আর জি কর কাণ্ডের তদন্তে পুলিশকে ডেডলাইন বেঁধে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার মৃত চিকিৎসকের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘‘রবিবারের মধ্যে পুলিশ তদন্ত শেষ করতে না পারলে সিবিআইকে তদন্তভার দেওয়া হবে।’’
পাশাপাশি, এই ধর্ষণের ঘটনায় আর জি করের ভিতরের কারোর হাত রয়েছে কিনা, সেটাও পুলিশকে তদন্ত করে দেখার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, ‘‘বাবা মায়ের অভিযোগ, ওদের ভিতরেই কেউ আছে। এই অভিযোগ খতিয়ে দেখতে হবে।’’ এব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন, ‘‘দরকারে ওঁর বন্ধু বান্ধবদের ডেকে কথা বলুন। যিনি ফোন করে সে দিন খবর দিয়েছিলেন, তাঁর সঙ্গেও কথা বলতে হবে। কাউকে ছাড়া হবে না।“
সোমবার উত্তর ২৪ পরগণার সোদপুরে মৃতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে মমতা বলেন, ‘‘কী ভাবে মেরেছে। দ্রুত এর বিচার করতে হবে। আমরা ফাঁসি চাইব। তাই ফাস্ট ট্র্যাক আদালতে বিষয়টি তোলার কথা বলেছি। যাতে দ্রুত বিচার হয়।’’
তিনি বলেন, ‘‘সমাজে এখনও এমন অনেক লোক আছেন, তাঁরা ভুলে গিয়েছেন মেয়েদের গায়ে হাত দেওয়া কত বড় অপরাধ। যে কারণেই ফাঁসির সাজা চাইছি।’’ সঙ্গে জুড়ে দিলেন, ‘‘আমি আশ্চর্য হয়ে যাচ্ছি, কী ভাবে অত্যাচার করে মারা হয়েছে, তা ভেবে। ওখানে নার্সরা ছিলেন, ওদের সিকিউরিটিও ছিলেন। কিন্তু কী ভাবে এই ঘটনা ঘটল, তা এখনও বুঝতে পারছি না।’’
এর পরেই কলকাতা পুলিশকে তদন্তের সময় বেঁধে দেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘‘পুলিশ যত দ্রুত সম্ভব তদন্ত শেষ করুক। আমি চাই যে বা যারা জড়িত, তাদের যত দ্রুত সম্ভব গ্রেফতার করা হোক। ভিতরেও হয়তো অনেকে আছে। রবিবারের মধ্যে পুলিশ তদন্ত শেষ করতে না পারলে তদন্তভার সিবিআইকে দেওয়া হবে।’’
তবে একই সঙ্গে মমতা মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘‘কলকাতা পুলিশ হল বিশ্বের সেরা পুলিশ। আমি সেরা অফিসারকে দায়িত্বও দিয়েছি। সিবিআই অনেক তদন্তভারই নিয়েছিল। তার বিচার হয়নি।’’
এর আগেও আরজি করের মহিলা চিকিৎসকের মৃত্যুকে ‘ন্যক্কারজনক এবং অমানবিক’ বলে মন্তব্য করে আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন মমতা। বলেছিলেন, ‘‘জুনিয়র চিকিৎসকেরা যে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তা সঙ্গত বলেই আমি মনে করি। আমি ওদের দাবির সঙ্গে একমত। আমি আমার প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছি, দোষীদের চিহ্নিত করে তিন থেকে চার দিনের মধ্যে ফাস্টট্র্যাক আদালতে এই মামলা তুলতে এবং প্রয়োজনে ফাঁসির আবেদন জানাতে।’’ মমতা এ-ও বলেছিলেন, তাঁর মনে হচ্ছে তিনি পরিবারের একজনকে হারিয়েছেন। এবং এই অপরাধের কোনও ক্ষমা নেই।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন