বুধবার কলকাতা হাইকোর্টে মোমিনপুর কাণ্ডের শুনানি ছিল। শুনানি চলাকালীন রাজ্য পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে যথেষ্ট ক্ষোভ প্রকাশ করে আদালত। পাশাপাশি রাজ্য পুলিশের রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে গোটা ঘটনার তদন্ত করার জন্য সিট গঠনের নির্দেশ দিল হাইকোর্ট। আদালতের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী এই মুহূর্তে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিষ্প্রোয়জন। মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী নভেম্বরে।
আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী সিটের কাজ হবে অপরাধীদের চিহ্নিতকরণ, তাদের উদ্দেশ্য জানা, এলাকার শান্তি বজায় রাখা।
মোমিনপুরে অশান্তির ঘটনায় এনআইএ (NIA) তদন্তের দাবি জানিয়ে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল হাইকোর্টে। এদিন বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি ও বিচারপতি অপূর্ব সিনহা রায়ের ডিভিশন বেঞ্চে সেই মামলার শুনানি ছিল।
আদালতের সওয়ালে রাজ্য পুলিশকে যে যে প্রশ্ন গুলি করা হয়েছে:- ১) বোমা বিস্ফোরণের পর কেন এনআইএ-কে জানানো হল না? ২) এলাকার স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফেরাতে কী কী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে? ৩) নিরাপত্তার জন্য কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? ৪) ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়ে কী ভাবছে রাজ্য? ৫) সম্প্রীতি ফেরাতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে?
শুনানি শেষে রাজ্য পুলিশের ডিজি ও কলকাতা পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে তদন্তের জন্য সিট গঠনের নির্দেশ দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। পাশাপাশি আরও বলা হয়েছে, ঘটনার ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে পরবর্তী শুনানিতে তা আদালতে পেশ করতে হবে।
এছাড়াও, এনআইএ তদন্ত হবে কিনা তা খতিয়ে দেখার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে আর্জি জানিয়েছে আদালত। রাজ্যের কাছ থেকে পাওয়া রিপোর্ট অনুসারে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কেন্দ্রকে। এই বিষয়ে কোনওরকম হস্তক্ষেপ করবে না আদালত।
অন্যদিকে, মোমিনপুরকাণ্ডে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য পরিকল্পিতভাবেই হিংসা ছড়ানো হচ্ছে বলে দাবি করেছেন সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে ‘চোর’ বলেও আক্রমণ করেন তিনি। তাঁর কথায়, দেশে যাঁরা ধর্মের রাজনীতি করে তাঁরা হিন্দু ও মুসলমানদের সামনে রেখে নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধি করতে চাইছেন।
প্রসঙ্গত, মোমিনপুরে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ বাধে সোমবার। সূত্রের খবর, ইট, বোতল প্রভৃতি ছোঁড়াছুঁড়িও হয় দুই দলের মধ্যে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। কাঁদানে গ্যাসও ছোঁড়ে পুলিশ। তবে মূল অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ছেড়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে।
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।