বকেয়া ডিএ ও স্কুল চালুর দাবিতে রাজপথে একাধিক বাম শিক্ষক সংগঠন

বৃহস্পতিবার, দুপুর ১ নাগাদ সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থকে রানি রাসমণি এভিনিউ পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করে ৪ টি প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের কয়েক হাজার সদস্য। মিছিল শেষে রাসমণি এভিনিউতে সমাবেশ হয়।
সুজন চক্রবর্তী
সুজন চক্রবর্তীনিজস্ব চিত্র

করোনা পরিস্থিতিতে প্রায় দু বছর দেশের সমস্ত স্কুল বন্ধ ছিল। চলতি বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে পশ্চিমবঙ্গে স্কুল চালু হলেও গরমের ছুটির নামে কয়েকদিন পরই ফের বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং সেই ছুটি এখনও চলছে। এই পরিস্থিতিতে অবিলম্বে স্কুল খোলার দাবিতে আন্দোলনে নামলো প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের ঐক্য জোট। তাঁদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধের কারণে পড়াশুনা ভুলতে বসেছে ছাত্রছাত্রীরা। অনেকেরই পড়াশুনার প্রতি আগ্রহ কমে আসছে। স্কুল ছুটেরও সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

একসঙ্গে জোট বেঁধে আন্দোলনে নেমেছে নিখিলবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি, সারা বাংলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি, বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি, প্রাথমিক শিক্ষক সঙ্ঘ (পশ্চিমবঙ্গ)। স্কুল খোলার পাশাপাশি বকেয়া ৩১ শতাংশ ডিএ প্রদান, জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০ বাতিল, প্রধান শিক্ষক নিয়োগ, শিক্ষার্থীদের মিড ডে মিলের বরাদ্দ মাথাপিছু বৃদ্ধি করার দাবিতে তারা আন্দোলনে নেমেছেন। শিক্ষা দফতরে ডেপুটেশন দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

বৃহস্পতিবার, দুপুর ১ নাগাদ সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থকে রানি রাসমণি এভিনিউ পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করে ৪ টি প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের কয়েক হাজার সদস্য। মিছিল শেষে রাসমণি এভিনিউতে সমাবেশ হয়। সভায় বক্তব্য রাখেন সিপিআই (এম)-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী।

সুজন বাবু বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষকরা আজ এক সমাবেশ ডেকেছিলেন। তাঁদের মূল উদ্বেগের বিষয় - স্কুল, লেখাপড়া, শিক্ষা। পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা ব্যবস্থার অবস্থা ক্রমশ খারাপ হয়ে যাচ্ছে। তার বিরুদ্ধে এই সংগঠনের সদস্যেরা নিজেদের মতামত জানিয়েছেন। শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির যে অভিযোগ সামনে আসছে তাতে সমগ্র শিক্ষক সমাজের সম্মান নষ্ট হচ্ছে।‘

তিনি বলেন, "তৃণমূলের জমানায় যা নিয়োগ হয়েছে সবেতেই দুর্নীতি হয়েছে। শিক্ষক নিয়োগে ৮০ শতাংশ দুর্নীতি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই বলেছিলেন রাজীব ব্যানার্জি, শুভেন্দু অধিকারী বেআইনিভাবে লোক ঢুকিয়েছেন। যদি তাই হয় এঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত করুক। কিন্তু আমরা জানি মুখ্যমন্ত্রী তদন্ত করার অনুমতি দেবেন না। কারণ উনি জানেন তদন্ত হলে উনি নিজেই ফেঁসে যাবেন।"

সমাবেশের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘স্কুল খোলার পাশাপাশি বকেয়া ডিএ প্রদানের দাবিতে শিক্ষক সংগঠনের নেতারা শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মন্ত্রী তো অনেক বেশি বোঝেন, তাঁর দেখা করার সময় নেই। তিনি মাস্টারমশাইদের সঙ্গে দেখা করবেন কেন? তিনি তো অপরাধীদের সঙ্গে দেখা করবেন। তিনি দেখা না করে, শিক্ষকদের পাঠিয়ে দিয়েছেন জয়েন্ট সেক্রেটারির কাছে। তাঁর কাছে এঁরা ডেপুটেশন জমা দিয়েছেন।‘

তবে শুধু প্রাথমিক নয়, মধ্যশিক্ষা নিয়েও এদিন ক্ষোভ উগরে দেন সুজন। তিনি বলেন, ‘মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি অনেক বড় বড় ভাষণ দেন। বোঝা যাচ্ছে, তাঁর মূল কাজ দুর্নীতি করে চাকরীর ব্যবস্থা করা, টাকা খেয়ে টাকার ভাগ কালীঘাটে পৌঁছে দেওয়া।‘

এদিন সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন এবিপিটিএ-র সাধারণ সম্পাদক মোহনদাস পণ্ডিত। তিনি বলেন, সুকৌশলে জাতীয় শিক্ষানীতি কার্যকর করা হচ্ছে রাজ্যে। শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ রেখে সরকারী শিক্ষা ব্যবস্থাকে সংকুচিত করে শিক্ষাকে ক্রমশ বেসরকারিকরণের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।

সুজন চক্রবর্তী
TET Scam: ২৩ লাখ প্রার্থীর মধ্যে ২৭৩ জনকে বাড়তি নম্বর কেন? ফের আদালতের প্রশ্নের মুখে পর্ষদ

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in