

বিধানসভা ভোটে বিজেপি জিতলে পশ্চিমবঙ্গ আর বাংলাদেশ এক করে দেওয়া হবে। এসআইআর আবহেই এমন বিতর্কিত মন্তব্য করলেন রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার। এই মন্তব্য করার জন্য জগন্নাথ সরকারকে বরখাস্ত করার জন্য জে পি নাড্ডাকে চ্যালেঞ্জ করেছেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জি।
ঘটনার সূত্রপাত গত বৃহস্পতিবার। মাটিয়ারি বানপুরে বিজেপির একটি সভায় রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার বলেন, "কথা দিচ্ছি, এ বারের ভোটে (বিধানসভা) আমরা জিতলে বাংলাদেশের সঙ্গে আর কাঁটাতার রাখব না। আগেও এক ছিল দুই বাংলা, আবার এক হয়ে যাবে।’’
তিনি আরও বলেন, "তৃণমূল জিতলেও কাঁটাতার আর থাকবে না। কিন্তু তখন দেশটা বাংলাদেশই থেকে যাবে।’’
বিজেপি সাংসদের এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা শুরু হয় রাজনৈতিক মহলে। তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ কটাক্ষ করে বলেন, "এক দিকে বিজেপি বলছে অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে হবে। অন্য দিকে তারাই বলছে, ‘কাঁটাতার তুলে দেব'। এদের এই দ্বিচারিতা বাংলার মানুষ বুঝে নেবেন।"
অন্যদিকে জগন্নাথ সরকারকে বরখাস্ত করার দাবি তুলেছেন অভিষেক ব্যানার্জি। নিজের এক্স হ্যান্ডেলে এই বিতর্কিত মন্তব্যের ভিডিও পোস্ট করে তিনি লেখেন, "বিজেপি নেতৃত্বের ভণ্ডামি নতুন মাত্রায় নেমেছে। বিজেপির রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকার ঘোষণা করেছেন, বিজেপি ক্ষমতায় এলে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে কোনও কাঁটাতার থাকবে না - উভয় দেশ আবার এক হয়ে যাবে! অন্যদিকে, এই একই বিজেপি সরকার, যার মধ্যে অমিত শাহ রয়েছেন, তিনি পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে দোষারোপ করে চলেছেন যে পশ্চিমবঙ্গ সরকার সীমান্ত রক্ষা করার জন্য কোনও জমি দিচ্ছেন না, যে সীমান্ত তাঁদের নিজেদের সাংসদই মুছে ফেলতে চান!"
তিনি আরও লেখেন, "যদি বিজেপি সত্যিই দেশের অখণ্ডতায় বিশ্বাস করে, তাহলে আমি বিজেপি এবং জে পি নাড্ডাকে-কে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি যে এই সাংসদকে অবিলম্বে সাসপেন্ড করা হোক। নতুবা তাঁদের নীরবতা এটাই প্রমাণ করবে যে জগন্নাথ সরকার শীর্ষ নেতৃত্বের পূর্ণ সম্মতিতে কথা বলেছিলেন।"
যদিও অভিষেকের এই মন্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়েছেন জগন্নাথ সরকার। তাঁর কথায়, অভিষেক তাঁর মন্তব্য বুঝতে পারেননি। এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, "অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমার বক্তব্যের মানে না বুঝতে পেরে অমিত শাহ এবং জেপি নাড্ডাকে চ্যালেঞ্জ করেছেন। যে বাংলা এক ছিল, তা সোনার বাংলা ছিল। বিজেপি ক্ষমতায় এলে সোনার বাংলা গড়ে তোলা হবে। বাংলায় এতো উন্নয়ন হবে যে এগিয়ে বাংলার বিজ্ঞাপন দিতে হবে না। তখন ভুখা বাংলাদেশ, যারা খেতে পায় না, তারা খাওয়া-পরার জন্য বলবে। ধর্মান্ধ নীতি ছেড়ে তারা বলবে আমরা ভারতের সঙ্গে মিলেমিশে একসঙ্গে থাকতে চাই। তাই তখন কাঁটাতারের বেড়া থাকবে না। আমার কথার মানে এইটা।"
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন