

আর রাজ্যপাল নন, এবার থেকে রাজ্যের সমস্ত সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদে থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার এই সংক্রান্ত প্রস্তাব পাশ হলো মন্ত্রিসভায়। খুব শীঘ্রই এই নিয়ে বিধানসভায় বিল আনবে সরকার। তৃণমূল শাসিত রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছেন বাম সহ অন্যান্য বিরোধীরা।
রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, "মন্ত্রিসভায় সর্বসম্মতিক্রমে একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদে রাজ্যপালের পরিবর্তে মুখ্যমন্ত্রীকে বসানো হবে। শীঘ্রই বিধানসভায় এই নিয়ে বিল আনবে সরকার।"
পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সাথে রাজ্য সরকারের দ্বন্দ্ব নতুন কিছু নয়। একাধিক বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্যপাল প্রকাশ্যে একে অপরের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। উপাচার্য নিয়োগ নিয়েও সংঘাত বেধেছিল। তখনই রাজ্যের তরফ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদ থেকে রাজ্যপালকে সরানোর ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল। সেই লক্ষ্য পূরণে একধাপ এগিয়ে গেলো রাজ্য।
রাজ্যের এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন বিরোধীরা। সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, শিক্ষা দফতরকে কলুষিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এটা বাংলার দুর্ভাগ্য। আসলে সবই যখন উনি নিয়ন্ত্রণ করছেন, উপাচার্যরা বা বাদ থাকবেন কেনো? তাঁদেরও নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছেন।
বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের কথায় এটা নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত। তিনি বলেন, বর্তমান শাসকদল পশ্চিমবঙ্গকে একটি স্বাধীন অঙ্গরাজ্য ভাবতে শুরু করেছে। তাই সাংবিধানিক প্রধানকে মানছে না। একাধিক দুর্নীতির অভিযোগে বিদ্ধ এই সরকার। সেদিক থেকে মানুষের দৃষ্টি ঘোরানোর জন্য নতুন এই পদক্ষেপ।
বিরোধীদের পাশাপাশি অধ্যাপক-শিক্ষাবিদরাও সরকারের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন। অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্রের প্রশ্ন রাজ্য মন্ত্রিসভা কি এরকম সিদ্ধান্ত নিতে পারেন? পিপলস্ রিপোর্টারকে তিনি বলেছেন, "প্রাথমিকভাবে এই সিদ্ধান্তটা শুনলে হাস্যাস্পদ বা শিক্ষাক্ষেত্রে অশনি সংকেত বলে মনে হতে পারে। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেখানে মুখ্যমন্ত্রী সেখানে এই ঘটনা স্বাভাবিক। যিনি সংসদীয় রাজনীতিতে প্রবেশ করেছিলেন ভুয়ো ডক্টরেট ডিগ্রী নিয়ে, নির্বাচক মণ্ডলীকে প্রতারিত করে, যিনি বিধানসভা ভাঙচুর করে গণতন্ত্র নিধন করেছিলেন, তিনি যখন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং তিনি যে এই ধরনের ঘটনা ঘটাবেন সেটাই তো স্বাভাবিক। গত ১১ বছর ধরে এই পরিবেশই তৈরি হয়ে আসছে রাজ্যে। মানুষ অভ্যস্ত হয়ে গেছে এই পরিবেশে। বুদ্ধিজীবীরা এই সিদ্ধান্তকেই বাহবা দেবেন।"
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন