

মণিপুরে শান্তি ফেরানোর দাবিতে এবার গর্জে উঠল দেশের কৃষক ও শিক্ষকরা। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে এবার মুখ্যমন্ত্রী এন. বীরেন সিংয়ের পদত্যাগের দাবি জানাল তারা।
পাশাপাশি, আগামী ২৫ জুলাই গোটা দেশ জুড়ে কৃষক আন্দোলনের ডাক দিল অল ইন্ডিয়া কিষান সভা (এআইকেএস)। সংগঠনের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বিরজু কৃষ্ণান জানিয়েছেন, “রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে এবং চারিদিকে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে।”
বুধবার রাতে মণিপুরের দুই কুকি সম্প্রদায়ের মহিলাকে নগ্ন করে রাস্তায় ঘোরানোর একটি ভিডিও সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার নৃশংসতা দেখে শিউরে ওঠে গোটা দেশ। ঘটনার তীব্র নিন্দায় গর্জে উঠেছে গোটা দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্টরা। দেশের অন্যতম বৃহৎ কৃষক সংগঠন এআইকেএস-এর সাধারণ সম্পাদক বিরজু কৃষ্ণান জানিয়েছেন, “রাজ্যের এই পরিস্থিতিতে বীরেন সিংয়ের প্রশাসন ও মণিপুর পুলিশের বিরুদ্ধে অকর্মণ্যতা ও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠেছে। মণিপুরে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা অবিলম্বে মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের পদত্যাগ দাবি করছি।”
পাশাপাশি, ৪ মে মণিপুরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব শুরু হওয়ার পর থেকেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নীরবতাকে ‘অপরাধমূলক নীরবতা’ বলে উল্লেখ করে কৃষ্ণান জানিয়েছেন, “মণিপুরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী-সহ ১০টি বিরোধী দলের একাধিক নেতা দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি দেখাই করেননি। প্রায় ১৫ দিন দিল্লিতে বসে অপেক্ষা করার পর রাজ্যে ফিরে আসতে বাধ্য হন তাঁরা। মণিপুরের এই ঝামেলায় কেন্দ্রের দেরিতে হস্তক্ষেপ ও হিংসা ছড়িয়ে পড়া আটকানোয় ব্যর্থতার দায় প্রধানমন্ত্রীকেও নিতে হবে।”
অন্যদিকে, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে শিক্ষক সংগঠন দ্য ফেডারেশন অফ সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটিজ টিচারস অ্যাসোসিয়েশন বা এফইডিইউটিএ। সংগঠনের পক্ষ থেকে রাজ্যের স্তব্ধ ইন্টারনেট পরিষেবা ও সুরক্ষিত পরিবহণ ব্যবস্থার অভাব ছাত্রদের পড়াশোনার ব্যাপক ক্ষতি করছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।
এফইডিইউটিএ-এর সভাপতি ডি.কে লোবিয়াল জানিয়েছেন, “মণিপুরে গত দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে মানুষের জীবন ও জীবিকা যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাতেই রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের নিষ্ক্রিয়তা স্পষ্ট বোঝা যায়। তবে মণিপুরের মতো সীমান্তবর্তী রাজ্যে এইভাবে মাত্র কয়েকসপ্তাহের আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়ে এমন পরিস্থিতি নিশ্চয়ই কেন্দ্র বা রাজ্য সরকারের অজান্তে হয়নি। এখানে রাজ্যে দ্রুত শান্তি ফেরানোর জন্য সরকারের উচিত ছিল বলিষ্ঠ পদক্ষেপ নেওয়া। কিন্তু তাঁদের নিষ্ক্রিয়তা দেশের সুপ্রিম কোর্টকে এর মধ্যে হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য করেছে।”
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন