
বুধবার নবান্নে ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডে পরোক্ষ ভাবে বিজেপিকে কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আসলে প্রতারক দেবাঞ্জন দেবের সঙ্গে একাধিক নেতা মন্ত্রীর সঙ্গে ছবি প্রকাশ্যে আসায় দৃশ্যতই অস্বস্তিতে শাসক দল। সেই ছবিকে হাতিয়ার করে রাজ্য সরকারকে তুলোধোনা করেছে বিরোধীরা। তাই চাপ কাটাতে এবার পাল্টা ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুললেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন মুখ্যমন্ত্রী ভুয়ো ভ্যাকসিন কান্ড প্রসঙ্গে বলেন, 'হিংসার ঘটনা প্রমাণ করতে ভুয়ো ছবি ভাইরাল করা হচ্ছে। কেউ কেউ সেই ছবি ইচ্ছে করে ভাইরাল করছে। এই জাল টিকা কাণ্ডের পিছনেও যে বিজেপির হাত নেই, কে বলতে পারে!'
কসবায় ভুয়ো ভ্যাকসিন কান্ড সামনে আসতেই যে ভাবে একের পর এক তৃণমূল হেভিওয়েট-দের সঙ্গে অভিযুক্তের ছবি প্রকাশ্যে এসেছে তা রীতিমত চাপে ফেলেছে ঘাসফুল শিবিরকে। তাই এদিন মন্ত্রীদের সঙ্গে প্রতারক দেবাঞ্জনের ছবি প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ' আমাদের আশপাশে বহু মানুষ ঘুরে বেড়ায় প্রতিদিন। কে বা কারা আশপাশে আসছে, সবসময় তাঁদের চেনা সম্ভব নয়। তাই ছবি দিয়ে বিচার করা সম্ভব নয়।' ছবি বিতর্কে রাশ টানতে মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, 'একবার বিমানে করে যাচ্ছিলাম। তিন নম্বর আসনে বসেছিলাম। দেখলাম ২০ নম্বর সিট থেকে জুম করে আমার ছবি তুলেছে। ফটোশপ করা যায় ছবি। যাঁরা প্রতারণা করতে চায় তাঁরা ছবি তুলে রাখে।' তাঁর কথায়, 'ভুয়ো টিকা কাণ্ড একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। সরকারের কেউ এর সঙ্গে যুক্ত নয়।' পাশাপাশি পুলিশকেও তৎপরতার সঙ্গে কড়া পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডের পর্দা ফাঁস হওয়ার পর থেকেই সব থেকে বেশি চাপে পড়েছেন ফিরহাদ হাকিম। কারণ তিনি বর্তমানে পুর প্রশাসক মন্ডলীর মুখ্য প্রশাসক। তাই তাঁর সময়কালে কিভাবে এই ঘটনা ঘটে গেলো তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। ফিরহাদ হাকিমকে সমর্থন করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'রাস্তায় বের হলে অনেকে ডাকেন। না শুনে চলে গেলে তো আবার বলবে মেয়র কথা শুনলেন না। কথা বলার সময় কেউ ছবি তুলে রেখেছে ফিরহাদের সঙ্গে।' মুখ্যমন্ত্রীর এদিন বিজেপিকে নিশানা করে অভিযোগ করেন, 'শুধু বাংলা নয়। একাধিক রাজ্যে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। গুজরাটে তো বিজেপির দলীয় কার্যালয় থেকে টিকা দেওয়া হয়েছে। বিজেপির সঙ্গেও অনেকের ছবি রয়েছে। সেই ছবিগুলো কোথায় গেল?'
পাশাপাশি ফের একবার রাজ্যের ভ্যাকসিন সংকট নিয়ে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, 'বাংলার থেকে ছোট রাজ্য বেশি টিকা পাচ্ছে। এ রাজ্য অনেক কম টিকা পাচ্ছে। তবু দেশের মধ্যে গণটিকাকরণে এক নম্বর এই রাজ্য। আমরা তিন কোটি টিকা চেয়েছিলাম, পাইনি।'
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন