
টোটো এবং অটোর চাপে বাসের সংখ্যা কমতে বসেছে কলকাতাতে। খাতায়কলমে রুট থাকলেও টোটো এবং অটোর জন্য যাত্রী কম হওয়ার আশঙ্কায় বাস দিতে ভয় পাচ্ছেন বাসমালিকরা। অন্যদিকে, অক্টোবরের পর থেকে বহু রুটে বাসের সংখ্যা অর্ধেকেরও নীচে নেমে আসতে পারে। এই আবহে বাস বাঁচাতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রুটে অটো এবং টোটো বন্ধ করার আর্জি জানিয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হচ্ছেন বাসমালিক সংগঠনের নেতৃত্ব।
শহর কলকাতাতে ২০২ টি বাস রুট। এর মধ্যে টোটো এবং অটোর চাপে বন্ধ হয়ে গেছে প্রায় ৩৫ টি রুট। বন্ধের পথে আরও বহু বাস রুট। ক্ষতিগ্রস্ত উত্তর ২৪ পরগণা এবং হাওড়ার একাংশ ছুঁয়ে যাওয়া একাধিক বাস রুট। সব থেকে প্রভাব পড়েছে হাওড়া থেকে কলকাতাতে আসা বিভিন্ন বাস রুটগুলো।
যেমন, হাওড়ার চ্যাটার্জিহাট-ধর্মতলা পর্যন্ত ৫৮ নম্বর রুটে এক সময় ২০টি বাস চললেও এখন একটিও চলে না। রামরাজাতলা-ধর্মতলা পর্যন্ত ৫২ নম্বর রুটে অতীতে ৩৫টি বাস চললেও বর্তমানে চলছে ১০টি। অন্যদিকে, বকুলতলা-ধর্মতলা রুটে আগে ৩০টি বাস চললেও বর্তমানে চলে ১৫ টি। অক্টোবরের পরে চলবে মাত্র পাঁচটি। ডোমজুড়-হাওড়া রুটে অতীতে ৩০টি বাস চললেও বর্তমানে সেখানে চলে না একটিও বাস।
পাশাপাশি, কলকাতা থেকে প্রায় হারিয়ে যেতে চলেছে মিনিবাস। ইতিমধ্যেই যাদবপুর-এয়ারপোর্ট, জয়েনপুর-অরবিন্দ সেতু, বেহালার একাধিক মিনিবাসের রুট উঠে গিয়েছে। এছাড়াও মিনিবাস কমে আসছে সন্তোষপুর-বি বা দী বাগ, গড়িয়া-বি বা দী বাগ রুটেও।
হাওড়ার আন্দুল রোড, কদমতলা রোড, পঞ্চাননতলা রোড, বেলিলিয়াস রোড, নেতাজি সুভাষ রোড-সহ বিভিন্ন রাস্তায় বাস রুট প্রায় উঠে যাওয়ার পিছনে বাসমালিকরা রাস্তায় অতিরিক্ত টোটোকেই দায়ী করছেন। তাঁদের অভিযোগ, গুরুত্বপূর্ণ রুটেও বেড়ে গেছে টোটোর বাড়বাড়ন্ত।
অন্যদিকে, কলকাতার ডায়মন্ড হারবার রোড, যাদবপুর, নেতাজি সুভাষ রোড, এস সি মল্লিক রোড ছাড়াও উত্তর কলকাতার শোভাবাজার, ভি আই পি রোড-সহ একাধিক রাস্তায় বাস কমেছে অটোর বাড়বাড়ন্তের কারণে। এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পরিবহণমন্ত্রী এবং দফতরের সচিবকে চিঠি দিয়েছে ‘বাস মিনিবাস সমন্বয় সমিতি’। এছাড়াও এবিষয়ে জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তাঁরা।
বাসমালিকদের অভিযোগ, অটোচালকদের নির্দিষ্ট রুট থাকলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বেআইনি অটো চলছে। সরকার অটো চালকদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট কর নিলেও টোটো চালকদের কাছ থেকে তেমন কোনো কর নেওয়া হয় না। এছাড়া টোটোর সংখ্যা বেঁধে দিয়ে পরিস্থিতি সামলাতে সরকার অতীতে কিউ আর কোড চালু করার কথা ভেবেছে। সরকার অনুমোদিত নয় এমন টোটোর কারখানা ভেঙে ফেলার পদক্ষেপের কথাও জানিয়েছে সরকার। তার পরেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে নি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন