'বেশিরভাগ দাবি পূরণ করেছি, অনশন প্রত্যাহার করুন' - ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি পেয়েই ফোন মুখ্যমন্ত্রীর!
শনিবার অনশন মঞ্চে যান মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ এবং স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তী। সেখানে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সাথে অনশনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের ফোনের মাধ্যমে কথা বলান মুখ্যসচিব। ফোনের মধ্যেই অনশন প্রত্যাহারের বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
জুনিয়র চিকিৎসকদের অনশন আজ ১৫ দিনে পড়েছে। এদিন অনশন মঞ্চে গেলেন প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকরা। বেশ কিছুক্ষণ আলোচনা হয় জুনিয়র চিকিৎসকদের সাথে। পরে মুখ্যসচিব মুখ্যমন্ত্রীর সাথে জুনিয়র চিকিৎসকদের ফোনে কথা বলান। ফোনের মাধ্যমে নিজেদের ১০ দফা দাবি জানান জুনিয়র চিকিৎসকরা।
ফোনের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমি চাই অনশনকারীরা অনশন প্রত্যাহার করে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরুক। স্বাথ্যসচিবকে আমি সরাতে পারব না। একটা পরিবার থেকে সবাইকে সরিয়ে দেওয়া যায় না। একটা ডিপার্টমেন্ট থেকে সকলকে সরিয়ে দিলে চলবে কীভাবে? তোমাদের দাবির বেশিরভাগই পূরণ করা হয়েছে। প্রথম ৫টি দাবির মধ্যে ৪টি দাবি পূরণ করেছি।
মুখ্যমন্ত্রী এও বলেন, 'পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হতে দিন। তারপরই একসঙ্গে সব মেডিকেল কলেজগুলিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য ৩-৪ মাস সময় দিতে হবে। আমরাও বিচার চাইছি। মানুষ চিকিৎসা পরিষেবা ঠিক করে পাচ্ছেন না। অনশন প্রত্যাহার করুন।'
হাসপাতালগুলিতে স্থায়ী নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগের দাবি জানান জুনিয়র চিকিৎসকরা। সিভিক ভলেন্টিয়ার নিয়োগ করলে হবে না। মুখ্যমন্ত্রী জানান, 'আমরা এখনই ৬ হাজার পুলিশ নিয়োগ করতে পারি। কিন্তু ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে আদালতে মামলা ঝুলে রয়েছে। আদালত নির্দেশে দিলেই আমি নিয়োগ করে দেব।'
পাশাপাশি সোমবার বিকেলে নবান্নে জুনিয়র চিকিৎসকদের সাথে বৈঠকের প্রস্তাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ১০ জন প্রতিনিধি নিয়ে নবান্নে যেতে পারবেন জুনিয়র চিকিৎসকরা।
প্রসঙ্গত, শুক্রবারই ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। গতকাল জুনিয়র এবং সিনিয়র চিকিৎসকরা বৈঠক করেন। বৈঠকের পরে জুনিয়র চিকিৎসক দেবাশিস হালদার জানান, "সোমবারের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী যদি আমাদের দাবি না মানেন, তবে মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে সর্বাত্মক ধর্মঘটে যেতে বাধ্য হব।" এই হুঁশিয়ারি পেয়েই আজ তড়িঘড়ি অনশন মঞ্চে যান মুখ্যসচিব এবং স্বরাষ্ট্রসচিব।
আরজি কর কাণ্ডের পরই স্বাস্থ্যসচিব সহ স্বাস্থ্যদপ্তরের একাধিক আধিকারিকের অপসারণের দাবি করেছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। অন্যান্যদের পদ থেকে সরানো হলেও স্বাস্থ্যসচিবকে রেখে দেয় সরকার। আগেও মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন স্বাস্থ্যসচিবকে সরানো যাবে না। ফের একবার তাঁর গলায় একই সুর শোনা গেল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন