শেয়ার বাজারের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে সতর্ক করলেন বাজার বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে বেশ কিছু কারণে এই মুহূর্তে শেয়ার বাজারের মূল্যায়নে ঊর্ধ্বগতি থাকলেও কোনও অজানা কারণে যে কোনও মুহূর্তে বাজারে সংশোধন হতে পারে এবং যার ফলে বাজার নিচে নামতে পারে।
জিওজিৎ ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের চিফ ইনভেস্টমেন্ট স্ট্র্যাটেজিস্ট ভি কে বিজয়কুমার জানিয়েছেন, বাজারের বর্তমান গতি বহু শেয়ারের মূল্যায়নকে অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। এই মুহূর্তে নিফটি ২০২৪ আর্থিক বছরের সম্ভাব্য স্তরের থেকে ২০ গুণ ওপরে আছে। যা বাজারের ঐতিহাসিক গড়ের থেকেও অনেকটা বেশি।
তিনি আরও বলেন, "বর্তমান গতি বাজারকে আরও উঁচুতে নিয়ে যেতে পারে; কিন্তু এই ধরণের উচ্চ মূল্যায়নে বাজারে ঝুঁকির পরিমাণও ক্রমশই বাড়ছে। বর্তমানে কিছু অজানা নেতিবাচক অগ্রগতি আচমকাই তীক্ষ্ণ সংশোধন নিয়ে আসতে পারে। তাই, বাজারে বিনিয়োগ করলেও, বিনিয়োগকারীদের সতর্ক থাকা উচিত।"
সোমবারই সেনসেক্স ৬৫ হাজারের গণ্ডী ছাড়িয়েছে। মূলত এইচডিএফসি এবং রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের নেতৃত্বে এদিন বিএসই সেনসেক্স ৬৫ হাজার ছাড়িয়েছে। গত সপ্তাহে কেনাবেচার শেষ দিনে সেনসেক্স বন্ধ হয়েছিল ৬৪,৭১৮.৫৬ পয়েন্টে। বিদেশী বিনিয়োগকারীদের বিশাল অঙ্কের বিনিয়োগের কারণে ভারতীয় বাজার নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। সোমবার এইচডিএফসি এবং রিলায়েন্স সেনসেক্সে ২ শতাংশের বেশি বেড়েছে।
বিজয়কুমার বলেন, বিশ্বব্যাপী শেয়ার বাজারের বর্তমান গতি প্রাথমিকভাবে মার্কিন অর্থনীতির আশ্চর্যজনক এবং অপ্রত্যাশিত শক্তি দ্বারা চালিত হয়েছে (২০২৩ আর্থিক বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে ২ শতাংশ জিডিপি বৃদ্ধি)। বিশ্ব বাজার, যা ২০২৩ সালের মাঝামাঝি মার্কিন মন্দার কবলে পড়েছিল তা ভুল প্রমাণিত হয়েছে এবং বাজারগুলি এখন ২০২২ সালে অত্যধিক হতাশাবাদী ডিসকাউন্টিংয়ের জন্য ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে।
তিনি আরও জানিয়েছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এবং ভারতের মধ্যে এক্ষেত্রে পার্থক্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল যে মার্কিন বৃদ্ধি প্রাথমিকভাবে ৮ টি প্রযুক্তিগত শেয়ার দ্বারা পরিচালিত হয়েছে। যখন ভারতীয় বাজার আরও বিস্তৃত। বড় অঙ্কের বিদেশী বিনিয়োগ (জুন মাসে ৪৭,১৪৮ কোটি টাকা) ভারতের বাজারের প্রধান চালক।
এফপিআই-এর সাম্প্রতিক 'চীনকে বেচুন, ভারতকে কিনুন' কৌশল দ্বারা এফপিআই প্রবাহের সাম্প্রতিক ঊর্ধ্বগতি শুরু হয়েছে, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং উন্নত বিশ্বে চীন-বিরোধী মনোভাব/নীতি দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হচ্ছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন