ববিতারও চাকরি বাতিলের নির্দেশ বিচারপতি গাঙ্গুলির, ফেরত দিতে হবে অঙ্কিতার থেকে পাওয়া সমস্ত টাকাও

কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়েছে, ববিতা সরকারের চাকরি বাতিল করে সেই শূন্যপদে অনামিকা রায়কে নিয়োগ দিতে হবে। অঙ্কিতা অধিকারীর থেকে পাওয়া প্রায় ১৬ লক্ষ টাকাও অনামিকা রায়কে ফেরত দিতে হবে।
ববিতারও চাকরি বাতিলের নির্দেশ বিচারপতি গাঙ্গুলির
ববিতারও চাকরি বাতিলের নির্দেশ বিচারপতি গাঙ্গুলির
Published on

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে প্রাক্তন মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর চাকরি পেয়েছিলেন ববিতা সরকার। এবার সেই ববিতারও চাকরি বাতিল করলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। ববিতার চাকরি পাবেন অনামিকা রায়, নির্দেশে এমনই জানালেন তিনি।

এদিন কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশে জানিয়েছে, অবিলম্বে ববিতা সরকারের চাকরি বাতিল করতে হবে মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে। সেই শূন্যপদে অনামিকা রায়কে নিয়োগ দিতে হবে। তিন সপ্তাহের মধ্যে অনামিকাকে বাড়ির কাছে কোনও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের স্কুলে চাকরির সুপারিশ দিতে হবে স্কুল সার্ভিস কমিশনকে (এসএসসি)।

বিচারপতি গাঙ্গুলি আরও নির্দেশ দিয়েছেন, অঙ্কিতা অধিকারীর থেকে বেতন বাবদ পাওয়া প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা অনামিকা রায়কে ফেরত দিতে হবে ববিতা সরকারকে। রেজিস্ট্রার জেনারেলের মাধ্যমে এই টাকা ফেরত দিতে হবে। প্রথমে ১১ লক্ষ টাকা ১৯ মে-র মধ্যে জমা দিতে হবে। বাকি টাকা ৬ জুনের মধ্যে জমা করতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পরেশ অধিকারী প্রভাব খাটিয়ে বেআইনিভাবে নিজের মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীকে চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন, এই অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ববিতা সরকার। তাঁর অভিযোগ ছিল, এসএসসির মেধাতালিকায় অনেক পিছনে থাকা সত্ত্বেও ওয়েটিং লিস্টে অঙ্কিতার নাম প্রথমে নিয়ে এসে তাঁকে চাকরি দেওয়া হয়, যেখানে ওয়েটিং লিস্টে এক নম্বরে তাঁর (ববিতা) নাম ছিল।

ববিতার এই অভিযোগ খতিয়ে দেখে অঙ্কিতার চাকরি বাতিল করে সেই জায়গায় ববিতাকে নিয়োগের নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলি। অঙ্কিতার এত দিনের চাকরির সব বেতনও ববিতাকে দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি।

ববিতার নিয়োগের কয়েকমাস পরেই তাঁর চাকরি বাতিলের দাবিতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন শিলিগুড়ির বাসিন্দা আনামিকা রয়। তাঁর অভিযোগ, স্কুল সার্ভিস কমিশনের কাছে আবেদন করার সময় স্নাতকস্তরের শতকরা নম্বর বাড়িয়ে দেখিয়েছেন ববিতা। স্নাতক স্তরে ৮০০ নম্বরের মধ্যে ৪৪০ নম্বর পেয়েছিলেন ববিতা। অর্থাৎ, শতকরা হিসাবে ৫৫ শতাংশ। অথচ, আবেদনপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে স্নাতক স্তরে ৬০ শতাংশ বা তার বেশি পেয়েছেন তিনি। অনামিকার দাবি,

অনামিকার দাবি, এর ফলে ববিতার ‘অ্যাকাডেমিক স্কোর’ বেড়ে গিয়েছে। যদি সঠিক অ্যাকাডেমিক স্কোর ধরা হয়, তাহলে ববিতার র‌্যাঙ্ক অনেক পিছিয়ে যাবে এবং যোগ্য প্রার্থী হিসাবে ২০ জনের তালিকায় ২০ নম্বরে উঠে আসবে তাঁর নাম। অর্থাৎ চাকরিটা তাঁরই পাওয়ার কথা।

এদিন মামলার শুনানিতে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ববিতা সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, "ববিতা সরকারকে চাকরিতে বহাল রাখা উচিত নয়। কারণ তিনি স্কুল সার্ভিস কমিশনের কাছে তাঁর প্রাপ্ত নম্বর সম্পর্কে সঠিক তথ্য দেননি।"

SUPPORT PEOPLE'S REPORTER

ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in