একনাথ সিন্ধের কাছে ক্ষমতা বদলের পর, প্রথম জন-সমাবেশে মহারাষ্ট্রে মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবি করেছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। একইসঙ্গে শুক্রবার, ঠাকরে জানান, তিনি কোনও অবস্থাতেই বিরোধীদের শিবসেনার নির্বাচনী প্রতীক ব্যবহার করতে দেবেন না।
উদ্ধব ঠাকরে বলেন, 'আজ আমি তাঁদের (পড়ুন-বিদ্রোহী সেনা বিধায়কদের ) বিধানসভা নির্বাচন করার জন্য চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি। যদি আমরা ভুল করে থাকি, তাহলে জনগণ আমাদের প্রত্যাখ্যান করবে।' তিনি বলেন,'আপনারা যখন এটি (বিদ্রোহ করে ক্ষমতা দখল) করলেন, আড়াই বছর আগেই করতে পারতেন। সম্মানের সঙ্গে এটা হয়ে যেত। এত সমস্যা হত না।'
হুংকারের সুরে এদিন শিবসেনা প্রধান জানান, 'শিবসেনার কাছে থেকে কেউ তীর-ধনুক প্রতীক নিতে পারবে না। মানুষ শুধু প্রতীক দেখে না। কার হাতে প্রতীক আছে, মানুষ সেটাও দেখে।'
গত আড়াই বছর ধরে বিজেপি বারংবার ঠাকরে এবং তাঁর পরিবারকে নিশানা করেছে। 'অপমান' করেছে। কিন্তু, এ নিয়ে বিদ্রোহী শিবসেনা গোষ্ঠী নীরব থেকেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ঠাকরে। সরাসরি সিন্ধেকে লক্ষ্য করে ঠাকরে বলেন, 'আপনি তাঁদের (বিজেপি) সাথে যোগাযোগ রেখেছেন এবং নিজের দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন।'
বিদ্রোহীদের খোঁচা দিয়ে ঠাকরে বলেন, 'অনেকেই বলছে, তাঁরা মাতোশ্রীতে (ঠাকরের বাড়ি) ডাকা হলে আসবে। তারা বলে, আমার প্রতি তাদের শ্রদ্ধা আছে। আমি কৃতজ্ঞ। কিন্তু, আপনারা যদি আগে এসে আমার সাথে কথা বলতেন, তাহলে এই যাত্রার দরকার হতো না। আপনি এখন সেই মানুষের সঙ্গে রয়েছেন, যারা আমার পরিবারের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছে। আমাদের সুনামে আঘাত হেনেছে। এবার ভাবুন, আপনার ভালবাসা এবং সম্মান সত্য কিনা।'
সঙ্গে তিনি যোগ করেন, 'নানা হুমকির মুখে পড়েও যে ১৫-১৫ বিধায়ক আমার সঙ্গে আছেন, তাঁদের নিয়ে আমি গর্বিত। এই দেশ সত্যের জয়ে সমৃদ্ধ, অসত্যের জয়ে নয়।'
তিনি বলেন,'আগামী সোমবার শুধু শিবসেনার ভবিষ্যত নয়, ভারতের গণতন্ত্রের ভবিষ্যতও নির্ধারণ করবে সুপ্রিম কোর্ট।'
মহারাষ্ট্রের নয়া মুখ্যমন্ত্রী সিন্ধের নিয়োগ অসাংবিধানিক বলে দাবি করেছে ঠাকরে শিবির। এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলাও করেছেন ঠাকরে ঘনিষ্ঠ শিবসেনা নেতা সুভাষ দেশাই। সেই মামলার শুনানিতে রাজি হয়েছে শীর্ষ আদালত। আগামী ১১ জুলাই, বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি জে কে মাহেশ্বরীর অবকাশকালীন বেঞ্চে ওই মামলার শুনানি হবে শুনানি।
শুক্রবার, সুভাষ দেশাইয়ের আইনজীবী দেবদত্ত কামথ শীর্ষ আদালতে জানিয়েছেন যে, একনাথ সিন্ধে সহ তাঁর সহযোগী বিধায়কদের বিরুদ্ধে দলবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগ রয়েছে। তাঁদের বিধায়ক পদ খারিজের দাবি তুলেছে শিবসেনা। ইতিমধ্যেই সে সংক্রান্ত মামলা সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। তার মধ্যেই কীভাবে একনাথ সিন্ধেকে মুখ্যমন্ত্রিত্বের শপথবাক্য পাঠ করালেন রাজ্যপাল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে শিবসেনা। পুরো বিষয়টাই অসাংবিধানিক বলে দাবি করেছে ঠাকরে শিবির।
এদিন জনসভায় ঠাকরে বলেন, 'আমরা গণতন্ত্র ও সংবিধান নিয়ে উদ্বিগ্ন। বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থা আছে আমার। বিচার বিভাগ কিভাবে সিদ্ধান্ত নেয়, তা সবাই দেখছে। জনগণও দেখছে, আমাদের গণতন্ত্র কতটা শক্তিশালী। সিদ্ধান্ত নিয়ে আমি চিন্তিত নই। আইন তার পথে চলবে।'
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।