‘তালিবানি মনোভাব নিয়ে জেমস বন্ডের মতো আচরণ করছেন’, অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে বোসকে কটাক্ষ ব্রাত্যর

ব্রাত্য বসু জানান, “জগদীপ ধনকড় যখন রাজ্যপাল ছিলেন তখন তাও আলোচনার পরিসর ছিল। কিন্তু বর্তমান রাজ্যপালের সঙ্গে আমাদের কোনও আলোচনার জায়গা নেই।” বিদূষক গোপাল ভাঁড়ের সাথেও তুলনা করা হয়েছে রাজ্যপালকে।
রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এবং শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু
রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এবং শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুফাইল ছবি

রাজ্যের উপাচার্যহীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলির অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে ফের রাজ্যপালের সঙ্গে জোর সংঘাত বাঁধল রাজ্য সরকারের। রবিবার রাজভবনের তরফ থেকে রাজ্যের ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। এই নিয়ে আবারও রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রকের তোপের মুখে পড়তে হয়েছে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে। সোমবার রাজ্যপালকে তীব্র আক্রমণ করে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছেন, “রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাকে দায়িত্ব নিয়ে দেউলিয়া করে দেওয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন বাংলার নয়া রাজ্যপাল।”

গত একমাস ধরেই রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে একেরপর এক নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে রাজভবনের তরফে। সম্প্রতি প্রেসিডেন্সি ও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়-সহ রাজ্যের প্রায় ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের ‘অনুপস্থিতি’ নিয়ে মুখ খুলেছিলেন রাজ্যের শিক্ষাবিদ ও প্রাক্তন উপাচার্যরা। উপাচার্য না থাকায় ওই বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ছাত্র-ছাত্রীরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছিলেন রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্যরা। বিশ্ববিদ্যালয়গুলির প্রশাসনিক কাজও ব্যাহত হচ্ছে বলে জানান তাঁরা।

এরপরেই গত ৩১ আগস্ট রাজ্যের রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য সি ভি আনন্দ বোস প্রয়োজনে নিজেই ওই উপাচার্যহীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্যের ভূমিকা পালন করবেন বলে জানান। রাজ্যপালের এই ঘোষণা নিয়ে শিক্ষা দফতর তাঁকে চরম কটাক্ষ করে। তবে রবিবার রাতে রাজভবনের তরফে রাজ্যের ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী রাজ্যপাল নিয়োগ করা হচ্ছে বলে ঘোষণা করা হয়। যার মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্যভাবে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব পেয়েছেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায়। একইসঙ্গে দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্যের ভূমিকা পালন করবেন শুভ্রকমল। প্রসঙ্গত, শনিবার রাজভবনের তরফে একটি সার্কুলার জারি করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্যদের হাতে বিপুল ক্ষমতা তুলে দেওয়া হয়। আচার্যের পরেই উপাচার্যদেরই বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ‘সর্বেসর্বা’ ঘোষণা করে বলা হয়, সরকারি নির্দেশ মানতে বাধ্য নন তাঁরা।

সোমবার অবশেষে এই নিয়ে মুখ খুললেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি এদিন সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান, “জগদীপ ধনকড় যখন রাজ্যপাল ছিলেন তখন তাও রাজ্য-রাজ্যপাল আলোচনার পরিসর ছিল। উনি বৈঠকে বসতেন, তর্কাতর্কি হত। কিন্তু বর্তমান রাজ্যপালের সঙ্গে আমাদের কোনও আলোচনার জায়গা নেই। উনি ভিসি বসাচ্ছেন, আবার তাড়িয়ে দিচ্ছেন। তালিবানি মনোভাব নিয়ে উনি জেমস বন্ডের মতো আচরণ করছেন। রাজ্যের নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীকেও মানছেন না।” বিদূষক গোপাল ভাঁড়ের সাথেও তুলনা করা হয়েছে রাজ্যপালকে।

তৃণমূল সূত্রে খবর, রাজ্যপালের বিরুদ্ধে বিধানসভায় প্রস্তাব আনতে পারে রাজ্য সরকার। তবে সেই বিষয়টি এখনও ভাবনাচিন্তার পর্যায়েই রয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।

রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এবং শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু
Dhupguri By-Election: প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ককে দলে নেওয়া হল কেন? ক্ষোভ বিজেপির অন্দরেই

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in