খুনের FIR নেয় না পুলিশ, আর এতে এত দ্রুততা! জাতীয় সঙ্গীত অবমাননা মামলায় রাজ্যকে ভর্ৎসনা হাইকোর্টের

People's reporter: বিচারপতি বলেন, হঠাৎ করে জাতীয় সঙ্গীত শুরু করা যায় না। এখানে যদি এখন কেউ জাতীয় সঙ্গীত গাইতে শুরু করেন, তা হলে তো সব কাজ বন্ধ করে সবাইকে দাঁড়িয়ে পড়তে হবে।
 কলকাতা হাইকোর্ট
কলকাতা হাইকোর্টফাইল ছবি সংগৃহীত
Published on

জাতীয় সঙ্গীত অবমাননা মামলায় হাইকোর্টে বড় ধাক্কা রাজ্যের। গ্রেফতার করা যাবে না ওই ১১ জন বিজেপি বিধায়ককে। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে নির্দেশ বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের। বুধবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।

জাতীয় সঙ্গীত অবমাননার অভিযোগ তুলে বিজেপির ১১ জন বিধায়ককে সমন পাঠিয়েছিল লালবাজার পুলিশ। এই সিদ্ধান্তের উপর অন্তর্বতী স্থগিতাদেশ জারি করল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত জানিয়েছেন, বুধবার এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন পুলিশকে কেস ডায়েরি নিয়ে আদালতে হাজির থাকতে হবে। উল্লেখ্য, সোমবার মামলার কেস ডায়েরি আদালতে দেখাতে পারেনি পুলিশ।

পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি সেনগুপ্ত। তিনি বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষ কী ভাবছে? কয়েক লাখ টাকা খরচ করে মামলা হচ্ছে। খুনের অভিযোগে পুলিশ এফআইআর নেয় না, এমন উদাহরণ আমার কোর্টে রয়েছে। ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত সঠিক ভাবে করে না পুলিশ। আর জাতীয় সঙ্গীত অবমাননা নিয়ে দ্রুত মামলা দায়ের হয়ে গেল! এই ধরনের ছেলেমানুষি মামলার জন্য কত মামলা আটকে রয়েছে। স্লোগান চলছিল দেখেও জাতীয় সঙ্গীত করার কী দরকার ছিল?’’

উল্লেখ্য, গত বুধবার বি আর আম্বেদকর মুর্তির সামনে চলছিল তৃণমূলের ধর্না কর্মসূচি। সেই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। অন্যদিকে, তৃণমূলের ধর্না মঞ্চের থেকে ৫০ মিটার দূরে বিধানসভার সিঁড়িতে বসে পাল্টা বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন বিজেপি বিধায়করা। তুলেছিলেন সরকার বিরোধী শ্লোগান। এমত অবস্থায়, তৃণমূলের ধর্না কর্মসূচি শেষ হলে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তৃণমূলের অভিযোগ, জাতীয় সঙ্গীত চলাকালীন বিজেপি বিধায়কদের শ্লোগান শোনা যাচ্ছিল। আর তার জেরেই বিজেপি বিধায়কদের বিরুদ্ধে জাতীয় সঙ্গীত অবমাননার অভিযোগ তুলে বিধানসভার স্পিকারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন শাসকদলের বিধায়কেরা। অভিযোগ পাওয়া মাত্রই বিধানসভায় সেন্ট্রাল ডিসিকে ডেকে পাঠান স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।

সূত্রের খবর, অভিযোগপত্র তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয়। সেই প্রেক্ষিতেই ১২ জন বিজেপি বিধায়কের বিরুদ্ধে লালবাজার থানায় এফআইআর দায়ের হয়। ওই ১২ জনের তালিকায় বিজেপি থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলালের নামও ছিল। পরে সেই নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। সোমবার বাকি ১১ জন বিজেপি বিধায়কদের তলব করা হয়েছিল লালবাজার থানা থেকে।

বিজেপি বিধায়কদের তরফ থেকে আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল তাঁরা সোমবার হাজিরা দেবে না। আর সেই এফআইআরকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় বিজেপি বিধায়কেরা। আজ বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর এজলাসে ছিল সেই মামলার শুনানি।  

SUPPORT PEOPLE'S REPORTER

ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in