
কয়েকবছর আগের নোটবন্দির জেরে রাতারাতি সমস্যায় পড়ে গিয়েছিলেন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে ক্ষুদ্র ও ছোট মাঝারি শিল্পের ব্যবসায়ীরা। এই বিষয়টি নিয়ে এতদিন বিরোধী এবং যারা ভুক্তভোগী, তাঁরা সোচ্চার হয়েছিলেন। এবার খোদ সংসদেই মোদি সরকার কার্যত বিষয়টি স্বীকার করে নিল।
ছোট-মাঝারি শিল্প মন্ত্রকের কাছে কেরলের কংগ্রেস সাংসদ টিএন প্রতাপন প্রশ্ন করেছিলেন, নোটবন্দির জেরে যে এরকম বহু সংস্থা ভেঙে পড়েছে, তা কি সরকার জানে? লিখিত উত্তরে এই শিল্পের নতুন মন্ত্রী নারায়ণ রাণে জানান, ‘হ্যাঁ, শিল্প এবং ব্যবসায়ী সংগঠনের তরফে যে প্রতিক্রিয়া মিলেছে, তা থেকে ছোট-মাঝারি শিল্পকে যে অসুবিধার মুখে পড়তে হয়েছে, সে সম্পর্কে সরকার অবহিত।’ তার পরে স্বাভাবিক ভাবেই উঠেছে প্রশ্ন। মোদি সরকার কি ভুল করে এ-কথা স্বীকার করল?
কংগ্রেস সাংসদের প্রশ্ন ছিল, এরকম ছোট-মাঝারি ক'টা শিল্প বন্ধ হয়েছে? যদিও কেন্দ্র সেই পরিসংখ্যান দেয়নি। সরকারি ভাবে স্বীকার করা না-হলেও, নোটবন্দিতে যে এই শিল্প মার খেয়েছে তা ২০১৮ সালে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের রিপোর্টে বলা হয়েছে।
প্রথমে কেন্দ্রের নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত, আর তার জেরে তাদের ঋণ নেওয়ার পরিমাণ কমে যাওয়া, তার পরে জিএসটি ছোট-মাঝারি সংস্থাগুলিকে জোর ধাক্কা দেয়। এই শিল্প যেহেতু অসংগঠিত ক্ষেত্র এবং এখানে কাজ করেন বহু ক্ষুদ্র সংস্থা, দিনমজুর। তাই নগদের লেনদেন বেশি। ফলে ধাক্কা বেশি লেগেছিল। অথচ দেশীয় অর্থনীতি কিন্তু অনেকটা এই ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্পের উপরেই নির্ভরশীল। জিডিপি-তে ছোট-মাঝারি শিল্পের অংশ প্রায় ৩০শতাংশ। কারখানার উৎপাদনের ৪৫ শতাংশ আসে এই শিল্প থেকে। রফতানির ক্ষেত্রেও এই শিল্পের অবদান ৪০ শতাংশ।
এতদিন কালো টাকা, জাল নোট, সন্ত্রাসে আর্থিক মদত শেষ করতে নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এমনটাই বলতেন প্রধানমন্ত্রী। যদিও এর কোনওটাই হয়নি বলে অভিযোগ বিরোধীদের। কংগ্রেসের বক্তব্য, সরকার এ বার নোট বাতিলের খারাপ দিকটাও একপ্রকার মেনেই নিল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন