চিকিৎসকদের কর্মবিরতির জেরে মৃত ২৯ জনের পরিবারকে দু'লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ, ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর

People's Reporter: চিকিৎসকরা বলেন, রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবার বেহাল দশায় বহু মানুষ প্রতিদিন উপযুক্ত পরিষেবার অভাবে মারা যান। সেই ব্যর্থতা ঢাকতেই রাজ্য সরকার ডাক্তারদের কর্মবিরতিকে কাঠগড়ায় তুলছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছবি মমতা ব্যানার্জির ফেসবুক পেজ ভিডিও থেকে স্ক্রিনশট
Published on

আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে গত একমাস ধরে কর্মবিরতি পালন করছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। রাজ্য সরকারের দাবি, জুনিয়র চিকিৎসকদের এই কর্মবিরতির ফলে রাজ্য জুড়ে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে ২৯ জনের। নিহতদের পরিবার পিছু দু'লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির ফলে স্বাস্থ্য পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে। তার ফলে ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক। মৃতদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে রাজ্য সরকার দু’লক্ষ টাকা আর্থিক সহায়তা ঘোষণা করছে। ২৯ জন মৃতের পরিবারকে ওই টাকা দেওয়া হবে।’’

যদিও রাজ্যের দাবি উড়িয়ে দিয়ে আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, কোনও হাসপাতালেই চিকিৎসা পরিষেবা ব্যাহত হয়নি। সিনিয়র চিকিৎসকেরা পরিষেবা দিচ্ছেন। তাঁরা বাড়তি পরিশ্রম করছেন।

আন্দোলনকারীদের পাল্টা যুক্তি, রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবার বেহাল দশায় এমনিতেই বহু মানুষ প্রতি দিন উপযুক্ত চিকিৎসা পরিষেবার অভাবে মারা যান। সেই ব্যর্থতা ঢাকতেই রাজ্য সরকার ডাক্তারদের কর্মবিরতিকে কাঠগড়ায় তুলছে।

উল্লেখ্য, আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের প্রতিবাদে গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে কর্মবিরতি করছেন সরকারি হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসকরা। মঙ্গলবার দুপুর থেকে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে অবস্থান বিক্ষোভও করছেন তাঁরা। শনিবার সেই অবস্থানের পঞ্চম দিন।

জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতি নিয়ে রাজ্যের অভিযোগ, এরফলে বহু মানুষ বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রী শুক্রবার এই নিয়ে বলেন, "সুপ্রিম কোর্ট জুনিয়র ডাক্তারদের বিষয়ে তাদের মত জানিয়েছে। এই সময় ৭ লক্ষের ওপর মানুষ পরিষেবা পায়নি। ৩৪ দিন হয়ে গেল। ২৯ জন বিনা চিকিৎসায় মারা গেছেন। মনে রাখবেন যে কোনও মৃত্যু মর্মান্তিক। যাদের হার্ট অপারেশান হবে তাঁরা অপেক্ষা করছেন। আর কতজন যে বিনা চিকিৎসায় বাড়িতে মারা গেছেন সেই তথ্য আমরা জোগাড় করার চেষ্টা করছি।"

বৃহস্পতিবার অচলাবস্থান কাটানোর জন্য নবান্নে জুনিয়র চিকিৎসকদের বৈঠকে ডাকেন মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু লাইভ স্ট্রিমিং নিয়ে জটিলতার কারণে ভেস্তে যায় সেই বৈঠক। জুনিয়র চিকিৎসকরা বৈঠক লাইভ করার দাবি জানালেও সরকারের পক্ষ থেকে অনুমতি দেওয়া হয়নি।

নবান্ন সভাঘরে মুখ্যমন্ত্রী দু'ঘন্টা অপেক্ষার পর সাংবাদিক বৈঠক করে জুনিয়র চিকিৎসকদের উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়েছিলেন, "আমরা রেকর্ডিং করবার সিস্টেম করেছিলাম স্বচ্ছতা বজায় রাখবার জন্য। আমরা তিনটে ভিডিও ক্যামেরা রেখেছিলাম। এবং তারা যদি চাইতো আমরা সুপ্রিম কোর্টের মতামত নিয়ে ওদের দিতে পারতাম। সরাসরি সম্প্রচারে আমাদের আপত্তি ছিল না। কিন্তু কেসটা সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। তাই আমরা ওটা করতে পারি না।"

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in