উৎসবের দিনেও কাতর আর্তনাদ চাকরিপ্রার্থীদের! সহমর্মিতা জানাতে ধর্নামঞ্চে মহম্মদ সেলিম

সেলিম ছাড়াও ধর্নামঞ্চে উপস্থিত ছিলেন ইন্দ্রজিৎ ঘোষ, কলতান দাশগুপ্ত, বিকাশ ঝাঁ সহ অন্যান্য সিপিআই(এম) নেতৃত্ব।
চাকরিপ্রার্থীদের ধর্না মঞ্চে সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক সেলিম
চাকরিপ্রার্থীদের ধর্না মঞ্চে সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক সেলিমছবি সৌজন্যে ফেসবুক

উৎসব যায়, উৎসব আসে। দুর্গাপুজো, ঈদ হোক বা বড়দিন, ঘরেতে তীব্র অভাব নিয়েই পথে দিন কাটছে বঞ্চিত যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের। উৎসবের লেশ মাত্র নেই, বছরের অন্যান্য দিনের মত ২৫ ডিসেম্বরও তাঁদের কাটল রাজপথেই। আন্দোলনকারীদের সহমর্মিতা জানাতে গতকাল ধর্না মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।

উৎসবমুখর পার্কস্ট্রিট আর ধর্মতলার চোখ ধাঁধানো আলোর মাঝে চাকরিপ্রার্থীরা ধর্না দিচ্ছেন। বাম নেতার কাছে নিজেদের যন্ত্রণার কথা প্রকাশ কলেন তাঁরা। চাকরিপ্রার্থীরা বলেন, 'কী দোষ করেছিলাম আমরা? আমরাও তো পারতাম বাকিদের মতো আজ উৎসবে শামিল হতে। আমাদের বাঁচতে দেওয়া হচ্ছে না। সরকার, প্রশাসন, শাসক দলের দুর্নীতি আমাদের বাঁচতে দিচ্ছে না।'

রবিবার, কলকাতার মাতঙ্গিনী মূর্তির পাদদেশে মোট ৫টি ধর্নামঞ্চে বিক্ষোভ দেখায় ২০১২ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীরা। কারোর চোখের জলের সাথে মিশেছে চাকরির দাবিতে স্লোগান, আবার কারোর কণ্ঠে শোনা গেছে আরও বেশি শক্তিশালী হয়ে আগামীর লড়াইকে জোরদার করার প্রয়াস। কোনও শিবিরে চাকরিপ্রার্থী মায়ের সাথে রয়েছে একরত্তি শিশু। আবার কোনও শিবিরে গরীব বেকার ছেলেটির পাশে ঠায় বসে রয়েছেন অসহায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধা।

ধর্নামঞ্চ থেকে সেলিম বলেন, আন্দোলন আরও বৃহত্তর হবে। তৃণমূলের এই দুর্নীতি আমরা শেষ করবই। তৃণমূলকে আর নিশ্চিন্তে ঘুমাতে দেব না। ওদের সঙ্গী সহ সমস্ত দক্ষিণপন্থী দলগুলির ধান্দাবাজদেরও রুখবো আমরাই। একদিন অবশ্যই চাকরির নিয়োগপত্র নিয়ে 'সান্তাক্লজ' আসবে যোগ্য মেধাবী চাকরিপ্রার্থীদের কাছে। আমরা সকলেই সেই দিনটি অপেক্ষায় রয়েছি।

এদিন অবস্থানমঞ্চের চাকরিপ্রার্থীরা গ্রিটিংস কার্ডে তাঁদের যন্ত্রণার কথা তুলে ধরেন। যেখানে লেখা ছিল - "খেলা-মেলা-বর্ষবরণ হচ্ছে সবই তা-ধিন-ধিন, বেকার ছেলের গলায় দড়ি, চাকরি না হয় মৃত্যু দিন।" সেলিম ছাড়াও রবিবার সেখানে উপস্থিত ছিলেন ইন্দ্রজিৎ ঘোষ, কলতান দাশগুপ্ত সহ অন্যান্য সিপিআই(এম) নেতৃত্ব।

চাকরিপ্রার্থীদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে সেলিম জানান, এখানে উপস্থিত ছেলেমেয়েরা পরীক্ষা দিয়ে, ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে পাশ করে স্বাভাবিক নিয়মে একটা চাকরি পেতে চান। অথচ মুখ্যমন্ত্রী থেকে শিক্ষামন্ত্রী ভাঁওতাবাজি এবং মিথ্যাচারের প্রতীক হয়ে গেছেন। সরকারিভাবে সরকারি ব্যবস্থাপনা এবং নিয়ম মেনে পরীক্ষা হয়। কেন যোগ্যদের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না?

তিনি আরও বলেন, এত দুর্নীতি সত্ত্বেও সরকারের টনক নড়ছে না! এমন লোকজনকে মাথায় বসানো হয়েছে যারা বিপুল পরিমাণ টাকার বিনিময়ে চাকরি বিক্রি করে। টাকা নিয়ে সাদা খাতা জমা দিয়েও নিয়োগ হয়েছে। কাকদ্বীপ থেকে কোচবিহার সর্বত্র মমতা ব্যানার্জীর মণিমুক্ত ছড়ানো রয়েছে। এরপর তো স্কুলগুলো শিক্ষক শূন্য হয়ে যাবে। সুতরাং, এই লড়াই চাকরিপ্রার্থীদের একার নয়। দুর্নীতির বিরুদ্ধে এই লড়াই সবার।

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in