JUTA: রাজ্য জয়েন্টে ফল প্রকাশে দেরী! অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে খোলা চিঠি উদ্বিগ্ন জুটা'র

People's Reporter: জুটা প্রস্তাব দেয়, জয়েন্টের ফলাফল বেরোনোর পরবর্তী ভর্তি প্রক্রিয়া পরিচালনার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়ার। কিন্তু রাজ্য জুটার এই প্রস্তাব খারিজ করেছে।
JUTA: রাজ্য জয়েন্টে ফল প্রকাশে দেরী! অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে খোলা চিঠি উদ্বিগ্ন জুটা'র
গ্রাফিক্স - সুমিত্রা নন্দন
Published on

ওবিসি জটে রাজ্য জুড়ে ইঞ্জিনিয়ারিং স্নাতকে ভর্তি নিয়ে অনিশ্চিয়তার কারণে থমকে আছে রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্সের ফল প্রকাশ। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে, কবে শুরু হবে ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে ভর্তি প্রক্রিয়া। এই আবহে অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে খোলা চিঠি লিখল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠন 'জুটা' (JUTA)।

গত বছর মে মাসে কলকাতা হাইকোর্টের দেওয়া এক রায়ের প্রেক্ষিতে বাতিল হয়ে যায় ২০১০ সালের পর রাজ্যের দেওয়া সমস্ত ওবিসি শংসাপত্র। ২০১০ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে রাজ্য সরকার ৭৭টি সম্প্রদায়কে ওবিসি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে, যার মধ্যে ৭৫টিই মুসলিম ধর্মাবলম্বী। যা নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হলে, ২০১০ সালের পরে দেওয়া সমস্ত শংসাপত্রকে অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্ট। যে নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য। শীর্ষ আদালতে ঝুলে রয়েছে এই মামলা।

ওবিসি জটের ফলে আটকে রয়েছে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তির পরীক্ষার ফলাফল। যার ফলে অন্যান্য সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতোই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগেরও ভর্তি প্রক্রিয়া আটকে রয়েছে। কিন্তু বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলি ভর্তির কাজ প্রায় শেষ করে ফেলেছে।

পশ্চিমবঙ্গ জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের ফলের অপেক্ষায় কার্যত হাপিত্যেশ করে বসে রয়েছেন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি প্রত্যাশী পড়ুয়া ও তাঁদের অভিভাবকরা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় তাঁদের প্রথম পছন্দের তালিকায়। ফলাফল প্রকাশে বিলম্ব হওয়ায় পড়ুয়াদের পাশাপাশি একইরকম দুশ্চিন্তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরাও। রাজ্যের এই ভূমিকায় একদিকে যেমন ছাত্ররা তুলনামূলক কম খরচে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সুযোগ হারাচ্ছে, তেমনই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো রাজ্যের উৎকৃষ্টমানের প্রতিষ্ঠানও ভালো পড়ুয়াদের হারাচ্ছে।

এই নিয়ে জুটার সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায়ের প্রশ্ন, ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে আদালতের নির্দেশের পর রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। যার ফলে এর আগে রাজ্যজুড়ে সাধারণ ডিগ্রি কলেজগুলিতে ভর্তি প্রক্রিয়া একইভাবে বিলম্বিত হয়েছে। কোনরকমে জট কাটিয়ে জেনারেল ডিগ্রি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হলেও জট কাটেনি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ক্ষেত্রে। ভর্তিতে দেরি হলে তো ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদানের সময়ও কমে যাচ্ছে। এর ব্যর্থতা কার?

চিঠিতে বলা হয়েছে, নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশঙ্কিত পড়ুয়ারা। যাদের সামর্থ্য আছে তারা বাধ্য হয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হচ্ছে। অনেকে ভিনরাজ্যের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাড়ি জমাচ্ছে। এতে তারা অল্প খরচে সরকারি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনার সুযোগ হারাচ্ছে, অন্যদিকে সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও ভালো মানের ছাত্রদের হারাচ্ছে।

এই পরিস্থিতিতে জুটার তরফ থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়, জয়েন্টের ফলাফল বেরোনোর পরবর্তী ভর্তি প্রক্রিয়া পরিচালনার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়ার। কিন্তু রাজ্যের শিক্ষা দপ্তর জুটার এই প্রস্তাব খারিজ করেছে। এরপরেই সরকারের উদাসীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মঙ্গলবার অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে খোলা চিঠি দিয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in