
অবিবাহিত মহিলাদের 'নিরাপদ গর্ভপাতের অধিকার'-এর পক্ষে সওয়াল করলো সুপ্রিম কোর্ট। এক পর্যবেক্ষণে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, গর্ভপাতের অধিকারকে অস্বীকার করার অর্থ এটি তাঁদের (অবিবাহিত মহিলাদের) স্বায়ত্তশাসনকে লঙ্ঘন করা।
ডাক্তারের পরামর্শে মেনে অবিবাহিত মহিলাদের ২৪ সপ্তাহের গর্ভপাতের অনুমতি দেওয়া যায় কিনা, তা নিয়ে 'মেডিকেল টার্মিনেশন অফ প্রেগন্যান্সি (MTP) অ্যাক্ট' খতিয়ে দেখছে শীর্ষ আদালত।
শুক্রবার, বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং জেবি পারদিওয়ালার বেঞ্চ জানিয়েছে, এ নিয়ে আদালতকে সহযোগিতা করবেন অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ঐশ্বর্য্য ভাটি।
বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, 'যখন এই আইনে ব্যতিক্রমী ক্ষেত্রে গর্ভপাতের সুযোগ রয়েছে, তাহলে কেন অবিবাহিত মহিলাদের ২৪ সপ্তাহের গর্ভপাতের বিষয়টি যুক্ত করা হবে না, যদি ডাক্তার অনুমতি দেন। সংসদের অভিপ্রায়ও একই বলে মনে হচ্ছে, কেননা MTP আইনে 'স্বামী (Husband)'-র পরিবর্তে 'সঙ্গী (Partner)' শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। এতে মনে হচ্ছে, তারাও অবিবাহিত মহিলাদের ২৪ সপ্তাহের গর্ভপাতের অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনার মধ্যে রেখেছেন।'
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ৩ ধারার সংশোধনী অনুযায়ী মেডিকেল টার্মিনেশন অফ প্রেগন্যান্সি অ্যাক্ট (Medical Termination of Pregnancy Act)-এ স্বামীর পরিবর্তে সঙ্গী শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। মূলত, অবিবাহিত মহিলাদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্যই এই আইন সংশোধন করা হয়েছিল।
এদিন আদালতে বিচারপতিদের বেঞ্চ জানিয়েছে - 'রায় এমনভাবে করতে হবে, যাতে তালাকপ্রাপ্ত, বিধবাদের মতো অবিবাহিত মহিলাদেরও ২৪ সপ্তাহের গর্ভপাতের অনুমতি দেওয়া যায়।'
এর আগে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ঐশ্বর্য্য ভাটি বলেন, '২৪ সপ্তাহের গর্ভপাতের অনুমতি দিলে, তা অবিবাহিত মহিলাদের স্বাস্থ্যের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। তাই অনুমতি দেওয়া ঠিক নয়।'
তিনি বলেন, 'এ নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত আছে। আমাদের সেই মতামতগুলি আদালতের সামনে উপস্থাপন করতে হবে। ২৪ সপ্তাহে গর্ভপাত অনেক ঝুঁকিপূর্ণ এবং এর ফলে মহিলাদের প্রাণহানীও হতে পারে।'
ইতিমধ্যেই, আবেদনের ভিত্তিতে গত ২১ জুলাই, এক মহিলাকে ২৪ সপ্তাহের গর্ভপাতের অনুমতি দিয়েছে বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি সূর্য কান্তের বেঞ্চ। কোনও বিপত্তি ছাড়াই সফল হয়েছে তাঁর গর্ভপাত।
বর্তমান সময়ে প্রগতিশীল চিন্তাধারা থেকে অনেকে লিভ-ইন সম্পর্কে থাকার সিদ্ধান্ত নেন। পরবর্তীকালে সম্পর্কে কোনও সমস্যা হলে বেরিয়ে আসেন। সেক্ষেত্রে সম্পর্কে থাকা মহিলাদের অনেক ক্ষেত্রেই গর্ভবতী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাঁদের জন্য শীর্ষ আদালতের এই পদক্ষেপ দৃষ্টান্তমূলক বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন