
মামলার নিষ্পত্তির জন্য ৫ লক্ষ টাকার দাবি করেছিলেন খোদ বিচারপতি! এমনই বিস্ফোরক দাবি করলেন নিহত ইঞ্জিনিয়র অতুল সুভাষের বাবা। অতুলের বাবা জানিয়েছেন, তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা ছিল। ছেলে মন থেকে ভেঙে পড়েছিলেন। উল্লেখ্য, গত ৯ ডিসেম্বর ২৪ পাতার সুইসাইড নোট লিখে স্ত্রী এবং স্ত্রীর পরিবারের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ তুলে আত্মঘাতী হন অতুল।
কর্মসূত্রে বেঙ্গালুরুতে থাকতেন অতুল। সেখানে এক তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় তিনি জেনারেল ম্যানেজার পদে ছিলেন। তাঁর বাবা-মা থাকেন বিহারে। সেখানেই এক সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থাকে তাঁর বাবা বলেন, আমাদের পরিবারের বিরুদ্ধে একাধিক মিথ্যে করেছিলেন অতুলের স্ত্রী নিকিতা সিঙ্ঘানিয়া। সেই মামলাগুলো আদালতে বিচারাধীন ছিল।
অতুলের বাবা পবন কুমারের অভিযোগ, ২০২১ সালের জানুয়ারি মাস থেকে মামলা শুরু করেছিলেন নিকিতা। আমার ছেলের মন ভেঙে গিয়েছিল। ওঁ আমাদের কিছু বলত না। শুধু বলত, চারদিকে দুর্নীতি চলছে। কিন্তু ওঁ হাল ছাড়বে না। কারণ, ওঁ সত্যের পথে রয়েছে’।
এরপরেই তিনি বিচারকের টাকা তোলার প্রসঙ্গ তোলেন। পবন কুমার বলেন, ‘আদালতে মধ্যস্থতার কথা উঠলে প্রথমে তা ২০ হাজার টাকা দিয়ে শুরু হয়। ক্রমে তা ৪০ হাজারে যায়। এরপর বিচারক আমাদের জানান, ঝামেলা মেটাতে হলে অন্তত পাঁচ লক্ষ টাকা দিতে হবে আমাদের।'
নিকিতা এবং তাঁর পরিবার থাকে উত্তরপ্রদেশের জৌনপুরে। অতুলের আত্মঘাতী মামলার তদন্তের জন্য ইতিমধ্যেই বেঙ্গালুরু পুলিশের চার সদস্যের একটি দল পৌঁছেছে জৌনপুরে নিকিতার বাড়িতে। নিকিতা এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
গত ৯ ডিসেম্বর ভোরে নিজের বাড়িতেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্ম*হত্যা করেন ৩৪ বছর বয়সী অতুল। আত্ম*হত্যার আগে ৯০ মিনিটের একটি ভিডিও করেন তিনি। ২৪ পাতার একটি সুইসাইড নোটও লেখেন তিনি। ভিডিও এবং সুইসাইড নোটের তথ্য অনুযায়ী, আদালতে ডিভোর্সের মামলা চলাকালীন স্ত্রী নিকিতা সিঙ্ঘানিয়া তাঁকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিয়েছিলেন।
মৃতের ভাই বিকাশ কুমার জানান, ৮ মাস আগে অতুল ও তাঁর স্ত্রী আলাদা থাকতে শুরু করেন ৷ অতুলের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা, টাকা পয়সার জন্য হেনস্থা, গার্হস্থ্য হিংসা, পণ চাওয়ার মতো মোট ৯টি মিথ্যা মামলা করা হয়। এমনকি অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য ৩ কোটি টাকা দাবি করেন তাঁর স্ত্রী৷ বিকাশের অভিযোগ, সেই ঘটনার পর মানসিক ও শারীরিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েন তাঁর দাদা। জানা যাচ্ছে ইতিমধ্যে অতুলের স্ত্রীকে আটক করেছে পুলিশ।
জানা যাচ্ছে, ২০১৯ সালে অতুল এবং নিকিতা বিয়ে করেন। বিবাহের এক বছরের মাথায় তাঁদের একটি পুত্র সন্তান হয়। তবে ২০২১ সাল থেকে ছেলে নিয়ে অতুলের থেকে আলাদা থাকতে শুরু করেন নিকিতা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন