
ধর্মতলায় মেট্রো চ্যানেলে চিকিৎসকদের ধর্না নিয়ে শুক্রবার ফের তৈরি হল জটিলতা। বৃহস্পতিবার ধর্নায় বসার জন্য শর্ত সাপেক্ষে অনুমতি দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। তবে সেদিনই সব শর্ত জানানো হয়নি। শুক্রবার ধর্নার জন্য পর্যাপ্ত জিনিসপত্র নিয়ে আসার অনুমতি দিয়েছেন বিচারপতি ঘোষ। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আজ দুপুরেই। বিচারপতি জানান, সেইসময় চূড়ান্ত হবে কর্মসূচির স্থান।
আর জি কর কাণ্ডে সন্দীপ ঘোষের জামিন সহ একাধিক ঘটনার প্রতিবাদে জয়েন্ট প্লাটফর্ম অফ ডক্টর্স ধর্নায় বসার অনুমতি চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন জানায়। বৃহস্পতিবার শুনানিতে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ মৌখিক ভাবে ধর্মতলায় মেট্রো চ্যানেলে ধর্নায় বসার অনুমতি দেন। কিন্তু ধর্নার জন্য বেশ কিছু শর্ত দিয়েছিলেন তিনি। এদিন বিচারপতি ঘোষ আরও জানান, চিকিৎসকদের দাবিগুলো জানাতে হবে রাজ্যকে। কোন দাবিতে কী আপত্তি রয়েছে, তা আদালতেই জানাবে রাজ্য। সেই অনুযায়ী আদালত বাকি শর্তগুলো জানাবে।
শুক্রবার প্রথম পর্বের শুনানিতে বিচারপতি জানান, ‘ধর্নার আয়োজনের ব্যবস্থা করতে বলেছি। তার পরেও কেন চিকিৎসকদের কর্মসূচির কাজ শুরু করতে দিচ্ছে না পুলিশ?’ বিচারপতির প্রশ্নের উত্তরে রাজ্যের আইনজীবী বলেন, ‘২৪ এবং ২৫ ডিসেম্বর বাদ রেখে কর্মসূচি করা হোক। এটা রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়। এই কর্মসূচি নিয়ে জনগণের মধ্যে নানা প্রতিক্রিয়া রয়েছে। ২০০ লোক নিয়ে কর্মসূচি বলা হলেও বেশি লোক হলে কেউ আটকাতে পারবে না। এই কর্মসূচিতে ভিড় কেউ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। না হলে ওয়াই চ্যানেলে কর্মসূচি করা হোক। সেখানে এক হাজার লোকের জমায়েত হতে পারে’।
এর উত্তরে বিচারপতি বলেন, ‘এই ধরনের কর্মসূচিতে অস্থায়ী ভাবে মঞ্চ তৈরি করা হয়। পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে দিক’। মামলাকারীদের আইনজীবী রাজ্যকে নিশানা করে বলেন, ‘রাজ্যের ইগো প্রবলেম হচ্ছে। ওই জায়গায় বিজেপি কর্মসূচি করেছে। জুনিয়র ডাক্তাররা সেখানে ধর্না দিয়েছেন। এখন কিসের সমস্যা?’ যদিও রাজ্যের যুক্তি, ওয়াই চ্যানেলে কর্মসূচি হলে যান নিয়ন্ত্রণও অনেক সহজ হবে।
বিচারপতি এরপর কার্যত ভর্ৎসনার সুরে বলেন, ‘গতকাল আমি কর্মসূচির অনুমতি দিয়েছিলাম। কর্মসূচির জন্য চিকিৎসকরা মানসিক প্রস্তুতি নিয়েছেন। এই অবস্থায় রাজ্যের আপত্তি ঠিক নয়। সাত ফুট উঁচু গার্ডরেল করে দিন। তার মধ্যে সকলে থাকবে। বাইরে কাউকে থাকার অনুমতি দেওয়া হবে না’।
রাজ্যের আইনজীবীর যুক্তি, ‘এটা অন্য কর্মসূচি নয় যে শর্ত না মানলে পুলিশ লাঠিচার্জ করতে পারবে। চিকিৎসকরা কর্মসূচি করছেন। এখানে শর্ত ভঙ্গ করলে পুলিশের কিছু করার থাকবে না’।
এরপরেই মামলাকারীদের আইনজীবীর উদ্দেশ্যে বিচারপতি বলেন, ‘আপনারা কর্মসূচি করুন। কিন্তু ২৪ এবং ২৫ ডিসেম্বর সেখানে বাইরের কাউকে যেতে বারণ করুন’।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন