২০০২ সালের গুজরাট হিংসা নিয়ে তৈরি বিবিসি (BBC)-র তথ্যচিত্র 'ইন্ডিয়া: দ্যা মোদী কোয়েশ্চেন' আগেই নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে কেন্দ্রের মোদী সরকার। এবার, দিল্লি ও মুম্বাইয়ে বিবিসি (BBC)-র অফিসে হানা দিয়েছে আয়কর দফতর (Income Tax)। একযোগে দুই অফিসে হানা দিয়েছেন অফিসারেরা। যা নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। কেন্দ্রীয় সংস্থার এই পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেছে কংগ্রেস।
সূত্রের খবর, আন্তর্জাতিক কর ও বিনিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে বিবিসি (BBC)-র অফিসে হানা দিয়েছে আয়কর দফতর।
এই অভিযানে BBC-র কয়েকজন সাংবাদিকের নথি ও ফোন কেড়ে নেওয়া হয়েছে। অফিসে থাকা সকলকে একটি ঘরে আটকে রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে, আয়কর দফতরের অফিসারেরা জানিয়েছেন - 'এটি কোনও অভিযান নয়, এটি একটি 'সমীক্ষা' (survey)। এবং ফোনগুলিও ফেরত দেওয়া হবে।'
আয়কর সূত্র জানিয়েছে, 'কিছু বিষয়ে আমাদের স্পষ্টীকরণের প্রয়োজন ছিল। এ জন্য আমাদের টিম বিবিসি অফিসে যাচ্ছে এবং আমরা সমীক্ষা চালাচ্ছি। আমাদের অফিসাররা অ্যাকাউন্ট নথি পরীক্ষা করতে গিয়েছেন, এটা হানা নয়।'
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে তথ্যচিত্র নির্মাণ করার জন্য BBC-কে টার্গেট করা হয়েছে। এমনটাই অভিযোগ করেছে কংগ্রেস। দলের প্রবীণ নেতা জয়রাম রমেশ বলেন, 'আমরা এখানে (সংসদে) আদানি-হিন্ডেনবার্গ কাণ্ডের জন্য একটি যৌথ সংসদীয় কমিটি (JPC) তদন্তের কথা বলছি। আর, সেখানে (দিল্লি ও মুম্বাইয়ে) বিবিসিকে নিশানা করছে সরকার। আসলে এটি বিনাশ কালে বিপরীত বুদ্ধি (যখন একজনের ধ্বংস হওয়ার সময় আসে, তখন সে ভুল সিদ্ধান্ত নেয়)।'
উল্লেখ্য, গত ২১ জানুয়ারি, বিবিসি (BBC)-র তথ্যচিত্র 'ইন্ডিয়া: দ্যা মোদী কোয়েশ্চেন'-কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে মোদী সরকার। তথ্য প্রযুক্তি বিধি, ২০২১-এর অধীনে জরুরি ক্ষমতা ব্যবহার করে, তথ্যচিত্রের লিঙ্ক শেয়ার করা ইউটিউব ভিডিও এবং টুইটার পোস্ট ব্লক করার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র।
মোদীকে নিয়ে তথ্যচিত্র প্রকাশের দায়ে ভারতে BBC-কে নিষিদ্ধ ঘোষণার জন্য সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিলেন হিন্দু সেনা প্রধান বিষ্ণু গুপ্ত (Hindu Sena chief Vishnu Gupta)। যদিও গত শুক্রবার, সেই মামলা খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
রিট পিটিশনে হিন্দু সেনার আইনজীবী পিঙ্কি আনন্দ লিখেছিলেন, 'ইচ্ছাকৃতভাবে ভারতের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে বিবিসি (BBC)।' তথ্যচিত্রটি 'ভারত এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বৈশ্বিক উত্থানের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রের ফল।'
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন