প্রকৃত ‘বিশ্বাসঘাতক’ তারাই - যারা ক্ষমতার অপব্যবহার করে দেশবাসীকে বিভক্ত করে: সোনিয়া গান্ধী

ডঃ বি আর আম্বেদকরের ১৩২ তম জন্মবার্ষিকীতে দেওয়া এক ভাষণে কেন্দ্রকে তীব্র নিশানা করেন সোনিয়া। তিনি বলেন, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে 'অপব্যবহার ও ধ্বংস' করছে ক্ষমতাসীন সরকার।
সোনিয়া গান্ধী
সোনিয়া গান্ধীফাইল চিত্র - সংগৃহীত

'সত্যিকারের ‘বিশ্বাসঘাতক’ তারাই, যারা ভারতীয়দের ভাষা, বর্ণ, লিঙ্গ এবং ধর্মের ভিত্তিতে বিভক্ত করার জন্য তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করছে।’  শুক্রবার, এই ভাষাতেই কেন্দ্রের মোদী সরকারকে বিঁধেছেন প্রাক্তন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী।

ডঃ বি আর আম্বেদকরের ১৩২ তম জন্মবার্ষিকীতে দেওয়া এক ভাষণে কেন্দ্রকে তীব্র নিশানা করেন সোনিয়া। তিনি বলেন, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে 'অপব্যবহার ও ধ্বংস' করছে ক্ষমতাসীন সরকার। এই 'পরিকল্পিত আক্রমণ' থেকে সংবিধান রক্ষার জন্য জনগণকে অবশ্যই এগিয়ে আসতে হবে।

সোনিয়া গান্ধী বলেন, 'জাতিভেদ প্রথা কীভাবে ভ্রাতৃত্বের মূলে আঘাত করে, সেকথা বাবাসাহেব আম্বেদকর তাঁর শেষ ভাষণে বলেছিলেন। তিনি এটিকে ‘দেশবিরোধী’ বলে অভিহিত করেছেন, কারণ এটি বিচ্ছিন্নতা, হিংসা, বিদ্বেষ তৈরি করে এবং ভারতীয়দের একে অপরের বিরুদ্ধে বিভক্ত করে।'

কংগ্রেস সংসদীয় দলের সভাপতি বলেন, 'আম্বেদকর বিশ্বাস করতেন সংবিধানের সাফল্য নির্ভর করে শাসনকর্তার আচরণের উপর। আজ, যারা ক্ষমতায় রয়েছে তারা সংবিধানে বর্ণিত ক্ষমতার অপব্যবহার করছে। মানুষের স্বাধীনতা খর্ব করা হচ্ছে। সমতার দৃষ্টি, ন্যায়বিচার সবই লঙ্ঘিত হচ্ছে। আইন প্রয়োগ করে জনসাধারণকে রক্ষা করার বদলে তাদের হেনস্তা করা হচ্ছে। সদ্ভাব নষ্ট করা হচ্ছে। ইচ্ছাকৃতভাবে এমন একটা বাতাবরণ তৈরি করা হয়েছে যাতে একের বিরুদ্ধে ঘৃণার সৃষ্টি করে।' 

'পরিকল্পিত এই নিধনের হাত থেকে দেশ ও সংবিধানকে বাঁচাতে আমাদের এই মুহূর্তে ঐক্যবদ্ধ হওয়া জরুরি। প্রতিটি ভারতীয় তা সে যে মতাদর্শের হোক না কেন, এই অবস্থায় এক হতে হবে।' - সেই বার্তাও তুলে ধরেছেন প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি। 

স্পষ্ট ভাষায় সোনিয়া লিখেছেন, 'সকল ভারতীয়রা- রাজনৈতিক দল, ইউনিয়ন এবং সমিতি, গোষ্ঠীতে এবং ব্যক্তি হিসাবে যেখানেই দাঁড়িয়ে থাকুন না কেন, এই সংকটময় পরিস্থতিতে প্রত্যেককে নিজেদের ভূমিকা পালন করতে হবে। এ কাজে গাইড হিসাবে কাজ করতে পারে ডঃ আম্বেদকরের জীবন এবং সংগ্রাম।'

'প্রথমত, আম্বেদকরের জীবনের শিক্ষা হল, জোরালোভাবে বিতর্ক এবং দ্বিমত পোষণ করা, কিন্তু শেষ পর্যন্ত জাতির স্বার্থে একসঙ্গে কাজ করা।' এপ্রসঙ্গে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে মহাত্মা গান্ধী, জওহরলাল নেহেরু, আম্বেদকর, সর্দার প্যাটেল এবং আরও অনেকের মধ্যে তীব্র মতবিরোধের কথা তুলে ধরেন।

সোনিয়া বলেন, 'এই বিতর্কগুলি স্বাভাবিকভাবেই অনেকের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। কারণ, তারা আমাদের ভবিষ্যত সম্পর্কে গুরুতর প্রশ্নগুলিতে অনেক দৃষ্টিকোণ সরবরাহ করেছেন। কিন্তু আমাদের ভুলে যাওয়া উচিত হবে না যে, আমাদের স্বাধীনতার জন্য বিশিষ্ট পুরুষ এবং মহিলা শেষ পর্যন্ত লড়াই করেছেন এবং দেশ গঠনের জন্য একসাথে কাজ করেছিলেন।'

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in