
শুধু দেবাশিস হালদার নয়, আরজি কর আন্দোলনের অন্যতম আরও দুই মুখ অনিকেত মাহাতো এবং আসফাকুল্লা নাইয়ার দূরে পোস্টিং নিয়েও শুরু হয়েছে বিতর্ক। যার প্রতিবাদে আপাতত তাঁরা স্বাস্থ্যভবনে স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ নিগমের ঘরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করছেন। দাবি, স্বাস্থ্যসচিবের উত্তর না পাওয়া পর্যন্ত অবস্থান থেকে নড়বেন না।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি হাওড়া জেলা হাসপাতালে সিনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তার পোস্টিংয়ের জন্য প্রাথমিক বন্ড জমা দেন দেবাশিস। কিন্তু মেধাতালিকা প্রকাশের পর সোমবার জানা যায়, হাওড়ার পরিবর্তে পোস্টিং দেওয়া হয়েছে মালদার গাজোলের একটি হাসপাতালে। ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টর্স ফ্রন্ট-এর আরও দাবি, কাউন্সেলিংয়ের আগে রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালের শূন্যপদের যে তালিকা বেরিয়েছিল, সেখানে গাজোলের ওই হাসপাতালের নাম ছিল না।
চিকিৎসকদের সংগঠন ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টর্স ফ্রন্টের অভিযোগ, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার উদ্দেশ্যেই এটা করা হয়েছে। কারণ গত ২৭, ২৮ ফেব্রুয়ারি এবং ৬ মার্চ মোট ৭৭৮ জন চিকিৎসক কাউন্সেলিংয়ে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তাঁদের কারও পোস্টিং বদলানো হয়নি। কেবল দেবাশিসের বদলানো হয়েছে। যা নিয়ে মঙ্গলবার স্বাস্থ্যভবন অভিযানের ডাক দেয় ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফ্রন্ট।
পরে জানা যায় শুধু দেবাশিস নয়, একই রকম ভাবে দূরে পোস্টিং করা হয়েছে অনিকেত ও আসফাকুল্লার। সিনিয়র রেসিডেন্ট নিয়োগের নিয়ম হল, স্বাস্থ্য ভবনের তরফ থেকে একটি কাউন্সেলিং করা হয়। যেখানে ডাক্তারদের জিজ্ঞাসা করা হয়, তিনি কোথায় পোস্টিং চাইছেন।
সেই নিয়ম মেনে অনিকেত, আসফাকুল্লারা জানান, তাঁরা যথাক্রমে আরজি করে এবং আরামবাগ হাসপাতালে পোস্টিং চান। সেই মতো বন্ডেও স্বাক্ষর করেন। কিন্তু অভিযোগ, মেধাতালিকা বেরোনোর পর দেখা যায়, আরজি করের পরিবর্তে অনিকেতকে পাঠানো হয়েছে রায়গঞ্জে, আর আসফাকুল্লার পোস্টিং হয়েছে পুরুলিয়ার দেবেন মাহাতো মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে।
এ বিষয়ে অনিকেত বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের প্রান্তিক কোনও জায়গায় যেতে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু আমরা নিয়োগে স্বচ্ছতা চেয়েছিলাম। অথচ কাউন্সেলিংয়ের পর মেধাতালিকা বেরোনোর পর দেখা গেল, আমাকে পাঠানো হচ্ছে রায়গঞ্জ, আসফাকুল্লাকে পাঠানো হচ্ছে পুরুলিয়া, দেবাশিসকে পাঠানো হচ্ছে গাজোল। তা হলে আর স্বচ্ছতা কোথায় হল?’’
আসফাকুল্লার গলাতেও একই সুর। তাঁর কথায়, ‘‘মেধাতালিকাকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা চলছে। ১৫০০ জনের মধ্যে কেন তিন জনের পোস্টিং বদলে গেল, আমরা সেই উত্তর জানতে চাই।’’
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন