
প্রকৃতির কাছে ফের হার মানল মানুষের শক্তি। মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে হড়পা বান। তার ফলেই তছনছ গোটা গ্রাম। ১২৬০০ ফুট উঁচুতে মেঘভাঙা বৃষ্টি। এরপরেই হড়পা বান ঘণ্টায় ৪৩ কিলোমিটার বেগে আছড়ে পড়ে ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে তছনছ করে দেয় উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশীর ধারালী গ্রাম এবং হর্ষিল উপত্যকাকে। এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৪, তবে আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। নিখোঁজ ৯জন সেনা-সহ বহু। অন্যদিকে, লাগাতার বৃষ্টির ফলে ভূমিধসের জেরে রাজ্যজুড়ে বন্ধ ১৬৩টি রাস্তা।
পাহাড়ের কোলে গড়ে ওঠা ধারালী গ্রাম পর্যটকদের অন্যতম দর্শনীয় স্থান। কিন্তু মঙ্গলবারের ঘটনার পর গোটা গ্রামই ধ্বংসপুরীতে পরিণত হয়েছে। জানা গেছে, শুধু ধারালী গ্রামই নয়, সুখী টপেও মেঘভাঙা বৃষ্টি হয়। ফলে পরপর দু'বার মেঘভাঙা বৃষ্টির ফলে পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। ক্ষীরগঙ্গা ধরে নেমে আসে হড়পা বান, সঙ্গে বয়ে নিয়ে আসে বিশাল বিশাল পাথর, বোল্ডার আর কাদার স্রোত। আর সেই পাথর, কাদা আর জলের স্রোতে একের পর এক বাড়ি, হোটেল নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।
ক্ষীরগঙ্গা হয়ে হড়পা বান নেমে আসায় বোল্ডার আর কাদার স্রোতে ভাগীরথীর প্রবাহ রুখে দেয়। ভাগীরথীর কাছে রয়েছে হর্ষিল হেলিপ্যাড, সেনাছাউনি, ধারালী গ্রাম, কল্প কেদার মন্দির। হড়পা বানে সেনাছাউনি, হেলিপ্যাড, ধারালী গ্রাম। যা প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে।
এই হড়পা বানের জেরে উত্তরকাশীর সুখি টপ ও হর্ষিলেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ৯ জন সেনা-সহ নিখোঁজ শতাধিক। উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে জাতীয় দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া বাহিনী (এনডিআরএফ)। ৩৫ জন উদ্ধারকারী নিয়ে গঠিত তিনটি এনডিআরএফ দল। যা ইতিমধ্যেই পৌঁছেছে ঘটনাস্থলে। জানা গেছে, মৃতদের সনাক্ত করা জন্য দুটি কুকুরকে দিল্লি থেকে উড়্যে নিয়ে যাচ্ছে এনডিআরএফ।
এদিকে এর জেরে গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগের রাস্তাগুলি বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। জানা গেছে, রাজ্যজুড়ে ১৬৩টি রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। এর মধ্যে রয়েছে পাঁচটি জাতীয় সড়ক, সাতটি রাজ্য সড়ক এবং দুটি সীমান্ত সড়ক। এর ফলে রাজ্যের রাজধানী দেরাদুন থেকে প্রায় ১৪০ কিলোমিটার দূরে দুর্গম ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধারকর্মীদের যাতায়াত ব্যাহত হচ্ছে।
এখনও অব্যাহত তীব্র বৃষ্টিপাত। মঙ্গলবার রাত থেকে বেশ কয়েকটি জেলায় অবিরাম বৃষ্টিপাত হচ্ছে। রুদ্রপ্রয়াগে, রাতভর অবিরাম বৃষ্টিপাতের ফলে অলকানন্দা নদী বিপদসীমার কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে। নিরাপত্তার কারণে স্থগিত রাখা হয়েছে কেদারনাথ যাত্রা। আরও পূর্বে, বাগেশ্বরে অবিরাম বৃষ্টিপাত হচ্ছে, গোমতী এবং সরযূ নদীই উভয়ই উত্তাল।
অন্যদিকে, মঙ্গলবারও হরিদ্বার, নৈনিতাল এবং উধম সিং নগর সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় ভারী বৃষ্টির লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। অন্যান্য অঞ্চলে কমলা সতর্কতা জারি রয়েছে। আলোকে, দেরাদুন, নৈনিতাল, তেহরি, চামোলি, রুদ্রপ্রয়াগ, চম্পাবত, পৌরি, আলমোড়া এবং বাগেশ্বর জেলার স্কুল ও কলেজ বন্ধ রাখা হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন