
গত সপ্তাহে অক্সফোর্ডের কেলগ কলেজে বক্তৃতা দিতে গিয়ে সিপিআইএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআই-এর ইউকে শাখার প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় চলতে থাকে অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ। এই আবহে কেন চুপ দলের জনপ্রতিনিধি-কর্মকর্তারা, তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন তৃণমূলের আইটি সেলের প্রধান দেবাংশু ভট্টাচার্য। এর আগে দলের যুব সদস্যদের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
তৃণমূলের রাজ্য আইটি সেলের ইনচার্জ দেবাংশুর কথায়, "এই নেত্রীর জন্যেই আজ আমাকে, আপনাকে লোক চিনেছে, জিতিয়েছে। দল আপনাকে কঠিন সময়ে দেখেছে, এগিয়ে দিয়েছে। আপনারা কেন যুদ্ধের সময় চুপ থাকেন? আপনারা কেন লড়াইয়ের সময় পড়ে পড়ে ঘুমোন? অসময়ে কোথায় হারিয়ে যান? এলাকায় একটা মিছিল বার করেন না কেন? সোশ্যাল মিডিয়ায় একটা পোষ্ট করেন না কেন?"
দেবাংশুর আরও প্রশ্ন, "পদের দাবি জানানোর সময় তো গলার জোরে গগন ভেদ করার জোগাড় হয়, কিন্তু যুদ্ধের সময়? মৌনব্রত? সব ইস্যুতে দল কিংবা মন্ত্রীরা বলে দেবে, তারপর নামতে হবে? প্রতিবার উপর থেকে আসা কর্মসূচির অপেক্ষা করতে হবে? নেত্রীকে অসম্মান করলে গায়ে জ্বালা ধরে না? তখনও নির্দেশ আসার অপেক্ষা করতে হয়?"
দেবাংশু লেখেন, "পার্টি অফিসগুলোতে শতশত চামচাদের নিয়ে বসে থাকেন, যাদেরকে দিয়ে সেলফি কিম্বা আপনার ড্রেন উদ্বোধনের ছবি পোষ্ট করান, এসব ইস্যুতে তাদের দিয়ে একটা করে পোষ্ট তো করাতে পারেন অন্তত! পারেন না? গা বাঁচিয়েই যদি চলবেন তবে পঞ্চায়েতে, পুরসভায়, বিধানসভায়, লোকসভায় দাঁড়িয়েছিলেন কেন?"
এর আগে কেলগ কাণ্ড নিয়ে দলের যুব নেতাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, "ওদের আচরণে আমি খুশী নয়। দিদি কখন বলবে, বক্সী (সুব্রত বক্সী) কখন বলবে তখন মুভমেন্ট করবে, তা না হলে চুপ করে বসে থাকবে? আমরা যেভাবে আন্দোলনের মাধ্যমে বড় হয়েছি, আজকে আর সেটা দেখতে পাচ্ছি না।"
যদিও টিএমসিপির রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য-এর দাবি ছিল, "আমরা রাজ্য জুড়ে কলেজে কর্মসূচি করেছি। ওঁর তো ছাত্র রাজনীতির বয়স নেই। নাহলে বলা যেত উনি ছাত্র যুব সভাপতি হতে চাইছেন"।
অন্যদিকে, কল্যাণের মন্তব্যকে সমর্থন করেছিলেন কুণাল ঘোষ। তাঁর কথায়, "কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর অভিজ্ঞতা থেকে মন্তব্য করেছেন, আমার ধৃষ্টতা নেই যে তাঁর বক্তব্যের উপরে কোনও মন্তব্য করব। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর পর্যবেক্ষণ থেকে বলেছেন, সেটাকে অস্বীকার করা যায় না। যারা মমতাকে ভালবাসে তারা করবে, যারা করেনি কেন করেনি বলতে পারব না"।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন