
দেশজুড়ে ভোট চুরি করার জন্য নির্বাচন কমিশন বিজেপির সঙ্গে ‘গোপন আঁতাত’ করেছে বলে অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে কংগ্রেস। এমনকি সাংবাদিক বৈঠক করে পরিসংখ্যান দেখিয়ে একাধিকবার অভিযোগ করেছেন বিরোধী দল নেতা রাহুল গান্ধী। সেই আবহেই এবার পাল্টা অভিযোগ আনল বিজেপি। বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য অভিযোগ করেছেন, ভারতের নাগরিক হওয়ার আগেই ভোটার তালিকায় নাম ছিল কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধীর।
বুধবার দুপুরে নিজের এক্স হ্যান্ডলে অমিত মালব্য দাবি করেন, ৪৫ বছর আগে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে 'আঁতাত' করে ভোটার জালিয়াতি করেছেন সোনিয়া গান্ধী। তাঁর অভিযোগ, ১৯৮০ সালে লোকসভা ভোটের আগে প্রথম বার নয়াদিল্লি কেন্দ্রের ভোটার তালিকায় নাম ওঠে সোনিয়ার। অথচ তিনি ভারতীয় নাগরিকত্ব পান ১৯৮৩ সালে। নিজের দাবির সপক্ষে প্রামাণ্য নথি হিসেবে ১৯৮০ সালের ভোটার তালিকার একটি ছবি পোস্ট করেছেন তিনি (তার সত্যতা যাচাই করেনি পিপলস রিপোর্টার)। এর পরেই অমিত লেখেন, ‘‘এটি যদি নির্বাচনী বিধিলঙ্ঘন না হয়, তা হলে কী?’’
১৯৪৬ সালে ইতালিতে জন্ম সোনিয়ার। পিতৃদত্ত নাম ছিল সোনিয়া মাইনো। ১৯৬৮ সালে রাজীব গান্ধীর সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। এরপরেই গান্ধী পরিবারের অংশ হয়ে ওঠেন তিনি। বিজেপির দাবি, ১৯৮০ সালে লোকসভা ভোটের আগে প্রথম বার নয়াদিল্লি কেন্দ্রের ভোটার তালিকায় নাম ওঠে সনিয়ার। সে সময় নিজের সরকারি বাসভবনেই থাকতেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। বিজেপির আরও দাবি, ১৯৮২ সাল পর্যন্ত সনিয়ার নাম ভোটার তালিকাভুক্ত ছিল। অথচ তিনি ভারতীয় নাগরিকত্ব পান ১৯৮৩ সালে।
এদিন এক্সে অমিত লেখেন, "এটি স্পষ্টত আইনের লঙ্ঘন। ভোটার হিসাবে নিবন্ধিত হতে গেলে একজন ব্যক্তিকে অবশ্যই ভারতীয় নাগরিক হতে হয়। ১৯৮২ সালে বিতর্ক ও সমালোচনার জেরে সনিয়ার নাম তালিকা থেকে মুছে ফেলা হয়েছিল। ১৯৮৩ সালে ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ার পর তাঁর নাম ফের তালিকাভুক্ত হয়"।
এমনকি দ্বিতীয়বার সোনিয়ার ভোটার তালিকায় নাম তোলার সময়েও অসঙ্গতি দেখা গিয়েছে। ১৯৮৩ সালের ১ জানুয়ারির আগে নাগরিকত্ব পেলে তবেই সে বছর নাম ওঠার কথা। অথচ তিনি নাগরিক হয়েছে ১৯৮৩ সালের এপ্রিল মাসে।
আর এক বিজেপি নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর দাবি করেছেন, মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটক নির্বাচনে যে কারচুপির অভিযোগ এনেছেন রাহুল, তা সম্পূর্ণ অসত্য ও ভুল পরিসংখ্যান।
যদিও বিজেপিকে পাল্টা আক্রমণ শানিয়েছে কংগ্রেস। বিহারের কংগ্রেস সাংসদ তারিক আনোয়ার বলেন, ‘‘এর জন্য নির্বাচন কমিশনই দায়ী। সনিয়া গান্ধী ভোটার তালিকায় নিজের নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য অনুরোধ করেননি। নির্বাচন কমিশনের তৎকালীন কর্তারা নিজেরাই তা করেছিলেন"।
তারিকের দাবি, নির্বাচন কমিশন স্বাধীন এবং সাংবিধানিক সংস্থা। সেই সময় সেই ভাবেই কাজ করত। কংগ্রেস নেতা বলেন, ‘‘আমরা দেখছি যে আজ নির্বাচন কমিশন বিজেপিরই একটি অংশ হয়ে উঠেছে! এই দুরবস্থা থেকে তাদের দ্রুত বেরিয়ে আসা উচিত।’’
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন