RG Kar Case: 'এক্তিয়ারের বাইরে কথা বলছেন' - আরজি করের নির্যাতিতার পরিবারকে আক্রমণ ফিরহাদের!

People's Reporter: নির্যাতিতার বাবা-মায়ের বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রিত্বের অধিকার হারিয়েছেন! রায়ের প্রতিলিপিটা অবিলম্বে পড়ে, বুঝে, গোটা ঘটনার দায় নিয়ে পদত্যাগ করা উচিত ওঁর”।
নির্যাতিতার পরিবারকে আক্রমণ ফিরহাদের
নির্যাতিতার পরিবারকে আক্রমণ ফিরহাদেরগ্রাফিক্স - সুমিত্রা নন্দন
Published on

আরজি কর মামলার রায় ও সাজা ঘোষণা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে গোটা ঘটনার দায় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের দাবি করেছেন নির্যাতিতার বাবা-মা। এই মন্তব্য নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। ফিরহাদ হাকিমের দাবি, নির্যাতিতার বাবা-মায়ের এমন কথা বলা এক্তিয়ারের বাইরে। অন্যদিকে, তার পাল্টা রাজনীতির উর্ধ্বে উঠে পশ্চিমবঙ্গের সব মানুষকে বাবা-মায়ের পাশে দাঁড়ানোর আর্জি জানিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী।

অভয়া মঞ্চের ডাকে শনিবার সোদপুরে ‘দ্রোহের প্রজাতন্ত্র’ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছিলেন নির্যাতিতার বাবা-মা। সেই মঞ্চ থেকে চিকিৎসক-কন্যার খুন ও ধর্ষণের ঘটনা এবং সেটা ধামাচাপা দিতে পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকার দিকে আঙুল তুলে মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি চেয়েছেন তাঁরা।

নির্যাতিতার বাবা-মায়ের বক্তব্য, ‘‘আমাদের মুখ্যমন্ত্রী যিনি, তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রী, পুলিশমন্ত্রীও। তাই এখনও একই কথা বলব। আমরা কোনও চক্রান্তের ফাঁদে পা দিইনি। শিয়ালদহ আদালতের বিচারক যে রায় দিয়েছেন, তা পড়ে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি যে, মুখ্যমন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রিত্বের অধিকার হারিয়েছেন! রায়ের প্রতিলিপিটা অবিলম্বে পড়ে, বুঝে, গোটা ঘটনার দায় নিয়ে পদত্যাগ করা উচিত ওঁর”। পাশাপাশি, সিবিআইয়ে ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।

নির্যাতিতার বাবা-মায়ের এহেন দাবিতে সরব হয়েছেন কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। নির্যাতিতার পরিবারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘‘আমরা অত্যন্ত সহানুভূতিশীল ওঁদের প্রতি। কিন্তু পুত্রীশোকে এমন কিছু বলা উচিত নয়, যা ওঁদের এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে না! এখন যা হয়ে গিয়েছে, যাঁদের পাল্লায় পড়েছেন, এখন রাজনীতি করছেন ওঁরা। এটা ঠিক নয়। এতে মানুষের যে সহানুভূতি রয়েছে আপনার উপরে, তা নষ্ট হয়ে যাবে!”

ফিরহাদের আরও বক্তব্য, “মুখ্যমন্ত্রী ওঁদের দয়ায় বা বামপন্থী দলগুলির দয়ায় পদে বসে নেই! বাংলার মানুষ চেয়েছেন বলেই চেয়ারে বসে আছেন মুখ্যমন্ত্রী। কারও দয়ায় বসে নেই! মানুষের সমর্থন নিয়ে বসে রয়েছেন”।

তবে এই বিতর্কের মধ্যে নির্যাতিতার বাবা-মায়ের পাশে দাঁড়িয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, ‘‘আমি সর্বতো ভাবে বাবা-মায়ের পাশে আছি। পশ্চিমবঙ্গের সব মানুষের কাছেও আবেদন করব, রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে ওঁদের পাশে দাঁড়ান”।

শুভেন্দুর সংযোজন, ‘‘ওঁদের সঙ্গে অনেক বার কথা বলেছি। ঘটনার তদন্ত এবং মামলার একেবারে ভিতরে ঢুকে ওঁরা গোটা বিষয়ের খোঁজ রেখেছেন। নিজেরা যা বুঝতে পারছেন, সেটাই বলছেন। প্রথমে মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া আর্থিক সাহায্য এবং তার পরে আদালতে দাঁড়িয়ে ক্ষতিপূরণ প্রত্যাখ্যান করেছেন। এর জন্য সাহস লাগে! সেই সাহস নিয়েই ওঁরা লড়াই করছেন, তার পাশে আছি”।

অন্যদিকে, এই নিয়ে সিপিআইএম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর উপরেই তো ওঁরা প্রথমে ভরসা রেখেছিলেন। তার পরে বুঝতে পেরেছেন, মুখ্যমন্ত্রী সন্দীপ ঘোষদের পাশে থেকেছেন। স্বাস্থ্য ও পুলিশ-প্রশাসন তথ্য-প্রমাণ লোপাট করেছে। তাই এখন বাবা-মা এই কথা বলছেন। আর মেয়র প্রশ্ন তুলছেন এক্তিয়ার নিয়ে! কলকাতায় যে ভাবে একের পর এক বাড়ি হেলে পড়ছে, মেয়রেরই তো পদে থাকার এক্তিয়ার নেই!’’ 

প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র সৌম্য আইচ রায়েরও মন্তব্য, ‘‘পদত্যাগের দাবি যে কেউই করতে পারেন। তার জন্য সন্তানহারা বাবা-মাকে যে ভাবে আক্রমণ করছেন রাজ্যের নেতা-মন্ত্রীরা, তার নিন্দার ভাষা নেই। বিচার দিতে পারেননি, পুলিশ ধামাচাপা দিয়েছে। এর পরেও বাবা-মায়ের প্রতি এমন কথা কি মুখ্যমন্ত্রী অনুমোদন করেন?’’

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in