতিল হয় তাহলে জীবনে বেঁচে থাকা অসম্ভব হয়ে যেত।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে টেট পরীক্ষা হয়। উত্তীর্ণ হন প্রায় এক লক্ষ ২৫ হাজার প্রার্থী। নিয়োগ শুরু হয় ২০১৬ সালে। চাকরি পান ৪২ হাজারের বেশি চাকরিপ্রার্থী। পরে অভিযোগ ওঠে ৩২ হাজার চাকরিপ্রার্থীকে অবৈধভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। সঠিক নিয়মে ইন্টারভিউ, 'অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট' না নিয়েই নিয়োগ করা হয়েছিল তাঁদের। ২০২৩ সালের মে মাসে ওই ৩২ হাজার চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। নির্দেশ দেন তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলি।

সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় রাজ্য এবং প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। ডিভিশন বেঞ্চ সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশ বহাল রাখলেও তার সময়সীমা বাড়িয়েছিল। বলা চলে অন্তর্বতী স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। পাশাপাশি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে নয়া নিয়োগেরও নির্দেশ দেয়। ডিভিশন বেঞ্চের রায়কেও চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যায় পর্ষদ এবং রাজ্য। দেশের শীর্ষ আদালত কলকাতা হাইকোর্টেই মামলা ফেরত পাঠায়। গত ১২ নভেম্বর কলকাতা হাইকোর্টে এই মামলার শুনানি শেষ হয়।

৩২ হাজারের তালিকায় থাকা শিক্ষকরা
১০ ডিসেম্বরের মধ্যে ২০২৫ সালের নিয়োগপ্রক্রিয়ার সমস্ত OMR প্রকাশ করতে হবে, SSC-কে নির্দেশ হাইকোর্টের
৩২ হাজারের তালিকায় থাকা শিক্ষকরা
TET Scam: খারিজ প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলির রায়, প্রাথমিকে ৩২ হাজার চাকরি বহাল ডিভিশন বেঞ্চে!

SUPPORT PEOPLE'S REPORTER

ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in