আরজি কর কাণ্ডের বিচারের দাবিতে একাধিকবার 'রাত দখল' কর্মসূচি নিয়ে পথে নেমেছেন বাংলার সাধারণ মানুষ। এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন সমাজের বিশিষ্ট জনরাও। এবার সেই কর্মসূচীতে রাজনৈতিক রঙ লাগালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
সোমবার নবান্নে রাজ্য প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠক করেন মমতা ব্যানার্জি। সেই বৈঠক থেকে আরজি কর কাণ্ড থেকে শুরু করে দুর্গাপুজোর অনুদান, এমনকি জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতি নিয়েও মন্তব্য করেন তিনি।
আগামী মাসে দুর্গাপুজো। কিন্তু বাংলার মানুষ সেই আনন্দ ভুলে বিচারের দাবিতে ক্রমাগত আন্দোলনে নামছেন। সেই আন্দোলনগুলিতে আবার শাসক দলের মদতে হামলারও অভিযোগ উঠছে। গতকাল নৈহাটিতেই এমন ঘটনা ঘটেছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'রাত দখলের নামে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে কেন্দ্রীয় সরকার এবং কিছু বাম দল। এরা ষড়যন্ত্র করে মানুষকে রাস্তায় নামাচ্ছে। বামেরা আমাকে আগে শারীরিক নির্যাতন করেছে আর বিজেপি এখন মানসিক নির্যাতন করছে'।
মুখ্যমন্ত্রী এও বলেন, 'সকলের কাছে অনুরোধ করছি এবার পুজোতে ফিরে আসুন, উৎসবে ফিরে আসুন। আর সিবিআইকে বলবো তাড়াতাড়ি তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দিক। রাস্তা আটকালে সবার অসুবিধা হয়। মাইক বাজালে বয়স্কদের অসুবিধা হয়। নিয়ম আছে রাত ১০টার পর বেশি জোরে মাইক বাজানো যায় না'।
তিনি আরও বলেন, "আমাদের কাছে রিপোর্ট আছে চিকিৎসকদের কর্মবিরতির ফলে অনেকে সাধারণ মানুষ চিকিৎসা পরিষেবা পাচ্ছেন না। আমি তো আন্দোলন করতে মানা করিনি। কিন্তু মানুষকে পরিষেবাটা দিন। আবার শুনছি অনেক চিকিৎসক নাকি বেসরকারি হাসপাতালে পরিষেবা দিচ্ছেন। এগুলো উচিত নয়। আমি খুশি, যাঁরা আন্দোলন করছেন পুলিশ তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। এটা বাংলা বলেই সম্ভব। অন্যান্য জায়গায় আন্দোলনকারীদের মুখ বন্ধ করে দেওয়া হয়।"
পাশাপাশি বামফ্রন্ট সরকারকেও আক্রমণ করেছেন মমতা ব্যানার্জি। তিনি বলেন, আমাদের সরকার বামফ্রন্ট সরকারের মতো নয়। সিঙ্গুর নিয়ে ২৬ দিন কলকাতায় অনশন করেছিলাম। একবারও তাঁরা আমার সাথে কথা বলেননি। যাঁরা আজকে বড় বড় কথা বলছেন তাঁরা স্বাস্থ্য ডিপার্টমেন্টে ঘুঘুর বাসা ঢুকিয়ে দিয়ে গিয়েছিলেন। সেই ঘুঘুর বাসাটা আমরা ভাঙতে পারিনি। তার কারণ লেফট ফ্রন্টের লোক বসে আছে। লেফটিস্ট, সিপিআইএম-র লোক। আমি বলেছিলাম বদলা নয় বদল চাই। তাই আজ পর্যন্ত চাকরিতে হাত দিইনি। কারুর বিরুদ্ধে কোনও কেস করিনি। কিন্তু এটা আমাদের দুর্বলতা ভাববেন না।"
তিনি আরও বলেন, "আগে আলিমুদ্দিন স্ট্রীট থেকে তালিকা আসতো। ডাক্তারবাবুদের থ্রেট করা হতো। শিক্ষক নিয়োগের তালিকা আলিমুদ্দিন স্ট্রিট থেকে আসত। গণশক্তিতে যারা কাজ করে সবার বউ ইন্টারভিউ ছাড়াই চাকরি পেয়েছে। কই আমরা তো আঘাত করিনি।"