ইডির ডিরেক্টর পদে পরপর তিনবার সঞ্জয়, কেন্দ্রের সিদ্ধান্তকে ‘বেআইনি’ বলে ঘোষণা সুপ্রিম কোর্টের

বে চলতি মাসের ৩১ জুলাই পর্যন্ত সঞ্জয় মিশ্র ইডির প্রধান হিসেবে থাকতে পারবেন বলে জানিয়েছে শীর্ষ আদালত।
সুপ্রিম কোর্ট এবং সঞ্জয় কুমার মিশ্র
সুপ্রিম কোর্ট এবং সঞ্জয় কুমার মিশ্রছবি সংগৃহীত

এবার সুপ্রিম কোর্টে ঘোর বিপাকে মোদী সরকার। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট-এর ডিরেক্টর পদে আইআরএস অফিসার সঞ্জয়কুমার মিশ্রর তৃতীয়বার মেয়াদ বৃদ্ধি নিয়ে মোদী সরকারের নির্দেশকে ‘বেআইনি’ বলে ঘোষণা করল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। তবে চলতি মাসের ৩১ জুলাই পর্যন্ত সঞ্জয় মিশ্র ইডির প্রধান হিসেবে থাকতে পারবেন বলে জানিয়েছে শীর্ষ আদালত।

কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডির ডিরেক্টর পদে ১৯৮৫-ব্যাচের আইআরএস অফিসার সঞ্জয়কুমার মিশ্রকে প্রথমবার নিয়োগ করা হয়েছিল ২০১৮ সালের ১৯ নভেম্বর। প্রথমবার ওই পদে তাঁর কার্যকাল ছিল ২ বছর। ২০২০ সালে সঞ্জয়ের পুরনো নিয়োগপত্রে কিছু সংশোধন করে কেন্দ্রের তরফে তাঁর কার্যকালের মেয়াদ আরও একবছর বাড়িয়ে দেওয়া হয়। ২০২১ সালে ফের তাঁর মেয়াদকাল বাড়ানোর নির্দেশ জারি করে মোদী সরকার। এর জন্য ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে সেন্ট্রাল ভিজিল্যান্স কমিশন আইন এবং দিল্লি স্পেশ্যাল পুলিশ এস্টাবলিশমেন্ট আইনে কিছু সংশোধনও করা হয়। যেখানে বলা হয়, কেন্দ্রীয় সরকার চাইলে সিবিআই ও ইডি প্রধানদের কাজের মেয়াদকাল তিন বছরের জন্য বাড়াতে পারে। সেই সময় কেন্দ্রের এই সংশোধনী বিলের বিরোধীতা করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানান জয়া ঠাকুর, কংগ্রেস নেতা রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা এবং তৃণমূলের মহুয়া মৈত্র ও সাকেত গোখলে।

প্রসঙ্গত, সঞ্জয় মিশ্র ইডির ডিরেক্টর পদের দায়িত্বে আসার পরেই বিরোধীদের পক্ষ থেকে বারবার অভিযোগ ওঠে, কেন্দ্রীয় সরকারের হয়ে ওই তদন্তকারী সংস্থা বেছে বেছে শুধুমাত্র বিরোধীদেরই ‘টার্গেট’ করছে। এদিকে, সঞ্জয় মিশ্রর পরপর তিনবার মেয়াদ বৃদ্ধি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে প্রচুর আবেদন জমা পড়ে। ২০২১ সালে সেই মামলাগুলির শুনানির সময় কেন্দ্রের হয়ে আদালতে সওয়াল করেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। তিনি সেই সময় যুক্তি দিয়েছিলেন, বেশ কয়েকটি আর্থিক দুর্নীতি মামলার তদন্তের দায়িত্ব রয়েছে ইডির কাঁধে। তাই তদন্তের স্বার্থেই ইডি প্রধানের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।

তবে এই যুক্তি বিশেষ একটা ধোপে টেকেনি। সেই সময় শীর্ষ আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিল, তদন্তের স্বার্থে সঞ্জয়ের মেয়াদ কিছু সময়ের জন্য বাড়ানো যেতে পারে। কিন্তু বারবার আর মেয়াদ বৃদ্ধি করা যাবে না। চলতি বছরের মে মাসে এই মামলার শুনানিতে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা শীর্ষ আদালতকে জানিয়েছিলেন, “ইনি কোনও রাজ্যের ডিজিপি নন। ইনি এমন একজন আধিকারিক যিনি রাষ্ট্রপুঞ্জের মতো একটি সংস্থার প্রধান। এর মধ্যে আদালতের হস্তক্ষেপ করা উচিত হবে না।” তাঁর আরও দাবি ছিল, “এই মুহূর্তে বেশ কয়েকটি আর্থিক কেলেঙ্কারি মামলার তদন্ত করছে ইডি। এবং তার জন্যই ইডি প্রধান হিসেবে সঞ্জয় মিশ্রকে প্রয়োজন। তবে ২০২৩ সালের নভেম্বরেই তাঁর মেয়াদ ফুরিয়ে যাবে। তারপর তিনি আর এই পদে থাকবেন না।”

কিন্তু ২০২১ সালে সঞ্জয়ের মেয়াদ বাড়ানো নিয়ে শীর্ষ আদালতের দেওয়া নির্দেশ মানা হয়নি বলে মঙ্গলবার জানিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। বিচারপতি বি.আর গভাই, বিক্রম নাথ এবং সঞ্জয় কারোল-এর ডিভিশন বেঞ্চ এদিন সঞ্জয়কুমার মিশ্রর বারবার মেয়াদ বৃদ্ধি ‘বেআইনি’ বলে জানিয়েছে। এর ফলে ইডি ডিরেক্টরের পদে সঞ্জয়ের মেয়াদ বৃদ্ধির রাস্তা কেন্দ্রীয় সরকারের জন্য পাকাপাকিভাবে বন্ধ হয়ে গেল।

সুপ্রিম কোর্ট এবং সঞ্জয় কুমার মিশ্র
দেশের রাজনীতি আইপিএলের মতো, কে কোন দলে বোঝা দায়: উদ্ধব ঠাকরে

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in